মঙ্গলবার, ১৮ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

ইয়াবার রুটে সোনার চালান

ট্রানজিট কক্সবাজার, বাংলাদেশ হয়ে যাচ্ছে ভারতে, নেপথ্যে শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ীরা

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

কক্সবাজারের ইয়াবা পাচারের রুট ব্যবহার করে দেশে আসছে অবৈধ সোনার চালান। ফলে ইয়াবার ট্রানজিট রুট পরিণত হয়েছে সোনা পাচারের ট্রানজিটে। নেপথ্যে রয়েছে মিয়ানমার ও বাংলাদেশভিত্তিক মাদক ব্যবসায়ীরা। সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, যারা ইয়াবা ও আইসের পাশাপাশি বর্তমানে সোনাও পাচার করছে। মিয়ানমার থেকে আসা এ চালান কক্সবাজার-চট্টগ্রাম হয়ে চলে যাচ্ছে পাশর্বর্তী দেশ ভারতে। দীর্ঘদিন ধরে সোনা চোরাচালান প্রতিরোধে কাজ করছেন বিজিবি-৮-এর অধিনায়ক কর্নেল সাহেদ মিনহাজ সিদ্দিকী। সোনা পাচারের রুট সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘পাচারকারীরা নিজেদের আড়াল করতে সব সময় অপরিচিত রুট ব্যবহার করে। এ কৌশলের অংশ হিসেবেই তারা সোনা পাচারের অপরিচিত রুট মিয়ানমারকে ব্যবহার করছে। এ ছাড়া মিয়ানমারের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতাও পাচারের নিরাপদ রুটে পরিণত হয়েছে।’

বিজিবি কক্সবাজারের রামু সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মেহেদী হোসাইন কবির বলেন, ‘গত এক বছরের কয়েকটি অভিযানে আমরা প্রায় ১০ কোটি টাকার অবৈধ সোনা জব্দ করেছি। প্রতিটি বারের ওপর মিয়ানমারের সিলমোহর ছিল। এ চালানগুলোর মিয়ানমার থেকে এসেছে তা নিশ্চিত হলেও গন্তব্য কোথায় ছিল তা জানতে পারিনি।’ অনুসন্ধানে জানা যায়, এক সময় দেশের সোনা পাচারের জন্য ব্যবহার করা হতো ঢাকা ও চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে। কিন্তু সম্প্রতি সময়ে এ দুই বিমানবন্দরে সোনা পাচার নিয়ে কঠোর নীতি গ্রহণ করার কারণে সোনা মাফিয়ার বিকল্প রুট ব্যবহার করছে। তারা মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আবর, কাতার, ওমানসহ অন্যান্য দেশ থেকে সোনার চালান সরাসরি বাংলাদেশ না এনে তৃতীয় দেশ ব্যবহার করছে। এক্ষেত্রে তারা মিয়ানমার, সিঙ্গাপুর এবং থাইল্যান্ড হয়ে বাংলাদেশ নিয়ে আসছে সোনার চালান। এক্ষেত্রে তারা সোনার চালান বাংলাদেশে প্রবেশের জন্য ব্যবহার করছে ইয়াবার রুট এবং ইয়াবা মাফিয়াদের। তারা সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ড থেকে মিয়ানমার হয়ে সোনার চালান নিয়ে আসে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। অতঃপর সুবিধা মতো সময়ে সোনার চালান পাঠিয়ে দেওয়া হয় চট্টগ্রামের রিয়াজ উদ্দিন বাজার কিংবা ঢাকায়। পরে সোনার চালান চলে যায় বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে।

সম্প্রতি কর্ণফুলী থানা এলাকা থেকে সাড়ে ৯ কেজি সোনার চালান জব্দ মামলাটি তদন্ত করছে সিএমপির ডিবি (বন্দর) জোন। এ মামলার তদন্ত নিয়ে উপকমিশনার আলী হোসেন বলেন, ‘মিয়ানমার থেকেই সোনার চালানটি এসেছে। এ চালানের পরবর্তী গন্তব্য ছিল চট্টগ্রামের রিয়াজ উদ্দিন বাজার। এ চালানের মূল হোতা কারা এবং শেষ গন্তব্য কোথায় ছিল তা জানার চেষ্টা চলছে।’ গত ১৬ জুন কক্সবাজার থেকে ৯ কেজি ৬২৩ গ্রাম সোনার বার ও পাত পাচারের সময় চার ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে সিএমপির কর্ণফুলী থানা পুলিশ। এ সময় গ্রেফতার করা হয় চার পাচারকারীকে। ২৫ মে কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভ সড়কে অভিযান চালিয়ে আড়াই কেজি সোনার বারসহ এক পাচারকারীকে গ্রেফতার করে বিজিবি। গ্রেফতার পরবর্তীতে বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়- মিয়ানমার থেকেই অবৈধভাবে সোনার চালানটি আসে। এ চালানের গন্তব্য ছিল চট্টগ্রাম। ১৭ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজারের পালংখালী সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে ১৯১ ভরি সোনাসহ এক পাচারকারীকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-১৫। গ্রেফতারের পর র‌্যাব জানায়, মিয়ানমার থেকেই সোনার চালানটি আসে। এ চালানের গন্তব্য ছিল রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প।

বিমানের সিটের নিচে সোনা মিলল ২৫ কেজি, যাত্রীর কাছে ৩ কেজি

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর