বুধবার, ১৯ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

ভাঙ্গায় নৌকার হাট

অজয় দাস, ভাঙ্গা

ভাঙ্গায় নৌকার হাট

কুমার নদে পানি বৃদ্ধি ও পাটের মৌসুম শুরু হওয়ায় ভাঙ্গায় নৌকার হাটে নৌকা বিক্রি শুরু হয়েছে। সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে ভাঙ্গা পৌরসভার কুমার নদের পাড়ে নৌকার হাটে গিয়ে দেখা যায়, শতাধিক নৌকা উঠেছে হাটে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বেশকিছু নৌকা বিক্রিও হয়েছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান। আষাঢ় মাস থেকে ভাদ্র মাস পর্যন্ত এ নৌকার হাট বসে।

হাটের নৌকা বিক্রেতা ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ব্রিটিশ আমল থেকে ভাঙ্গা ফরিদপুর জেলার মধ্যে অন্যতম একটি বাণিজ্য কেন্দ্র। অন্যান্য ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি এখানে নৌকার হাটেরও ঐতিহ্য রয়েছে। শতাধিক বছরের পুরনো এ নৌকার হাটে এক সময় হাজারের বেশি নৌকা উঠত। এর মধ্যে বড় নৌকা থেকে শুরু করে ছোট নৌকা, তাল গাছের ডোঙ্গা, বৈঠা বিক্রি হতো। বিভিন্ন জেলার মানুষ এ নৌকার হাটে ক্রেতা বিক্রেতা হিসেবে আসত। আষাঢ় মাস থেকে ভাদ্র মাস পর্যন্ত নৌকাহাট জমজমাট থাকত। কালের বিবর্তনে এ অঞ্চলে রাস্তা ঘাট বেড়েছে। অনেক খাল, বিল অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছে। বর্ষা ও বন্যা আগের মতো হয় না। তাই নৌকার কদর এ অঞ্চলে কমে গেলেও একেবারে শেষ হয়ে যায়নি। তাই এখনো বর্ষা মৌসুমে কুমার নদের পাড়ের নৌকার হাট জমজমাট হয়ে ওঠে। প্রতি সপ্তাহে শুক্রবার ও সোমবার ভাঙ্গা বাজারে হাট বসে। আর নৌকার হাটও এ দুদিন বসে।

ভাঙ্গার নৌকাহাটে ৩৫ বছর ধরে নৌকা বিক্রি করেন ভাঙ্গা উপজেলার চুমুরদী ইউনিয়নের বাবলাতলার বাসিন্দা মানিক ফকির (৭৩)। তিনি বলেন, ভাঙ্গায় আগের দিনের মতো জমজমাট নৌকার হাট এখন বসে না। তারপরও আমার ৩৫ বছরের পুরনো ব্যবসা ধরে রেখেছি। আজ হাটে আটটি নৌকা এনেছি। দুপুরের মধ্যে চারটি বিক্রি করেছি। এ হাটেই নৌকা বিক্রি করতে এসেছেন ভাঙ্গার চান্দ্রা ইউনিয়নের পুলিয়া গ্রামের কৃষ্ণ মন্ডল (৪৫)। তিনি নিজের তৈরি দুটি নৌকা বিক্রি করতে এসেছেন। তিনি বলেন, আমি এশটি নৌকা ৪ হাজার ৭০০ টাকা বিক্রি করেছি। আমরা রেইনট্রি ও চাম্বুল কাঠ দিয়ে নৌকা তৈরি করি। একটি নৌকা তৈরি করতে আমার দুই দিন লাগে। খরচ যাওয়ার পরে তেমন কোনো লাভ থাকে না।

 খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভাঙ্গার চান্দ্রা ইউনিয়নের পুলিয়া ও আজিমনগর ইউনিয়নের ব্রাহ্মণপাড়া গ্রামের কয়েকজন কাঠমিস্ত্রি বর্ষা মৌসুমে নৌকা তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর