শনিবার, ২২ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

পানি কমার সঙ্গে ভয়াবহ ভাঙন

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

পানি কমার সঙ্গে ভয়াবহ ভাঙন

তিস্তাপাড়ে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও ভয়াবহ ভাঙন সৃষ্টি হচ্ছে। গত কয়েকদিনেই নিম্নাঞ্চল থেকে পানি নেমে গেছে। গতকাল তিস্তার পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তার পানি কমা-বাড়ার কারণে বিভিন্ন পয়েন্টে দেখা দিয়েছে তীব্র নদীভাঙন। গত ১০ দিনে তিস্তার ভাঙনে অর্ধশতাধিক পরিবারের বাড়িঘর নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। বিশেষ করে সদর উপজেলার গোকুন্ডা ও আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা ইউনিয়নে ভাঙন বেড়েই চলছে। ফলে সেখানকার মানুষ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। তিস্তা ব্যারাজ নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সূত্র জানায়, শুক্রবার দুপুর ১২টায় তিস্তার পানি কমে বিপৎসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মূলত বর্ষার শুরু থেকেই ভয়াল রূপ ধারণ করেছে তিস্তা নদী। তিস্তার তীব্র ভাঙনে লালমনিরহাটের পাঁচটি উপজেলার শতাধিক চরের হাজারো পরিবার দিশাহারা হয়ে পড়েছে। চোখের সামনে বসতভিটা হারিয়ে কাঁদছেন তিস্তাপাড়ের মানুষ। তিস্তা আর ধরলা নদীবেষ্টিত লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলায় চলতি বছরের জুন মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে বন্যা শুরু হয়েছে। গত এক সপ্তাহ থেকে পানিবন্দি থেকে মুক্তি মিললেও নদীভাঙনের মুখে পড়েছে মানুষ। চোখের সামনে নদীর পেটে চলে যাচ্ছে বসতভিটা, ফসলি জমি ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। ভাঙনের কবলে পড়ে নিঃস্ব হচ্ছে নদীপাড়ের মানুষ। অনেকেই রাস্তার পাশে বা বাঁধের ধারে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর থেকে লালমনিরহাট সদরের চর গোকুন্ডা, আদিতমারী উপজেলার বাহাদুরপাড়া, চন্ডিমারী, কুটিরপাড়, কালীগঞ্জের আমিনগঞ্জ, চর বৈরাতী, হাতীবান্ধার সিংগীমারী, গড্ডিমারী, ডাউয়াবাড়ি, সিন্দুনা, পাটিকাপাড়া, ফকিরপাড়া, সানিয়াজানের বাঘের চর, নিজ শেখ সুন্দর ও পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রামে তিস্তা নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। ঝুঁকিতে রয়েছে সলেডি স্পার বাঁধসহ সব বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল রায় বলেন, পানি কমা ও বাড়ার কারণেই তিস্তার ১৭টি পয়েন্টে ভফুন দেখা দিয়েছে। আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা ইউনিয়নের দক্ষিণ বালাপাড়া গ্রামের সুলতান মিয়া বলেন, আমরা চরবাসী কিছুই চাই না। শুধু একটা মনের মতো বাঁধ চাই। যাতে আর ঘরবাড়ি ভাঙতে না হয়। লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্লাহ জানান, তিস্তার পানি কমা ও  বাড়ার কারণে বিভিন্ন পয়েন্টে দেখা দিয়েছে নদীভাঙন। ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ করছে।

সর্বশেষ খবর