বৃহস্পতিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

বিএনপিতে একক, দলের প্রার্থী চায় আওয়ামী লীগ

মনিরুল ইসলাম মনি, সাতক্ষীরা

বিএনপিতে একক, দলের প্রার্থী চায় আওয়ামী লীগ

তিনটি থানা ও দুটি উপজেলা নিয়ে গঠিত সাতক্ষীরা-১ (তালা ও কলারোয়া) আসন। জেলার চারটি আসনের মধ্যে এ আসনটিতেই আওয়ামী লীগের শক্ত ভিত আছে। আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, জামায়াতে ইসলামী, জাসদসহ বাম দলগুলোর পাশাপাশি ইসলামী দলগুলোর প্রার্থীরা মাঠে কাজ করে যাচ্ছেন। নির্বাচনী মাঠের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দল বিএনপি দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও ভিতরে ভিতরে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন দলটির মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। ভোটের দিক থেকে এ আসনটিতে আওয়ামী লীগের পরই জামায়াতের অবস্থান। ২০০৮ সালের পর থেকে টানা তিনবার এ আসনটি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের দখলে। ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা মুস্তফা লুৎফুল্লাহ এ আসনে টানা দুবারের সংসদ সদস্য। এবারও তিনি প্রার্থী হিসেবে কেন্দ্রে জোর লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, সাতক্ষীরা-১ আসনের তালা ও কলারোয়া উপজেলার আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ওয়ার্কার্স পার্টির এই এমপি সুকৌশলে গ্রুপিং সৃষ্টি করে দলকে দ্বিখন্ডিত করে রেখেছেন। তাই এবার আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা চান দলীয় প্রার্থী। এ আসনে অর্ধ ডজনেরও বেশি প্রার্র্থী আওয়ামী লীগের মনোনয়নের জন্য মাঠে কাজ করছেন। এদের মধ্যে সাবেক এমপি জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রকৌশলী শেখ মুজিবুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সাবেক এমপি প্রয়াত সৈয়দ কামাল বখত্ সাকির পুত্র জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ফিরোজ কামাল শুভ্র, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মোহাম্মদ হোসেন, কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজ আহম্মেদ স্বপন, জেলা আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক সরদার মুজিব, কেন্দ্রীয় যুুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য রফিকুল ইসলাম, তালা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ নুুরুল ইসলাম এবং জেলা কৃষক লীগের সাবেক সভাপতি বিশ্বজিৎ সাধু দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী। বিএনপির দলীয় প্রার্থীর তালিকায় রয়েছেন- সাবেক এমপি কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুুল ইসলাম হাবিব। এই মুহূর্তে তিনি ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট সাতক্ষীরার কলারোয়ায় তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার মামলায় দন্ডপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে কারাগারে আছেন। তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে না পারলে তার স্ত্রী শাহানা আক্তার বকুল প্রার্থী হবেন বলে বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা গেছে। বিএনপির বিভিন্ন কর্মসূচিতে তাকে সক্রিয়ভাবে দেখা যাচ্ছে। জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে দীর্ঘদিন মাঠে আছেন সাবেক তথ্যমন্ত্রী জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ দিদার বখত্। জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা মনে করেন, মহাজোটগত নির্বাচন হলে এবার তার প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জাসদ থেকে জেলা সভাপতি শেখ ওবায়েদুস সুুলতান বাবলু মনোনয়নপ্রত্যাশী। জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন কেন্দ্রীয় জামায়াতের কর্মপরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ ইজ্জত উল্লাহ। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনের পর থেকে রাজনীতির মাঠে প্রকাশ্যে তৎপরতা না থাকলেও এবার কোরবানির ঈদে তালা-কলারোয়ার বিভিন্ন হাটবাজারে তার শুভেচ্ছা পোস্টার দেখা গেছে। জামায়াতের প্রস্তুতি ও আন্দোলনের বিষয়টি জনসম্মুখে এসেছে। এ আসনে ভোটের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াত ও জাতীয় পার্টির বাইরে বাম ঘরানা ও ইসলামী দলগুলোর তেমন অস্তিত্ব নেই বললেই চলে। জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী সাবেক এমপি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবুুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, নির্বাচনে শেখ হাসিনার একজন নিবেদিত কর্মী হিসেবে দলীয় মনোনয়ন পেলে ভোটযুদ্ধে একমাত্র আমিই পারব জয়যুক্ত হতে।

জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মোহাম্মদ হোসেন বলেন, এ আসনে ওয়ার্কার্স পার্টির এমপির কারণে আওয়ামী লীগ বিভক্তিতে পড়েছে। দলের নেতা-কর্মীদের সুসংগঠিত করার চেষ্টা করছি। বর্তমান এমপি ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা মুস্তফা লুৎফুল্লাহ বলেন, এলাকার উন্নয়নে কাজ করেছি। এবারও প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছি। জোটের সঙ্গে ছিলাম। জোটগতভাবে যে সিদ্ধান্ত আসবে তা মাথা পেতে নেব। জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ দিদার বখত্ বলেন, মহাজোটের সঙ্গে আছি। জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচনের ব্যাপারে আগামীতে যে সিদ্ধান্ত আসবে সেটি বাস্তবায়নের ব্যাপারে কাজ করে যাব।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর