জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গতকাল ১৬ দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীরা। বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে ১১ জুলাই থেকে তাদের আন্দোলন চলছে। বৃষ্টিতে ভিজেও অবস্থান কর্মসূচিতে ছিলেন তারা। বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির ব্যানারে শিক্ষক-কর্মচারীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তালাবদ্ধ ও পাঠদান বর্জন করে আন্দোলন করে যাচ্ছেন। প্রেস ক্লাবের সামনে এই আন্দোলনে গতকাল প্রায় চার হাজার শিক্ষক অংশ নেন। এদিকে স্কুল-কলেজে শিক্ষার যথাযথ পরিবেশ নিশ্চিতে শিক্ষক-কর্মচারীদের নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিতে কঠোর নজরদারির নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। গতকাল বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীরা বলছেন, যে বেতন-ভাতা সরকারের পক্ষ থেকে তাদের দেওয়া হয় তা দিয়ে বর্তমান দুর্মূল্যের বাজারে শিক্ষকদের টিকে থাকাই অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে আন্দোলনে নেমেছেন। জাতীয়করণের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। আন্দোলনকারী শিক্ষকরা বলেন, তাদের এই আন্দোলন দমাতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর এবং শিক্ষাবোর্ড থেকে বিভিন্ন নোটিস জারি করা হচ্ছে। কিন্তু এসব করে লাভ হবে না। জাতীয়করণের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষকরা ক্লাসে ফিরবেন না। গতকাল ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্কুল-কলেজের শিক্ষার যথাযথ পরিবেশ নিয়মিত ক্লাস এবং নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নে শিক্ষক-কর্মচারীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়মিত উপস্থিত থেকে পাঠদান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে স্কুল-কলেজের গভর্নিং বডি বা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সংশ্লিষ্ট সদস্যদের কঠোরভাবে নজরদারি করার অনুরোধ করা যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ব্যর্থতার সব দায়ভার সংশ্লিষ্ট গভর্নিং বডি বা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সদস্যদের ওপর বর্তাবে। এর আগে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) থেকে শিক্ষকদের প্রতিষ্ঠানে উপস্থিতি নিশ্চিতে একাধিকবার নির্দেশনা দেওয়া হয়। এমনকি দৈনিক অনুপস্থিত শিক্ষকদের তালিকা পাঠানোর নির্দেশনাও দিয়েছে মাউশি।
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ কাওছার আহমেদ গতকাল বলেন, শান্তিপূর্ণ এই আন্দোলনকে বিভিন্নভাবে কটাক্ষ করছেন শিক্ষামন্ত্রী। আন্দোলন নস্যাৎ করার জন্য নানাভাবে অপচেষ্টা হচ্ছে। তাঁকে জানানো হয়েছে, শিক্ষামন্ত্রী জাতীয়করণের বিষয়ে একটি কর্মশালা করবেন। সেই কর্মশালায় শিক্ষকদের উপস্থিত থাকতে হবে। কিন্তু তাঁরা মনে করেন এই আন্দোলনকে নস্যাৎ করার জন্য একের পর এক ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় এই কর্মশালা। জাতীয়করণের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ও প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ না পাওয়া পর্যন্ত শিক্ষকরা শ্রেণিকক্ষে ফিরবেন না।