শুক্রবার, ২৮ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

ভালো অবস্থানে আওয়ামী লীগ বিএনপিতে প্রার্থী অনেক

আজহার মাহমুদ, চট্টগ্রাম

ভালো অবস্থানে আওয়ামী লীগ বিএনপিতে প্রার্থী অনেক

চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ সংসদীয় আসনের মধ্যে চট্টগ্রাম-১ মিরসরাই অন্যতম। পাহাড়, নদী ও সাগরবেষ্টিত এই আসনে বর্তমান সরকার দেশের সর্ববৃহৎ অর্থনৈতিক অঞ্চল বাস্তবায়ন করছে। এখানে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ শুরু করেছে। ফলে আগে থেকেই এই অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ এই আসনটি বর্তমানে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এই আসনে বিভিন্ন দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা ইতোমধ্যে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন।

স্বাধীনতার পর থেকে এই আসনে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি প্রায় সমানে সমান লড়েছে। যে দলই জিতুক ভোটের ব্যবধান খুব বেশি হয়নি কোনো নির্বাচনে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মিরসরাইয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা, যোগাযোগ ব্যবস্থার অভূতপূর্ব উন্নয়নের ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা বেড়েছে বলে মনে করেন স্থানীয়রা।

এই আসনের বর্তমান এমপি সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন স্বাধীনতার পর থেকে ছয়বার আওয়ামী লীগের মনোনয়নে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। মন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছেন একাধিকবার। বর্তমানে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্যের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। এই নেতা দলীয় প্রধানের আস্থাভাজন হিসেবেও সবার কাছে পরিচিত। ফলে ক্ষমতাসীনদের মনোনয়ন দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে থাকবেন তিনি। তাঁর পুত্র ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুর রহমান রুহেলও বাবার আসনে হাল ধরার লক্ষ্যে দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতির মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। দল চাইলে তিনিও এই আসনে নৌকার প্রার্থী হতে পারেন। জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘দেশের জন্য যুদ্ধ করেছিলাম। আর দেশ স্বাধীনের পর থেকে মানুষের জন্য কাজ করছি। গণমানুষের ভালোবাসাই আমার একমাত্র সম্পদ। যত দিন বাঁচব মানুষের জন্যই কাজ করে যাব। নির্বাচন আসতে এখনো কিছু সময় বাকি। দলীয় সভানেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা যেভাবে চাইবেন, সেভাবেই সব কিছু হবে।’ ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ ছাড়াও এই আসনে মিরসরাই উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন, যুবলীগ নেতা নিয়াজ মোরশেদ এলিটসহ একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নজর কাড়তে নানা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘আমি ৫০ বছর ধরে রাজনীতি করছি। ছাত্রলীগ থেকে শুরু করে আজকের এই অবস্থানে এসেছি। কোনো দিন দলচ্যুত হইনি। আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছিলাম এবং থাকব। দলীয় সভানেত্রী চাইলে আমি নির্বাচনে প্রার্থী হতে চাই।’ অপর মনোনয়নপ্রত্যাশী নিয়াজ মোরশেদ এলিট বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ছাত্র যুবকদের সঙ্গে নিয়ে এলাকার জন্য কাজ করছি। তৃণমূলের সঙ্গে আমার গভীর সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। আমি প্রার্থী হতে চাই।’ বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে আছেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিন, মিরসরাই উপজেলা আহ্বায়ক শাহিদুল ইসলাম চৌধুরী, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আমিন। মনোনয়নপ্রত্যাশী এ নেতারা দলীয় কর্মসূচির বাইরে নিজ নিজ উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে মানুষের কাছাকাছি থাকার চেষ্টা করছেন। মনোনয়নপ্রত্যাশী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শাহিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘হামলা, মামলার ভয় না করে আমি রাজপথে ছিলাম, আছি এবং থাকব। দীর্ঘ সময় দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে মানুষের জন্যও কাজ করে আসছি। দলের নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষেরও আগ্রহ আছে। এসব কারণে প্রার্থী হতে আগ্রহী।’ চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিন বলেন, ‘রাজপথ জেল জুলুম মোকাবিলা করে দীর্ঘ সময় রাজনীতি করেছি। একবারের জন্যও দলের সঙ্গে বেইমানি করিনি। এ কারণে আমি দল চাইলে প্রার্থী হতে চাই।’

সর্বশেষ খবর