শনিবার, ২৯ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা
সেই পূর্ণিমা শীল বললেন

অন্ধকার জগৎ আবার ফিরে আসুক চাই না

নিজস্ব প্রতিবেদক

আওয়ামী লীগের দুই সহযোগী ও এক ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের উদ্যোগে রাজধানীর বায়তুল মোকাররমের শান্তি সমাবেশে যোগ দিয়েছেন ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত ক্যাডারদের হাতে পাশবিক নির্যাতনের শিকার সিরাজগঞ্জ উল্লাপাড়ার পূর্ব দেলুয়া গ্রামের পূর্ণিমা রানী শীল। বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস-নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে শান্তির এই সমাবেশে বক্তৃতায় পূর্ণিমা শীল বলেন, ‘সবাই আমার মনের অবস্থাটা বোঝেন। আমি আমার বাল্যকাল হারিয়েছি। ২০০১ সালে ভোটের পর ২১ হাজার হিন্দুর বাড়িঘরে হামলা হয়েছে। ধানের শীষে ভোট দিলেও ‘ওরা আওয়ামী লীগে ভোট দিয়েছে’ এই অভিযোগ তুলে পৈশাচিক নির্যাতন চালিয়েছে। সেই যুগে আবারও ফিরে যেতে চাই না। আমি আর ঘরে ঘরে পূর্ণিমা দেখতে চাই না। অন্ধকার জগৎ আবার ফিরে আসুক তা চাই না।’ গতকাল যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগের উদ্যোগে দেশব্যাপী বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির প্রতিবাদে শান্তি সমাবেশ করা হয়। এতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রধান অতিথি ছিলেন। সমাবেশ মঞ্চে ২২ বছর আগে তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে পূর্ণিমা রানী শীল বলেন, ‘তারেক রহমান আজ কোথায়? তিনি কেমন করে বলেন, মানবতার কথা? তার কি লজ্জা হয় না?’ তিনি আরও বলেন, ‘তারেক রহমান বাংলাদেশের জন্য একটা চর্মরোগ। তিনি নারী ছাড়া কিছু বোঝেন না। এই অ্যালার্জি থেকে মুক্তির উপায় হলো তাদের ঝাড়ু মেরে পাকিস্তানে পাঠানো।’ পূর্ণিমা বলেন, ‘আমি ঘরে ঘরে পূর্ণিমা দেখতে চাই না। আমাদের মানইজ্জত হারিয়ে দিনের পর দিন সংগ্রাম করতে হয়েছে। আমরা আর চাই না ওই জীবন। উপস্থিত যুবক, ছাত্র জনতা ভাইদের কাছে দাবি- আমি আপনাদের বোন, আপনারা কথা দিন, যেখানে অপকর্ম-সন্ত্রাস দেখবেন, সেখানেই প্রতিরোধ গড়ে তুলবেন? অন্ধকারের অপশক্তিকে আর দেখতে চাই না।’ ২০ জুলাই খুলনায় তারুণ্যের জয়যাত্রা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বিএনপি ক্যাডারদের হাতে নির্মমভাবে নিহত হন নড়াইলের পিরোলী ইউনিয়ন যুবলীগ কর্মী আজাদ শেখ। গতকালের সমাবেশে বক্তব্য রাখেন তার ছোট ভাই সাজ্জাদ শেখ। এ সময় কান্নাজড়িত কণ্ঠে সাজ্জাদ বলেন, ‘সেদিন খুলনার সমাবেশ শেষে সবাই ঘরে ফিরেছিল, কিন্তু আমার ভাইয়ের লাশ এসেছিল। বিএনপির গুপ্ত সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে হত্যা করে আমার ভাইকে।’ সাজ্জাদ শেখ বলেন, ‘আমার ভাইয়ের ছোট দুইটা সন্তান। একটা ছেলের বয়স মাত্র এক বছর। সে এখনো জানে না বাবা কী জিনিস। তারা (বিএনপি) আমার ভাতিজাদের এতিম করেছে। আমার ভাবিকে বিধবা করেছে। আমার মা-বাবাকে করেছে সন্তানহারা। আর আমি হারিয়েছি ভাই। যারা স্বজন হারান তারাই শুধু জানেন, স্বজন হারানোর যন্ত্রণা। ১৯৭৫ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনা স্বজন হরিয়েছিলেন। আমরা সেই অপরাজনীতি আর দেখতে চাই না।’ তিনি দ্রুত ভাই হত্যার বিচার দাবি করেন। আওয়ামী লীগের তিন সংগঠনের সমাবেশে ‘মায়ের কান্না’র আহ্বায়ক কামরুজ্জামান লেলিন বলেন, ‘মায়ের কান্না শেষ হয়নি। খুনি জিয়া নাটক করে সামরিক অফিসারদের হত্যা করেছিল। জিয়ার নির্দেশে বিমানবন্দরে একটি রুশ বিমান নামানো হয়েছিল। এক মিনিটের নাটকীয় বিচার করেছিলেন। ১৪ সেনাসদস্যকে হত্যা করেছিল। আমি জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার দাবি করছি।’

সর্বশেষ খবর