মঙ্গলবার, ১ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

আমরণ অনশনে শিক্ষকরা

আন্দোলন ২১তম দিনে

নিজস্ব প্রতিবেদক

আমরণ অনশনে শিক্ষকরা

রাজধানীতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে চলছে শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি -বাংলাদেশ প্রতিদিন

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান নিয়ে আন্দোলনরত বেসরকারি শিক্ষকরা আজ সকাল থেকে কাফনের কাপড় পরে আমরণ অনশন শুরু করেছেন। গতকাল ২১তম দিনের অবস্থান কর্মসূচি চলাকালেও বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের আশ্বাস বা প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতের সময় না পাওয়ায় নতুন এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন শিক্ষক নেতারা।

গত ১১ জুলাই থেকে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) ব্যানারে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান নিয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে অটল রয়েছেন বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীরা। মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতর থেকে হাজিরা সিট চেয়ে পাঠালেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তালাবদ্ধ করে পাঠদান বর্জন করে আন্দোলন করে যাচ্ছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। গতকালও কয়েক হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা কর্মসূচিতে অংশ নেন।

আন্দোলনরত শিক্ষকদের সংগঠন বিটিএর সভাপতি অধ্যক্ষ মো. বজলুর রহমান মিয়া গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দাবি আদায় না হলে শিক্ষকদের এ আন্দোলন থামানোর সুযোগ নেই। বিটিএ সাধারণ সম্পাদক শেখ কাওছার আহমেদ বলেন, এতদিন আন্দোলন করলাম তবু আমাদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস পেলাম না। তাই আমরা এক দফা দাবি প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতের অপেক্ষায় আছি। এ সাক্ষাৎ না পাওয়া পর্যন্ত শোকের মাসে কাফনের কাপড় পরে আমরণ অনশন করব। যতক্ষণ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ পাব না, ততক্ষণ পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। শিক্ষকরা দাবি আদায় না করে রাজপথ থেকে ফিরে যাবে না।

আন্দোলনরত শিক্ষকরা বলেন, যে বেতন-ভাতা বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের সরকারের পক্ষ থেকে তাদের দেওয়া হয়; তা দিয়ে বর্তমান দুর্মূল্যের বাজারে শিক্ষকদের টিকে থাকাই অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে তারা আন্দোলনে নেমেছেন। জাতীয়করণের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তারা। শিক্ষকরা জানান, এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা মাত্র ২৫ ভাগ উৎসব ভাতা, ১ হাজার টাকা বাড়িভাড়া এবং ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। অথচ একই কারিকুলামের অধীন একই সিলেবাস, একই একাডেমিক সময়সূচি, একইভাবে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও উত্তরপত্র মূল্যায়নের কাজে নিয়োজিত থেকেও আর্থিক সুবিধার ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে পাহাড়সম বৈষম্য বিদ্যমান। তারা আরও জানান, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের বেতন স্কেল সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের বেতন স্কেলের এক ধাপ নিচে প্রদান করা হয়। এ ছাড়া সহকারী প্রধান শিক্ষকদের উচ্চতর স্কেল প্রদান না করার ফলে উচ্চতর স্কেলপ্রাপ্ত সিনিয়র শিক্ষকদের বেতন স্কেল ও সহকারী প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল সমান হওয়ায় প্রতিষ্ঠান প্রধান ও সহকারী প্রধানদের মধ্যে দীর্ঘদিনের অসন্তোষ রয়েছে। তাই তারা মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবি তুলেছেন। এ জন্য বছরের পর বছর উপজেলা থেকে শুরু করে জেলা ও বিভাগীয় শহরে সমাবেশ, মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল, প্রতীকী অনশন, অবস্থান ধর্মঘট, কর্মবিরতি পালন ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর কাছে বারবার স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর