মঙ্গলবার, ১ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

পলিথিন বন্ধ না হওয়ার পেছনে দুর্নীতি

আমিনুর রসুল

পলিথিন বন্ধ না হওয়ার পেছনে দুর্নীতি

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুর রসুল বাবুল বলেছেন, পলিথিন যে পরিবেশের জন্য ভয়াবহ, তা এখন আমরা সবাই জানি। এ জন্য এটা বন্ধে আইন হয়েছে। কিন্তু, দুর্নীতির কারণে হয়তো এটা বন্ধ হচ্ছে না। তা না হলে একটা পণ্য আইন করে নিষিদ্ধ করার পর তার উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়ে কীভাবে? হয় দুর্নীতি জড়িত, অথবা পলিথিন উৎপাদনকারীরা নীতি নির্ধারকদের চেয়ে শক্তিশালী। তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, পৃথিবীতে অনেক দেশ পলিথিন ও প্লাস্টিক মুক্ত হওয়ার চেষ্টা করছে। আমাদের এখানে গবেষণা না থাকায় হয়তো বুঝতে পারছি না কতটা বিপদের মধ্যে আমরা পড়ে গেছি। কিছু কিছু ধারণা আসছে- নদী ও খালগুলো ভরাট হয়ে যাচ্ছে, কৃষিজমিতে বিরূপ প্রভাব পড়ছে, মাছ মারা যাচ্ছে, স্যুয়ারেজ লাইন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, বিভিন্ন রোগ বাড়ছে। পরের জেনারেশন হয়তো আরও খারাপ পরিস্থিতির মুখে পড়বে। বিকলাঙ্গ শিশুর জন্ম হবে, অসুস্থ থাকবে, ক্যান্সার আরও বাড়বে, আয়ু কমে যাবে। আমিনুর রসুল বলেন, পলিথিন নিষিদ্ধ করা হয়েছে প্রায় ২০ বছর। কিন্তু, আইনের প্রয়োগটা নেই। গবেষণায় দেখা গেছে, একটা পরিবারের প্রতিটা সদস্য প্রতিদিন গড়ে পাঁচটি করে পলিথিন ব্যবহার করছে। বিস্কুটের প্যাকেট, চানাচুরের প্যাকেট, চিপসের প্যাকেট, জুসের বোতল সবই এখন প্লাস্টিকের। বিষয়টা কতটা ভয়ঙ্কর! ভিতরের খাবারটা খেয়ে প্যাকেটটি ছুড়ে ফেলছে যত্রতত্র। শত শত বছর ধরে এগুলো প্রকৃতিতে অবিকৃত অবস্থায় থেকে যাচ্ছে। আইন করে একটা পণ্য নিষিদ্ধ করার পর তার উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়ে কীভাবে? পুরান ঢাকায় তো বাড়িতে বাড়িতে পলিথিনের কারখানা! একটা কারখানা করতে গেলে তো অনেক ধরনের অনুমোদন লাগে। নিষিদ্ধ জিনিসের কারখানা বাড়ছে মানে এখানে বড় রকমের দুর্নীতি আছে। সবাই এটার ভাগ পায়। উৎপাদনের জায়গা বন্ধ করলে আপনা আপনি বিকল্প পণ্য চলে আসবে। অতীতে প্লাস্টিকের বিকল্প হিসেবে আমাদের কাগজের ব্যাগ, কাপড়ের ব্যাগ, চটের বস্তা ছিল। এগুলো এখনো ফিরিয়ে আনা সম্ভব। পাশাপাশি দরকারি প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদনকারীদের পুনঃব্যবহারে বাধ্য করতে হবে। যে-ই দূষিত করবে, তাকে তাৎক্ষণিক শাস্তি দিতে হবে। কারখানা সিলগালা করতে হবে।

সর্বশেষ খবর