বৃহস্পতিবার, ৩ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

উত্তরে খরায় বিপাকে কৃষক

প্রতিদিন ডেস্ক

উত্তরে খরায় বিপাকে কৃষক

দেশের উত্তরাঞ্চল ভয়াবহ খরার কবলে পড়েছে। এ জন্য মাটি শুকিয়ে জমি ফেটে যাচ্ছে, কোথাও কোথাও সেচের পানি দেওয়া মাত্র তা শুকিয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় বিপাকে পড়া কৃষকরা হাহাকার করছেন। অনেকে নামাজ শেষে উল্টো হাতে মোনাজাত করেও বৃষ্টির প্রতাশা করছেন। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

ঠাকুরগাঁও : ঠিক অন্য বছর এ সময় মাঠঘাটে বৃষ্টির পানিতে স্রোত বয়ে গেলেও এবার খরায় মাঠঘাট এখনো শুকনো। এ জন্য আমন ধান রোপণ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন জেলার কৃষকরা।

অন্য জেলা থেকে ঠাকুরগাঁও কিছুটা উঁচু জায়গায় অবস্থিত। ফলে বৃষ্টির পানি দীর্ঘদিন জমে থাকে না। শুধু বর্ষা মৌসুমে ফসলি জমিগুলোয় পানি জমে। এবার বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ, আষাঢ় ও শ্রাবণ মাসের মাঝামাঝি সময়েও তেমন বৃষ্টিপাত না হওয়ায় ফসলি জমির পানি শুকিয়ে ফেটে যাচ্ছে। তার পরও থেমে নেই কৃষক। শ্যালো মেশিনের মাধ্যমে সেচ দিয়ে আমন ধান রোপণ শুরু করেছেন তারা। পানি ধরে রাখার জন্য তারা জমির আইল সংস্কার, জমিতে চাষ, সেচ ও ধানের চারা রোপণ এবং খেতের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পাড় করছেন। সদর উপজেলার মালিগাঁও গ্রামের কৃষক সাদেকুল ইসলাম বলেন, এবার রাসায়নিক সার ও কীটনাশকসহ মজুরির দাম বৃদ্ধি এবং বৃষ্টি না হওয়ায় মেশিনে সেচ দিয়ে ধান রোপণের খরচ দ্বিগুণ হচ্ছে। তাছাড়া বিদ্যুতের অসহনীয় লোডশেডিংয়ে সেচ ব্যবস্থা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বিশ্বাসপুর গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, পানি নাই, তাই সময়মতো ধান রোপণ করতে পারছি না। যদিও মেশিনে সেচ দিয়ে কিছু ধান লাগিয়েছি। তাও শুকিয়ে ধানের গাছ লালচে হয়ে যাচ্ছে। মেশিনে এক বিঘা জমিতে সেচ দিতে প্রায় ১ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। চাষ, সেচ ও দিনমজুরের খরচ অনেক বেশি। তাই এবার ধান উৎপাদনে খরচ অনেক বেশি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকায় বিএডিসি ও বরেন্দ্রকে বন্ধ থাকা সেচযন্ত্র দ্রুত চালু করার জন্য বলা হয়েছে। কৃষকদের আমন চাষে সব ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

নীলফামারী : আষাঢ় ও শ্রাবণ মৌসুমেও মিলছে না বৃষ্টি। তাই দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কৃষকেরা। বৃষ্টি না হওয়ায় আমন চারা রোপণে ব্যাঘাত ঘটছে। এ অবস্থায় বিকল্প উপায় হিসেবে সেচযন্ত্র ব্যবহার করে আমন চারা রোপণ করছেন কৃষকেরা। আবাদে খরচ বৃদ্ধি ও উৎপাদন নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন তারা। খাল-বিল শুকিয়ে যাওয়ায় পানির অভাবে কৃষকরা পচাতে পারছেন না পাট।

বগুড়া : বগুড়ার শিবগঞ্জে বৃষ্টি চেয়ে ইসতিসকার নামাজ আদায়, বিশেষ দোয়া ও উল্টোহাতে মোনাজাত করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার দাড়িদহ ঈদগাহ ময়দানে এই নামাজ আদায় করেন আলেম উলামা ও ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। নামাজের ইমামতি করেন দাড়িদহ ফাজিল মাদরাসার সাবেক অধ্যক্ষ মাওলানা তরিকুল আলম খান। নামাজের পর বিশেষ দোয়া পরিচালনা করেন সাবেক এমপি অধ্যক্ষ মাওলানা শাহাদাতুজ্জামান।

নামাজে অংশ নেওয়া মুসল্লিরা জানান, বর্তমানে প্রচণ্ড গরম। এই গরমে আমরা অতিষ্ঠ। বৃষ্টি না হওয়ায় আমাদের খেতের ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। নিজেরা অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি। এমন দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেতে ও আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনসহ আনুগত্য প্রকাশে এই নামাজ আদায় ও দোয়া মোনাজাতের আয়োজন করা হয়েছে। আল্লাহ যেন রহমতের বৃষ্টি নাজিল করেন, এটিই আমাদের প্রত্যাশা।

এর আগে গত সোমবার স্থানীয় কয়েকটি মসজিদে দাড়িদহ ঈদগাহ মাঠে বৃষ্টি প্রার্থনার নামাজের ঘোষণা দেন মুসল্লিরা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর