শুক্রবার, ৪ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

শঙ্কিত নারী ফুটবলাররা মাঠে কমেছে উপস্থিতি

মারধরের প্রতিবাদে মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

খুলনার বটিয়াঘাটায় মামলা তুলে না নিলে অ্যাসিড নিক্ষেপের হুমকির পর থেকেই আতঙ্কে রয়েছেন নারী ফুটবলাররা। আগে প্রতিদিনই প্রায় ৩০ জন অনুশীলনে মাঠে আসতেন, এখন আসেন ১০-১৫ জন।

এদিকে নারী ফুটবলারদের মারধরের প্রতিবাদে ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর অধিকার আন্দোলন খুলনা জেলা শাখা।

গতকাল খুলনা প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের জেলা কমিটির সভাপতি সুব্রত কুমার মিস্ত্রি। প্রধান অতিথি ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বিভুতোশ রায়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ফুটবল খেলার জন্য সাদিয়া নাসরিন, মঙ্গলী বাগচীসহ চারজনকে মারধর করা হয়েছে। নারী যখন বিভিন্ন ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে, ঠিক তখনই একশ্রেণির মানুষ তাদের অপমান অপদস্ত করছে। নারী ফুটবলারদের ওপর হামলার ঘটনায় মামলার পরও অ্যাসিড নিক্ষেপের হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

স্থানীয় তেঁতুলতলা সুপার কুইন ফুটবল একাডেমির খেলোয়াড় সাদিয়া নাসরিন বলেন, হামলাকারীরা আমাদের হত্যার হুমকি দিয়েছে। মামলা তুলে না নিলে অ্যাসিড মেরে মুখ ঝলসে দেওয়ারও ভয় দেখিয়েছে। বটিয়াঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন হামলায় আহত কিশোরী ফুটবলার মঙ্গলী বাগচী বলেন, রড দিয়ে পিটিয়ে আমার মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। ওড়না দিয়ে সেখানে প্রায় দুই ঘণ্টা আমাকে বেঁধে রাখে।

জানা যায়, ২৭ জুলাই একাডেমিতে অনুশীলন করার সময় একজন নারী ফুটবলারের ছবি তুলে তার বাবা-মাকে দেখিয়ে আজেবাজে মন্তব্য করেন স্থানীয় আরেকটি মেয়ে। এ নিয়ে ক্লাবের সদস্য ও নারী ফুটবলাররা ২৯ জুলাই ওই মেয়ের বাড়ি গিয়ে জিজ্ঞাসা করলে তার পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীরা নারী ফুটবলারদের মারধর করে আহত করেন। লোহার রডের আঘাতে মঙ্গলী বাগচির মাথা ফেটে যায়। এ ছাড়া হাফ প্যান্ট পরে গ্রামের মাঠে ফুটবল খেললে গ্রাম থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। তেঁতুলতলা সুপার কুইন ফুটবল একাডেমির সভাপতি ইসলাম হাওলাদার বলেন, হামলার পর মেয়েদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনুশীলনের জন্য ডেকে ডেকে আনতে হচ্ছে। আগে কোনো দিন গ্রামের কেউ ফুটবল খেলা নিয়ে মেয়েদের উত্ত্যক্ত বা কটূক্তি করেনি। কিন্তু এবারই প্রথমবার এ ধরনের ঝামেলা তৈরি হলো।

বটিয়াঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শওকত কবির জানান, অ্যাসিড নিক্ষেপের হুমকির অভিযোগে সাদিয়া ৩১ জুলাই জিডি করেন। মামলা, জিডির তদন্ত চলছে। এ ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া নূর আলম বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।

এদিকে এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন সুলতানা কামাল, গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী,

নিজেরা করি’র সমন্বয়কারী খুশী কবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম, বেলা’র প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান প্রমুখ।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর