বুধবার, ৯ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

শর্ত না মানলে সার্ভিস বন্ধ

এনআইডির তথ্য ফাঁস ঠেকাতে সেবাগ্রহীতা প্রতিষ্ঠানে নজরদারি বাড়িয়েছে ইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক

শর্ত না মানলে সার্ভিস বন্ধ

নির্বাচন কমিশন থেকে জাতীয় পরিচয়পত্রের সেবা নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোকে নজরদারিতে আনা হচ্ছে। সেই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম কারিগরি নিরীক্ষা ও পরিদর্শনের আওতায় আনতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ। ইতোমধ্যে প্রাথমিকভাবে ইসির এনআইডি উইংয়ের নিজস্ব কারিগরি টিম তিনটি পার্টনার সার্ভিস অর্গানাইজেশনের বিষয়ে ‘আইটি অডিট’ চালাচ্ছে। ইতোমধ্যে একটি বেসরকারি ব্যাংকের এনআইডি সেবা বন্ধ করে দিয়ে আবারও খুলে দিয়েছে ইসি।

প্রায় ১২ কোটি নাগরিকের তথ্যভাণ্ডার থেকে ১৭১টি প্রতিষ্ঠান সেবা নিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ইসির তথ্য ভাণ্ডার সুরক্ষিত থাকলেও সেবাগ্রহীতা প্রতিষ্ঠানের কোনোটিই যেন তথ্য ফাঁস হওয়ার মতো অনিরাপদ না থাকে, তা নিশ্চিত করতে নানা কর্যক্রম হাতে নিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

ইসির কর্মকর্তারা বলেছেন, তথ্য ফাঁসের ঘটনার পর ইসি তদারকি বাড়িয়ে দিয়েছে। একটা তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে। কমিটি কিছু প্রতিষ্ঠানকে ইনকোয়ারি করে রিপোর্ট দেবে। এক্ষেত্রে ফিজিক্যাল ও আইটি ইন্সপেকশন করা হচ্ছে। একটি কারিগরি টিম করা হয়েছে। ইতোমধ্যে তিনটি প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে আইটি অডিট চলছে। জানা গেছে, বছরখানেক আগে সেবাগ্রহীতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক হয়েছিল, তা আবার হবে। শর্ত প্রতিপালন করছে না, এমন নজরে এলেই সার্ভিস বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। কেননা ‘তথ্য সংরক্ষণ করা যাবে না’ এবং দ্বিতীয় পক্ষ ইসির তথ্য-উপাত্ত কোনো অবস্থাতেই অন্য কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে হস্তান্তর, বিনিময়, বিক্রয় বা অন্য কোনো পন্থায় দেওয়া যাবে না বলে চুক্তিতে রয়েছে।

গত ৬ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক সংবাদমাধ্যম টেকক্রাঞ্চে বাংলাদেশের সরকারি একটি ওয়েবসাইট থেকে লাখ লাখ নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হওয়ার খবর প্রকাশিত হয়। লাখো নাগরিকের তথ্য ফাঁসের খবর প্রকাশিত হওয়ার এক মাস হতে চলেছে। ভোটার তালিকাভুক্ত নাগরিকদের তথ্য ভাণ্ডার নিয়ে ইসির এনআইডি উইং ৯ জুলাই কার্যক্রম শুরু করে। জরুরি ভিত্তিতে নিরাপত্তা সংক্রান্ত কার্যক্রমের লক্ষ্যে পার্টনার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের দুর্বলতা খুঁজে বের করে তা নিরসনে আইটি অডিট কার্যক্রম নেওয়ার পরামর্শ আসে। বুয়েট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে নিরাপত্তা সংক্রান্ত কারিগরি কমিটি গঠনের পাশাপাশি তথ্য যাচাইয়ের পলিসি শক্তিশালী করা ও মনিটরিং করার সুপারিশ আসে। এ ধারাবাহিকতায় ১৩ জুলাই বিশেষজ্ঞ, সরকারের বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি, কম্পিউটার কাউন্সিল ভেন্ডর প্রতিষ্ঠানসহ অনেকের সঙ্গে বৈঠক করে এনআইডি উইং। এ সভায় জাতীয় পরিচয় তথ্যভাণ্ডারের সার্ভারকে সুরক্ষিত রাখার পাশাপাশি সেবা নেওয়া ১৭১টি প্রতিষ্ঠানের ওপর সারাক্ষণ তদারকি চালানোর সুপারিশ এসেছে।

১৭১টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি : সরকারি প্রতিষ্ঠান ৫৪, মোবাইল কোম্পানি ৬, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ৬৩, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ২৮, মোবাইল ব্যাংকিং কোম্পানি ৮, বীমা কোম্পানি ৮ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ৭টি। নির্ধারিত পদ্ধতি ও শর্তে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ইসির কাছ থেকে তথ্য-উপাত্ত পেতে আবেদন করতে পারবে এবং চুক্তির আওতায় এলে কমিশন তা সরবরাহ করতে পারবে। প্রবিধি অনুযায়ী নির্ধারিত হারে ফি ও চার্জ পরিশোধের বিধান রয়েছে। চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান সরাসরি সরকারি কোষাগারে জমা দেয় এ অর্থ। জানুয়ারি পর্যন্ত ইসি মোট ২৫৩ কোটি ৪৮ লাখ ৭৪ হাজার ৩১৬ টাকা রাজস্ব জমা দিয়েছে এ খাতে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর