বুধবার, ৯ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

ভারতের কোটার ছয় পণ্য আমদানির সুযোগ

জানতে চেয়েছে সমন্বয়কারী কর্তৃপক্ষের নাম নিষেধাজ্ঞা থাকলেও চাল আমদানি করতে পারবে সরকার

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

কোটা অনুযায়ী ভারত থেকে ছয় ধরনের নিত্যপণ্য আমদানির যে প্রস্তাব দিয়েছিল বাংলাদেশ, সেই প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে দেশটি। শুধু তাই নয়, কোটার পণ্য বেসরকারি খাতের মাধ্যমেও আমদানির সুযোগ পাবে বাংলাদেশ। তবে সরকারি বা বেসরকারি যে প্রক্রিয়ায় আমদানি হোক না কেন- তা কোন কর্তৃপক্ষ সমন্বয় করবে সে বিষয়েও জানতে চেয়েছে দেশটি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, ভারতের প্রস্তাব অনুযায়ী চাল, গম, চিনি, পিঁয়াজ, রসুন, আদা ও ডাল এই ৬ ধরনের নিত্যপণ্যের কোটা নির্ধারণ করে- সে অনুযায়ী পণ্য দিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল গত মার্চে। ভারত কোটা মেনে এখন পণ্য দিতে সম্মত হয়েছে।

জানা গেছে, কোটার পণ্য সরকারি-বেসরকারি উভয় মাধ্যমে আমদানির প্রস্তাব দিয়েছিল সরকার। ভারত তাতেও সম্মতি দিয়েছে। এখন দেশটির প্রস্তাব অনুযায়ী ‘আমদানি কর্তৃপক্ষ’ নির্ধারণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের সভাপতিত্বে আজ এক আন্তমন্ত্রণালয় সভা ডাকা হয়েছে।

মন্ত্রণালয় সূত্রগুলো জানায়, কোটার পণ্য আমদানি চূড়ান্ত করতে খুব শিগগিরই দুই দেশের মধ্যে একটি ভার্চুয়াল বৈঠক হবে। ওই বৈঠকের আগেই কর্তৃপক্ষ চূড়ান্ত করে ভারতকে জানাতে হবে। সংশ্লিষ্টরা জানান, সরকারিভাবে চাল ও গম আমদানির বিষয়টি সমন্বয় করে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সংস্থা খাদ্য অধিদফতর। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সংস্থা টিসিবির মাধ্যমে ভোজ্য তেল, চিনি, ডাল, ছোলাসহ বেশকিছু পণ্য আমদানি হয়ে থাকে। কৃষিজাত পণ্য আমদানির জন্য আবার কৃষি মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন লাগে। ফলে পৃথক পৃথক পণ্য একাধিক মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সংস্থার মাধ্যমে আমদানিতে সমন্বয়হীনতা দেখা দিতে পারে। এ কারণেই সুনির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষ সম্পর্কে জানতে চাইছে ভারত।

অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে মাঝেমধ্যেই ভারত খাদ্যসহ নিত্যপণ্য রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়। আমদানি বাধাগ্রস্ত হওয়ায় এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে বাংলাদেশের বাজারে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে প্রতি বছর একটি নির্দিষ্ট কোটা অনুযায়ী চাল, গম, চিনি, পিঁয়াজ, রসুন, আদা ও ডাল এই ৬ ধরনের নিত্যপণ্য বাংলাদেশকে দেওয়ার জন্য ভারতের সঙ্গে সমঝোতা করে সরকার। গত ডিসেম্বরে দুই দেশের বাণিজ্যমন্ত্রীর পর্যায়ের বৈঠকে এ সমঝোতার পর কোন পণ্যের কী পরিমাণ বার্ষিক আমদানির চাহিদা রয়েছে- বাংলাদেশকে তা জানাতে বলে ভারত। গত মার্চে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি কমিটি কোটার পণ্যের যৌক্তিক চাহিদা নির্ধারণ করে, ওই পণ্য রপ্তানির অনুরোধ জানিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ভারতে প্রস্তাব পাঠায়। কোটায় পণ্য আমদানির সুযোগ সৃষ্টি হলে নিষেধাজ্ঞার পরও ভারত বাংলাদেশে নির্দিষ্ট পরিমাণ চালসহ সংশ্লিষ্ট পণ্য রপ্তানি করবে বলে জানান বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টরা। কর্মকর্তারা জানান, গত মার্চে ভারতকে দেওয়া বাংলাদেশের প্রস্তাবে বার্ষিক কোটায় ১৫ লাখ মেট্রিক টন চালের চাহিদা দেখানো হয়, যার মধ্যে সরকারিভাবে ৮ থেকে ১০ লাখ- এবং বেসরকারিভাবে ৫ থেকে ৭ লাখ মেট্রিক টন আমদানির প্রস্তাব রয়েছে; বার্ষিক গম আমদানির কোটা সুবিধা চাওয়া হয় ২০ লাখ মেট্রিক টনের, যার মধ্যে সরকারিভাবে ৫ থেকে ৭ লাখ মেট্রিক টন এবং বেসরকারি পর্যায়ে ১৫ লাখ মেট্রিক টন আমদানির প্রস্তাব রয়েছে; অপর চারটি পণ্যের মধ্যে প্রতি বছর কোটার হারে চিনি ১০ লাখ মেট্রিক টন, পিঁয়াজ ৬ লাখ মেট্রিক টন, আদা ১ লাখ মেট্রিক টন এবং রসুন ৫০ হাজার মেট্রিক টন আমদানির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর