শুক্রবার, ১১ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা
বিদেশি ঋণের সুদে উৎসে কর

শোধ করতে হবে ডলারে আপত্তি ব্যবসায়ীদের

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

বিদেশি ঋণের ওপর উৎসে করারোপে আপত্তি জানিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক চিঠিতে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসি) বলেছে, এই করারোপের ফলে বিদেশি ঋণদাতারা সুদের ওপর করের অংশ যোগ করবে। এতে করে অতিরিক্ত বৈদেশিক মুদ্রা দেশের বাইরে চলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করেছে এমসিসিআই।

শিল্পোদ্যোক্তাদের এই সংগঠনটি আরও আশঙ্কা করছে, বৈদেশিক ঋণের সুদের ওপর অতিরিক্ত ২০ শতাংশ হারে করারোপের ফলে সুদবাবদ ব্যবসায় ব্যয় বাড়বে। বিদেশি বিনিয়োগেও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

গত ৬ আগস্ট এমসিসিআইর সেক্রেটারি জেনারেল ফারুক আহমেদ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে এই চিঠিটি পাঠান। মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা রীতি অনুযায়ী এমসিসিআইর আশঙ্কার বিষয়টি এনবিআরকে অবহিত করবেন।

জানতে চাইলে এমসিসিআইর ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল সঞ্জয় প্রসাদ মল্লিক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, উৎসে করারোপের ফলে এখন বিদেশি ঋণের কিস্তি ও সুদ পরিশোধের সময় এই করের টাকা হিসাব করে নিয়ে নেয় সংশ্লিষ্ট ব্যাংক। যেহেতু বিদেশি ঋণের কিস্তি ও সুদ ডলারে পরিশোধ করতে হয়, ফলে করবাবদ অতিরিক্ত অর্থও সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে একইসঙ্গে ডলারে পেমেন্ট করতে হচ্ছে। এতে করে দেশের শিল্প-বিনিয়োগে ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। উপরন্তু অতিরিক্ত ডলার দেশ থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে। সূত্র জানায়, করোনা মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সরবরাহ খাতে সংকট সৃষ্টি হওয়ায় বিশ্বব্যাপী জ্বালানি ও নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যায়। আমদানি ব্যয় মেটাতে ডলার সংকট দেখা দেয়। বিদেশি ঋণের সুদাসল বৈদেশিক মুদ্রায় (ডলার বা ইউরো) পরিশোধ করতে হয় বলে সরকার এই ধরনের ঋণ নিতে দেশি উদ্যোক্তাদের নিরুৎসাহিত করার উদ্যোগ নেয়। এ পরিস্থিতিতে গত ২৩ মে একটি এসআরও (স্ট্যাটুইটারি রেগুলেটরি অর্ডার) জারি করে এনবিআর- যাতে করে এর আগে জারিকৃত এসআরও বাতিল হয়ে যায়।

সূত্র জানায়, ১৯৭৬ সালের ২৯ নভেম্বর জারিকৃত এসআরও অনুযায়ী দেশের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো বিদেশি ঋণ নিলেও এর ওপর উৎসে কর কর্তনের বিধান ছিল না। চলতি বছরের ২৩ মের এসআরও (আয়কর আইন-১৬৯) জারির ফলে আগের এসআরও বাতিল হয়ে যায়। এতে করে বিদেশি ঋণের সুদের ওপর ২০ শতাংশ হারে উৎসে কর কর্তনের বিধান জারি হয়।

এমসিসিআই চিঠিতে বলছে, বর্তমানে বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতির কারণে সময়মতো এলসি খোলা ও সঠিক সময়ে আমদানি করতে ব্যর্থ হচ্ছে শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো। এ অবস্থায় নতুন শিল্প প্রকল্প ও কাঁচামাল আমদানিতে উদ্যোক্তাদের আগের মতো (করবিহীন) বৈদেশিক ঋণের সুযোগ বহাল রাখা উচিত।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর