শুক্রবার, ১১ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ পুনরুদ্ধারের দাবি ঢাকা চেম্বারের

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার বলেছেন, অর্থনীতিকে প্রতিযোগিতামূলক করতে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি অপরিহার্য। সেই সঙ্গে সরকারকে ব্যবসা পরিচালন ব্যয় হ্রাস, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের (এমএসএমই) জন্য সহজে ঋণ প্রাপ্তি, আমদানি বিকল্প শিল্পের প্রসার, সরকারি ব্যয়ে কৃচ্ছ্র সাধন অব্যাহত রাখার পাশাপাশি অগ্রাধিকারভিত্তিক উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের অনুরোধ করেন তিনি। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এসব কথা বলেন ব্যারিস্টার মো. সামীর। অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে বেসরকারি খাতের গুরুত্ব বিবেচনায় সরকারি ও বেসরকারি খাতকে একযোগে কাজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করে ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আগে বাংলাদেশ গড়ে ৬ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি নিয়ে উন্নয়নশীল দেশের জন্য একটি রোল মডেল হিসেবে পরিচিতি লাভ করে, যেখানে বেসরকারি খাত দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি হিসেবে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বিনিয়োগ আকর্ষণ, উৎপাদনশীলতা ও বাণিজ্য প্রসারের মাধ্যমে প্রবৃদ্ধি অর্জনে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে। বর্তমানে জিডিপিতে বেসরকারি খাতের অবদান ৮০ শতাংশের বেশি। এর মধ্যে শিল্পের অবদান প্রায় ৩৭ শতাংশ। বেসরকারি খাত বাংলাদেশের স্থানীয় অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি বৈশ্বিক ভ্যালু চেইনেও অবদান রেখে চলেছে। এই ধারাবাহিক অগ্রগতি অব্যাহত রেখে বাংলাদেশ ২০২৬ সালের মধ্যে একটি উন্নয়নশীল দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি জ্ঞানভিত্তিক স্মার্ট ও উন্নত অর্থনীতিতে পরিণত হওয়ার পথে রয়েছে। এই লক্ষ্য অর্জনে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের ভূমিকা অপরিসীম থাকা সত্ত্বেও সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ নিম্নমুখী হওয়ার প্রবণতা পরিলক্ষিত হচ্ছে।’ বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, করোনা মহামারির কারণে বিগত ২০২০-২১ অর্থবছরে বেসরকারি বিনিয়োগের হার কমে ২১.২৫ শতাংশে নেমে আসে, যা ১৪ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। মহামারির ধাক্কা সামলে যখনই বাংলাদেশের অর্থনীতি আগের মতো ঘুরে দাঁড়াচ্ছিল, তখনই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে সৃষ্ট বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং সরবরাহ ব্যবস্থার জটিলতা দেশের অর্থনীতিকে বাধাগ্রস্ত করে। ফলস্বরূপ, ২০২২-২৩ অর্থবছরে জিডিপির ২৪.৮ শতাংশ বিনিয়োগ লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ২১.৮ শতাংশ অর্জিত হয়েছে। এ বিষয়ে সরকার ও অংশীজনদের বিভিন্ন প্রচেষ্টা সত্ত্বেও বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি প্রত্যাশিত পর্যায়ে অর্জিত হয়নি।’ বিবৃতিতে বলা হয়, ২০২৩ অর্থবছরের প্রথমার্ধে সরকারি খাতের ঋণ লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৩ শতাংশ এবং বেসরকারি খাতে ঋণ ছিল ১০.৯ শতাংশ। উভয় খাতের মধ্যকার এই ব্যবধান বেসরকারি খাতে কম ঋণপ্রবাহের অন্যতম কারণ।

মূল্যস্ফীতি ও সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি এবং ক্রমবর্ধমান সরকারি উন্নয়ন ব্যয় মেটাতে আর্থিক খাত থেকে ঋণ গ্রহণ, বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ কাক্সিক্ষত মাত্রায় পরিলক্ষিত হয়নি। এ ছাড়া বৈদেশিক মুদ্রাবাজারের ওপর অতিরিক্ত চাপ এ ক্ষেত্রে কিছুটা প্রভাব ফেলেছে।

সর্বশেষ খবর