ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার খড়মপুর কল্লা শহীদের (রহ.) বার্ষিক ওরসে এসে ট্রেনের ধাক্কায় চারজন নিহত ও একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ৯টায় আখাউড়া-সিলেট বাইপাস রেলপথের খড়মপুর মাজার এলাকায় তিতাস নদের ওপর রেলসেতু পারাপারের সময় এ ঘটনা ঘটে। তাদের মধ্যে তিনজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন নরসিংদী জেলার মাধবদী থানার নোয়াকান্দি গ্রামের গাজী মিয়ার ছেলে শুকুর মিয়া (৬০), একই জেলার পলাশ উপজেলার মোতালেব মিয়ার ছেলে মোজাম্মেল (২০) ও নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার উপজেলার চিলকান্দি গ্রামের তমিজ উদ্দিনের ছেলে মতি ভূইয়া (৫৫)। অপর নিহতের পরিচয় পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় গুরুতর আহত আমিরুল ইসলামকে উদ্ধার করে রাতেই আখাউড়া হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। শুক্রবার সকালে তার স্বজনরা এসে নরসিংদী জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেছে।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার ভোর রাত থেকে আখাউড়া পৌরশহরের খড়মপুর কল্লা শহীদ (রহ.) সাত দিনব্যাপী বার্ষিক ওরস শুরু হয়েছে। ওরস উপলক্ষে হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটে মাজার এলাকায়। রাত পৌনে ৯টার দিকে ঢাকা-সিলেট রেলপথের মাজার সংলগ্ন এলাকায় ঢাকাগামী পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনের ধাক্কায় এবং ঝাঁপ দিয়ে পানিতে পড়ে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা রাতেই দুটি লাশ উদ্ধার করে। শুক্রবার ভোর সাড়ে ৫টা এবং দুপুর ১২টার দিকে আরও ২টি লাশ ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করে ফায়াস সার্ভিসের কর্মীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন পুলিশ সদস্য বলেন, ট্রেনের গতি বেশি ছিল এবং ট্রেনটি সেতুর কাছাকাছি এসে হুইসেল দেওয়ায় সেতু পার হতে না পারায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত শুক্কুর আলীর ছোট ভাই সামসুল হক বলেন, হঠাৎ ট্রেন চলে আসায় ভাই ট্রেনের ধাক্কা খেয়ে পানিতে পড়ে যায়। পরে তার লাশ দেখে শনাক্ত করি। আখাউড়া রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন খন্দকার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ওরসে আসা লোকজন রেলসেতু পারাপার হচ্ছিল। এ সময় ঢাকাগামী পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেন এলে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা হুইসেল বাজিয়ে ট্রেন আসার সংকেত দেয়। লোকজন তাড়াহুড়া করে পারাপার হতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় সেতু থেকে নদীতে ছিটকে পড়ে নিহত হয়। খবর পেয়ে আখাউড়া ফায়ার সার্ভিস নদী থেকে দুটি লাশ উদ্ধার করে। পরে শুক্রবার ভোরে এবং দুপুরে আরও দুটি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এদের মধ্যে দুজনকে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আখাউড়া থানার ওসি মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, অজ্ঞাত একজনকে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আখাউড়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশন অফিসার মুনিম সারোয়ার বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে দুটি এবং শুক্রবার দুটি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার সময় রেলসেতু থেকে কজন ছিটকে পড়েছে তা সঠিক করে কেউ বলতে পারছেন না। তিতাস নদে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার অভিযান চলছে। এখন পর্যন্ত চারজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।