শিরোনাম
রবিবার, ১৩ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

পাঁচ জেলায় বড় ক্ষতি কৃষকের

সড়ক ভেঙেছে বিভিন্ন স্থানে

প্রতিদিন ডেস্ক

পাঁচ জেলায় বড় ক্ষতি কৃষকের

বান্দরবান ও চট্টগ্রামে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক। তলিয়েছে জমি -বাংলাদেশ প্রতিদিন

চট্টগ্রাম অঞ্চলে টানা বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে কৃষি খাত। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫টি জেলার প্রায় ৫০ হাজার হেক্টর জমির ফসল। এ ছাড়া আরও কয়েক স্থানে বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির কারণে তছনছ হয়েছে কৃষকের স্বপ্ন। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

চট্টগ্রাম : এ মৌসুমে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা। পাশাপাশি আমন চারা নিয়েও দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে কৃষকের মাঝে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপপরিচালক ড. অরবিন্দ কুমার রায় বলেন, টানা বর্ষণে সৃষ্টি হওয়া বন্যায় কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। চট্টগ্রামের ৫টি জেলা ৫০ হাজার ৮১৮ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দন্ডায়মান আছে ৩ লাখ ৫ হাজার ৫৯২ হেক্টর জমির ফসর। প্রাথমিক জরিপে এ তথ্য পেয়েছি, তবে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। চূড়ান্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর বলতে পারব ক্ষতিগ্রস্ত জমির পরিমাণ ও টাকার অংক।

সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যার পানি অনেক স্থানে নামতে শুরু করেছে। বিশেষ করে দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়া, লোহাগাড়া ও চন্দনাইশ উপজেলার প্লাবিত এলাকা এখন অনেকটা শঙ্কামুক্ত। তবে বাড়িঘরে পানি নামলেও এখনো বন্যার ভয়ঙ্কর স্মৃতি বেয়ে বেড়াচ্ছেন প্লাবিত এলাকার লোকজন।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, প্রায় সব উপজেলায় এখন পানি নামতে শুরু করেছে। চন্দনাইশ, সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া উপজেলার প্লাবিত ঘরবাড়িতে এখন পানি নেই। তবে খাল বিল নালায় পানি আছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও বেশ কদিন লাগবে। এদিকে প্লাবিত এলাকায় ময়লা আবর্জনার কারণে দূষিত পানিতে রোগ-বালাই বাড়ার আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা। দূষিত পানির কারণে ডায়রিয়া, কলেরা, টাইফয়েড রোগীর সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি চর্মরোগসহ পানিবাহী রোগী বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। রাঙামাটি : দুর্ভোগ দুর্দশা কমছেই না রাঙামাটির বানবাসীর। একদিকে পনিবন্দি জীবন, অন্যদিকে খাদ্য সংকট। দেখা দিয়েছে পানিবাহিত রোগও। অন্যদিকে পানি কমেছে বিলাইছড়ি উপজেলার বেশকিছু ইউনিয়নের। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গেল দুই সপ্তাহ ধরে পানিবন্দি আছে রাঙামাটির ৫টি উপজেলার বেশ কিছু ইউনিয়ন। মানবেতর জীবনযাপন করছেন অর্ধ লাখ পানিবন্দি মানুষ। নেই খাবার ও খাবার পানি। চিকিৎসাব্যবস্থায়ও নেই কোনো সহায়তা। চরম দুর্ভোগে জীবন কাটছে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি, জুরাছড়ি, বরকল, বিলাইছড়ি, লংগদু ও রাজস্থলী উপজেলাবাসীর। বগুড়া : সারিয়াকান্দিতে যমুনা নদীর পানি আবারও বাড়তে শুরু করেছে। পানি বৃদ্ধিতে নতুন করে ভাঙন শুরু হয়েছে। আতঙ্কিত রয়েছেন এলাকাবাসী। ভাঙনকবলিত এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। পুনরায় যমুনার পানি বৃদ্ধিতে যমুনা চরের মানুষ আবারও তাদের গৃহপালিত পশুপাখি, পরিবারের প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র নিয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ, কোনো উঁচু স্থানে অথবা বন্যা আশ্রয়ন কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়ার প্রস্তুতি গ্রহণ করা শুরু করে দিয়েছেন। এরইমধ্যে যমুনা চরের নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। বেশকিছু চরাঞ্চলের মানুষ পানিবন্দি হতে শুরু করেছেন। পানি বৃদ্ধিতে উপজেলার কামালপুর ইউনিয়নের ইছামারা গ্রামের যমুনা নদীর ডানতীরে নতুন করে ভাঙন শুরু হয়েছে। গত কয়েক মাস আগে এ গ্রামের ৫০ মিটার এলাকার ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। বগুড়া জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক জানান, উজানে ভারি বৃষ্টি এবং পাহাড়ি ঢলের কারণে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আরও ৫ দিন বৃদ্ধি পেয়ে পানি পুনরায় স্থিতিশীল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফেনী : ফুলগাজী ও পরশুরামের বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। লোকালয় থেকে নেমে গেছে পানি। তবে পানি রেখে গেছে ক্ষতচিহ্ন। পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে ভেসে উঠছে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সকালে মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ২৯০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। ফেনী-পরশুরাম আঞ্চলিক মহাসড়ক থেকে পানি নেমে যাওয়ায় বর্তমানে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

ফেনী জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার বলেন, ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের কাজ চলছে। বন্যায় ফুলগাজী উপজেলার ৮৫০ পরিবার ও পরশুরামের ৫০০ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সর্বশেষ খবর