শিরোনাম
রবিবার, ১৩ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

শতবর্ষে কালীঘাট পোস্ট অফিস

দীপংকর ভট্টাচার্য লিটন, শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার)

শতবর্ষে কালীঘাট পোস্ট অফিস

শতবর্ষে কালীঘাট পোস্ট অফিস। চলতি বছর এই পোস্ট অফিসটি প্রতিষ্ঠার ১০০ বছর পূর্ণ হয়েছে। ১৯২৩ সালে উপজেলার কালীঘাট চা বাগানে এই পোস্ট অফিস প্রতিষ্ঠা করা হয়। নাম দেওয়া হয় কালীঘাট পোস্ট অফিস।

শ্রীমঙ্গল প্রধান ডাকঘরের পোস্ট মাস্টার (ভারপ্রাপ্ত) মো. আবদুল মতিন জানান, কালীঘাট পোস্ট অফিস চা শিল্পাঞ্চলের প্রথম পোস্ট অফিস হিসেবে আলাদা এক মর্যাদা রয়েছে। এটি শতবর্ষের ঐতিহ্য নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এই পোস্ট অফিসে এখন আর আগের মতো চিঠিপত্র আসে না।

বর্তমানে এই পোস্ট অফিসে চিঠিপত্র আসে না বললেই চলে। তবুও প্রতিদিন খুলে রাখা হয়। এখানে রাজস্ব খাতে তুষার কান্তি দত্ত নামে একজন সাব পোস্ট মাস্টার এবং এক্সটা ডিপার্টমেন্ট খাতে স্বপন তাঁতী নামের এক পোস্টম্যান রয়েছেন। সময় সময় টিনের তৈরি পোস্ট অফিসটি লাল রং করে রাখা হয়। তুষার কান্তি দত্ত বলেন, এখন গড়ে প্রতিদিন ১০টি চিঠি আসে। মাসে ১৫-২০টি পোস্ট হয়। সবই বাগানের চিঠি। স্থানীয়রা পোস্ট অফিসে আসেন না। তিনি বলেন, চা বাগানে ঘুরতে আসা মানুষ এই পোস্ট অফিসের ছবি তুলে নেন। জানা যায়, এটিই চা শিল্পাঞ্চলের প্রথম পোস্ট অফিস। সেই সময় এ অঞ্চলের চা বাগানের মালিক ছিল ব্রিটিশ কোম্পানি। বাগান ব্যবস্থাপনায় ছিলেন ব্রিটিশ সাহেবরা। তারা থাকতেন বাগানের বাংলোতে। চা বাগানে শ্রমিকের কাজ করানোর জন্য ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে মানুষ আনা হয়েছিল। তখন এ অঞ্চল ছিল ত্রিপুরা রাজার অধীনে। সেই সময় এই পোস্ট অফিসটি ছিল চা বাগানে পত্র  যোগাযোগের একমাত্র ভরসা। তৎকালীন কালীঘাট চা বাগানে বসবাসকারী স্থানীয় সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব বুলবুল আনাম বলেন, মূলত চা বাগানকে কেন্দ্র করেই এই পোস্ট অফিস করা হয়েছিল। তখন এই পোস্ট অফিস থেকে এক আনা দুই আনা দিয়ে পোস্ট কার্ডে লিখে টেলিগ্রাম পাঠানো হতো। প্রথম প্রথম ইংলিশ সাহেবরা তাদের পরিবার পরিজনের সঙ্গে টেলিগ্রাম পাঠিয়ে যোগাযোগ করতেন। পরে আস্তে আস্তে এই পোস্ট অফিসের সুবিধা ভোগ করতে থাকেন বাগানে বসবাস করা অন্যরাও। তখন এই পোস্ট অফিসে পোস্ট মাস্টার ছিলেন একজন বিহারি। তবে ১৯৬০ সালে মজুমদার নামে একজন বাঙালি পোস্ট মাস্টার দেওয়া হয়েছিল। স্বাধীনতার পর এ অঞ্চলে মানুষজনের বসতি বেড়ে যাওয়ায় এই পোস্ট অফিসটির কার্যক্রমও বেড়ে যায়।

সর্বশেষ খবর