বিএনপির শাসনামলে সারা দেশে জেএমবির সিরিজ বোমা হামলা বিএনপি নেতা তারেক রহমানের পরিচালনায় হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, যে জেএমবি সিরিজ বোমা হামলা চালিয়েছে, তাদের বিশ্বস্ত পৃষ্ঠপোষক বিএনপি। সে সময় জেএমবিকে দিয়ে সিরিজ বোমা হামলা পরিচালনা করেছিল তারেক রহমান। এ সত্য আর কত দিন গোপন রাখবেন?

গতকাল বিকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, বিএনপির পাঁচজনের রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা নাকচ করে দিয়েছে কানাডার আদালত। সেখানকার আদালত বলেছে, ‘এ দল সন্ত্রাসী দল। এ দল একটা গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করার জন্য জোরপূর্বক অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এদের রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়া যায় না।’ তিনি বলেন, এটা আমাদের কথা না। ফখরুল কি এটা জানে না, মার্কিন হোম সিকিউরিটি তিনজনের রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা অগ্রাহ্য করেছে। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সারা দেশে একযোগে সিরিজ বোমা হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত এ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান। আরও বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, ঢাকা দক্ষিণের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি, নুরুল আমিন রুহুল, ডা. দিলীপ রায়, মোর্শেদ হোসেন কামাল, মহিউদ্দিন মহি, আকতার হোসেন, আজিজুল হক রানা, রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ প্রমুখ। ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তাদের অভিযোগ- আওয়ামী লীগ নাকি জিয়া পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করার ষড়যযন্ত্র করছে! যাদের চক্ষুলজ্জা নেই, দিনের আলোতে সবার সামনে তারাই এমন কথা বলতে পারে। ফখরুল ভুলে গেছেন ইতিহাস, ১৫ আগস্ট? তখন কি আপনার জন্ম হয়নি? বিবেক বুদ্ধি ছিল না? শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা বেঁচে গেছেন, পুরো বঙ্গবন্ধু পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করেছে। লাশে ভেসে গিয়েছিল ধানমন্ডির ৩২ নম্বর। সেই রক্ত বিএনপি অনুসারীদের হাতে। কারাগারে চার নেতাকে শেষ করে দিলেন। কে এসবের মাস্টারমাইন্ড? জিয়াউর রহমান। অস্বীকার করতে পারবেন?’ তিনি আরও বলেন,‘ জিয়াউর রহমানের ধারাবাহিকতায় ২১ আগস্টের মাস্টারমাইন্ড তার সন্তান। যে আজকে মুচলেকা দিয়ে পালিয়ে গেছে। দি ত আসামি, অর্থ পাচারকারী, দুর্নীতিবাজ, হাওয়া ভবনের লুটেরা যুবরাজ তারেক রহমান। শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করেছ। জয়কে হত্যা করার চেষ্টা করেছ। তোমরাই বঙ্গবন্ধু পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছ। খালেদা জিয়া এখন জেলের বাইরে আছেন কার দয়ায়? শেখ হাসিনার। বিএনপির কর্মসূচির সমালোচনা করে সেতুমন্ত্রী বলেন, সমাবেশের নামে কোটি কোটি টাকা খরচ করে। টাকা-পয়সা দিয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে লোক এনে পিকনিক পার্টির ব্যবস্থা করেন মির্জা ফখরুল। এ টাকার উৎস কোথায়? আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির আন্দোলনের একদফা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অন্ধকার গর্তের মধ্যে পড়ে গেছে। ফখরুল সাহেবকে বলি দলবল নিয়ে পাকিস্তানে চলে যান। সেখানে তত্ত্বাবধায়ক পাবেন। পৃথিবীর আর কোনো দেশে তত্ত্বাবধায়কের হদিস নেই, খবর নেই। আছে পাকিস্তানে, আপনাদের পেয়ারে পাকিস্তানে, সেখানে চলে যান। তিনি বলেন, এ দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আদালত কবর দিয়েছেন। এ ভূত মাথা থেকে নামান। তত্ত্বাবধায়ক ছেড়ে নির্বাচনের পথে আসুন। না হলে আমও যাবে ছালাও যাবে। মুখে স্লোগান দিয়ে শেখ হাসিনার সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা যাবে না। সমাবেশে ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, আপনারা (আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা) অতীতে জীবন বাজি রেখে আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন। সন্ত্রাসীদের মোকাবিলা করেছেন। আসুন আজ আবার শপথ নেই, এই সন্ত্রাসীদের, জঙ্গিদের, স্বাধীনতার শত্রুদের বাংলাদেশের মাটি থেকে উৎপাটন করব। মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম বলেন, এ আগস্ট মাসে আমাদের শপথ নিতে হবে শেখ হাসিনাকে আবারও প্রধানমন্ত্রী করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব। সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। প্রতিটি কর্মসূচি সফল করতে হবে। নির্বাচনের আগের দিন পর্যন্ত আমরা রাজপথে থাকব। মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার বাংলাদেশকে একটি জঙ্গিবাদী রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেয়েছিল। দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলা তার প্রমাণ। জঙ্গি তাদের সৃষ্টি। জঙ্গিদের গ্রেফতার করায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম ব্যথিত হয়েছেন। আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, বিএনপি-জামায়াত আবারও ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। তাদের সঙ্গে জঙ্গিবাদ মিশে আছে। জঙ্গিবাদ রুখতে হলে বিএনপি-জামায়াতকে রুখতে হবে। মির্জা আজম বলেন, জামায়াত ও জঙ্গিরা তারেক রহমানকে কথা দিয়েছিল আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করে দেবে। সে জন্য তারা একযোগে সারা দেশে বোমা হামলা করে। বিএনপি-জামায়াতে জঙ্গিদের সঙ্গে নিয়ে আবার দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র শুরু করেছে।