শোকের মাসেই কমিটি বিলুপ্তির দাবিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগ অনির্দিষ্টকালের জন্য আন্দোলন শুরু করেছে। আন্দোলনের অংশ হিসেবে প্রধান ফটকে তালা এবং শাটল অবরুদ্ধ করেছে। আন্দোলনকারীরা উপগ্রুপ বিজয় ও ভিএক্সের (ভার্সিটি এক্সপ্রেস) অনুসারী। এ সময় ‘দাবি মোদের একটাই, নতুন করে কমিটি চাই’ এবং ‘অবৈধ কমিটি নিপাত যাক, ছাত্রলীগ মুক্তিপাক’ স্লোগানে দাবি তোলেন তারা।

গতকাল বিকাল ৪টায় তালা লাগিয়েছে বর্তমান কমিটি বিলুপ্তির দাবিতে। বর্তমান কমিটি ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই রেজাউল হক রুবেলকে সভাপতি ও ইকবাল হোসেন টিপুকে সাধারণ সম্পাদক করে ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ; যা চার বছর ধরে চলছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ কমিটি পূর্ণাঙ্গ করে কেন্দ্রীয় দফতরে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দুই সদস্যের কমিটিই তিন বছর পার করে দেয়। যদিও কমিটির মেয়াদ এক বছর। আর তিন বছর পর এসে গত বছরের আগস্টে ৩৭৫ সদস্য দিয়ে কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হয়। তবে এর পরের দিনই ঘোষিত কমিটিতে পদবাণিজ্য ও অছাত্রদের রাখার অভিযোগ এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করে ছাত্রলীগের বিভিন্ন গ্রুপ। শাটল অবরুদ্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। বিকাল ৪টার শাটলে টিউশন অথবা ক্লান্ত শরীরে শহরের পথ ধরেন শিক্ষার্থীরা। তবে শাটল আটকে থাকায় বিপাকে পড়েছেন তারা। এ নিয়ে শহরগামী শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ কায়সার বলেন, ক্লাস শেষ করে তাড়াতাড়ি ৪টার শাটল ধরতে হাজির হলাম স্টেশনে। কিন্তু চলছে আন্দোলন। এখন সন্ধ্যার টিউশনটাও হয়তো মিস হবে। বাসে যেতে সময় লাগে বেশি। এ বিষয়ে আন্দোলনকারী শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও ভিএক্স গ্রুপের নেতা প্রদীপ চক্রবর্তী দুর্জয় বলেন, আমরা শাখা ছাত্রলীগের সভাপতিকে আরও আগেই ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছি। এ কমিটি শুরু থেকে নানাভাবে বিতর্কিত। এর মধ্যে ছাত্রদলের লোকজন ক্যাম্পাসে এসে মিছিল করে গেছে অথচ শাখা ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতারা এর বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীন আখতার বলেন, ছাত্রলীগের ফটকে তালা দেওয়ার সঙ্গে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট কোনো বিষয় নেই। তারা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য ফটকে তালা দিয়েছে। আমি প্রক্টরকে বলেছি। আশা করছি দ্রুত সময়ে বিষয়টি সমাধান হবে। এ ব্যাপারে জানতে প্রক্টর ড. নুরুল আজিম সিকদারকে কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি। সরেজমিন দেখা গেছে, কর্মীরা গেটের সামনে আগুন জ্বালিয়ে দিয়ে অবস্থান করছে। যদিও প্রধান ফটকে তালা দিলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত আছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের।