শনিবার, ১৯ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

যোগদানের অপেক্ষায় ৩২ হাজার শিক্ষক

নিয়োগ সুপারিশের ৫ মাস পার

আকতারুজ্জামান

সারা দেশের বেসরকারি স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক সংকট পূরণ করতে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল গত বছরের ডিসেম্বরে। চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে চাকরিপ্রার্থীরা আবেদন করলে ফল প্রকাশ করা হয় গত মার্চে। ফলাফলে ৩২ হাজার ৪৩৮ জন চাকরিপ্রার্থীকে নিয়োগে সুপারিশের লক্ষ্যে প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত করা হয়। প্রার্থী চূড়ান্ত করার পর প্রায় পাঁচ মাস পার হলেও উত্তীর্ণ এসব প্রার্থীকে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের কোনো খবর নেই। ফলে স্কুল-কলেজগুলোয় শিক্ষক সংকট নিয়েই চলছে একাডেমিক কার্যক্রম। খণ্ডকালীন শিক্ষক নিয়ে কোনোভাবে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নিচ্ছে এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। এনটিআরসিএর মাধ্যমে দীর্ঘ সময় নিয়োগ না হওয়ায় প্রায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠানেই শিক্ষকের শূন্য পদ রয়েছে, যা প্রভাব ফেলছে পুরো শিক্ষাব্যবস্থার ওপর। নিয়োগের জন্য প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত হওয়া প্রার্থীদের যোগদান বিলম্বিত হওয়ায় পারিবারিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন চাকরিপ্রার্থী তরুণ-তরুণীরা। এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৬৮ হাজার ৩৯০টি শূন্যপদ পূরণের লক্ষ্যে গত ডিসেম্বরে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল এনটিআরসিএ। গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত এতে আবেদন করেন নিবন্ধনধারী চাকরিপ্রার্থীরা। মার্চে ফল প্রকাশের পর গত ২৭ এপ্রিল থেকে ৩১ মে পর্যন্ত এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষ প্রাথমিকভাবে সুপারিশপ্রাপ্ত প্রার্থীদের প্রথমবারের মতো অনলাইনে পুলিশ ভেরিফিকেশন ফরম (ভি-রোল) পূরণের নির্দেশ দেয়। এরপর দফায় দফায় ভি-রোল ফরম পূরণের সময় বাড়ানো হয়। সর্বশেষ গত ১০ আগস্ট পর্যন্ত ভি-রোল ফরম অনলাইনে প্রেরণের নির্দেশনা দেয় শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ(এনটিআরসিএ)। গত ২১ মে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষ ষষ্ঠ থেকে ১১তম নিবন্ধনধারী ও নিয়োগের জন্য প্রাথমিক সুপারিশপ্রাপ্ত সব চাকারিপ্রার্থীকে এনটিআরসিএ অফিসে এসে নিবন্ধন সার্টিফিকেটের হার্ডকপি জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেয়। এ প্রক্রিয়া চলে গত ২৬ জুন পর্যন্ত। এসব নানা প্রক্রিয়ায় বিলম্বিত হয় চাকরিপ্রার্থীদের চূড়ান্তভাবে সুপারিশ প্রক্রিয়া। এতে প্রার্থীরা হতাশা প্রকাশ করেছেন। চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে প্রাথমিকভাবে নিয়োগের সুপারিশপ্রাপ্ত চাকরিপ্রার্থী মাজেদুল ইসলাম বলেন, নিয়োগের জন্য সুপারিশপ্রাপ্ত হয়ে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক হিসেবে যোগদানের অপেক্ষায় রয়েছি। যোগদান বিলম্বিত হওয়ায় পারিবারিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি আমরা। তাই অবিলম্বে নিয়োগের সুপারিশ করে সারা দেশে শিক্ষক সংকট দূর করার পাশাপাশি আমাদের সামাজিক মর্যাদা দেওয়ার দাবি জানাই। চাকরিপ্রার্থীদের চূড়ান্ত সুপারিশ বিলম্বিত হওয়ার ব্যাপারে এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান মো. এনামুল কাদের খান বলেন, প্রার্থীদের পুলিশ ভেরিফিকেশন কার্যক্রম এখনো শেষ হয়নি। পুলিশ ভেরিফিকেশন চলাকালীন তাদের নিয়োগের জন্য চূড়ান্ত সুপারিশ করা যাবে কি না- এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের একটি অনুমতি নেব। কিন্তু একটি মামলা রয়েছে গণবিজ্ঞপ্তির এ ফলাফল নিয়ে। মামলার কারণে মন্ত্রণালয়ে এখনো চিঠি দেওয়া হয়নি। সরকার অনুমোদন দিলে এ চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া যাবে।

সর্বশেষ খবর