শনিবার, ১৯ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা
চট্টগ্রামে ডোপ টেস্ট

পেশাদার লাইসেন্স আবেদনকারীদের মিলছে মাদক

ইমরান এমি, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্তি নিয়ে গতিহীনতা তৈরি হয়েছে। একদিকে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) দৈনিক ২ শতাধিক ডোপ টেস্টের আবেদন পড়লেও পরীক্ষা করাতে পারছে মাত্র ১৫০টি। অন্যদিকে লাইসেন্সপ্রত্যাশীদের বাকি আবেদনগুলো জমতে জমতে দীর্ঘ হচ্ছে। একই সঙ্গে লাইসেন্স প্রার্থীদের মধ্যে মাদকাসক্তের সংখ্যাও উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে।

বিআরটিএ সূত্রে জানা গেছে, পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স আবেদনকারীদের ডোপ টেস্টে অধিকাংশের রিপোর্টই পজিটিভ এসেছে। ফলে তারা লাইসেন্স পাচ্ছেন না। এ পর্যন্ত অপেক্ষমাণ রয়েছে ৮ হাজার ৩৪৭টি। অন্যদিকে চট্টগ্রামের তিনটি হাসপাতাল মিলে দৈনিক ডোপ টেস্টের পরীক্ষা গ্রহণ করা হয় ১৫০টি। এতে করে লাইসেন্স আবেদনকারীদের দুর্ভোগ ও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। বর্তমানে ডোপ টেস্ট অপেক্ষমাণ রয়েছে ৮ হাজার ৩৪৭টি। যার মধ্যে চট্টগ্রাম মেট্রোতে ৫ হাজার ৭টি এবং জেলাতে ৩ হাজার ৩৪০টি। এসবের মধ্যে রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে ২ হাজার ১৪৯টি। যার মধ্যে চট্টগ্রাম মেট্রোতে ৬৪৮টি এবং জেলাতে ৪৮১টি। এসব প্রার্থীদের রিপোর্ট নেগেটিভ না আসা পর্যন্ত লাইসেন্স পাবেন না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিআরটিএ’র লাইসেন্স শাখার সহকারী পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার ওমর ফারুক বলেন, ‘আমরা নিয়মিত ডোপ টেস্টের কাগজ ইস্যু করলেও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিআইটিআইডি ও জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দৈনিক ১৫০টির বেশি রিপোর্ট দিতে পারছে না। প্রতিটি সভায় আমরা বিষয়টি অবগত করছি। তাছাড়াও ডোপ টেস্টের রিপোর্টের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য আমরা স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালককে বেশ কয়েকবার আবেদন করেছি।’ জানা গেছে, বিআরটিএ চট্টগ্রামে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করে বিপাকে পড়েছেন মাদকাসক্ত ড্রাইভারেরা। মাদক সেবনের ফলে ডোপটেস্টে তাদের রিপোর্ট পজিটিভ আসছে। এর মধ্যে যাদের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে তারা সবাই পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছেন। এসব আবেদনকারীর মধ্যে ডোপ টেস্ট রিপোর্টে ক্যানবিনয়েডস পজিটিভ পাওয়া যাচ্ছে। রিপোর্টে ক্যানবিনয়েডস বা মদ, গাঁজা, বিয়ারের উপস্থিতি পাওয়া যাচ্ছে। শুধু গত জুলাই মাসেই চট্টগ্রাম জেলা ও মেট্রোর ১ হাজার ১২৯ জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। আরও জানা গেছে, মাদকাসক্ত অবস্থায় গাড়ি চালানো বন্ধ করতে পেশাদার গাড়ি চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে লাগছে ডোপ টেস্টের সনদ। এ সনদ ছাড়া চালকরা নতুন লাইসেন্স ও পুরনো লাইসেন্স নবায়ন করতে পারবেন না। এ জন্য পেশাদার চালকরা বিআরটিএ কার্যালয় থেকে টেস্টের আবেদন ইস্যু করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেনারেল হাসপাতাল ও বিআইটিআইডিতে নিয়ে যাচ্ছেন। সেখান থেকে টেস্ট করানোর রিপোর্ট নেগেটিভ আসলে পরবর্তী কার্যক্রম করা সম্ভব হচ্ছে। এখন বিআরটিএ থেকে ডোপ টেস্ট ফরম নিয়ে যারা চমেক হাসপাতাল, বিআইটিআইডি ও জেনারেল হাসপাতালে যাচ্ছেন, তাদের রিপোর্ট পেতে দুই মাসের অধিক সময় লাগছে। এ ছাড়া টেস্টের রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে বিআরটিএ থেকেও কর্মকর্তারা নির্দিষ্ট সময় পর পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন পাঠাচ্ছেন।

সর্বশেষ খবর