সোমবার, ২১ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

ছাত্রদলের সেই ছয় নেতাসহ গ্রেফতার ১৮

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর লালবাগ থেকে নিখোঁজ ছাত্রদলের ছয় নেতাসহ বিএনপির ১৮ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তাদের মধ্যে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদের ছেলে তানভীর আহমেদ রবিনসহ ১২ জনকে নাইটিঙ্গেল মোড় ও বিএনপি কার্যালয়ের আশপাশের এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। গতকাল ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান যুগ্ম-পুলিশ কমিশনার (সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম ও ডিবি-উত্তর) খোন্দকার নুরুন্নবী। বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব রবিন ছাড়া শনিবার রাতে গ্রেফতার বাকি ১১ জনের নাম সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশ করা হয়নি। তবে গ্রেফতার ১৮ জনের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে দুটি মামলা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে।

ছাত্রদলের গ্রেফতার ছয় নেতা হলেন- ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মমিনুল ইসলাম ওরফে জিসান, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আরিফ বিল্লাহ, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফ বিল্লাহ, ছাত্রদলের ঢাবি শাখার সহসভাপতি মো. হাসানুর রহমান ওরফে হাসান, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সহসাংগঠনিক সম্পাদক মো. শাহাদত হোসেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর এবং ঢাবি শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল্লাহ আল রিয়াদ। তাদের কাছ থেকে তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৩৬ রাউন্ড গুলি জব্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ডিবি। এদিকে, গ্রেফতার ছয় ছাত্রদল নেতার মধ্যে দুজনের অস্ত্র মামলায় দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় অন্য চারজনকে জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গতকাল ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলামের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। এর আগে, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের গুলশান জোনের এসআই মো. আসাদুজ্জামান আসামিদের আদালতে হাজির করেন। এদের মধ্যে মমিনুল ইসলাম ও আরিফ বিল্লাহকে লালবাগ থানায় করা অস্ত্র মামলায় গ্রেফতার দেখানোসহ পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। একই থানায় করা বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় অপর চার আসামিকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করা হয়। ডিবি কর্মকর্তা খোন্দকার নুরুন্নবী বলেন, টেকনাফ ও পাবনা থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি সংগ্রহ করে মজুদ করে ছাত্রদলের ছয় নেতা। আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এসব আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে নাশকতামূলক ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের মাধ্যমে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার পরিকল্পনা ছিল তাদের। আর সেই পরিকল্পনা বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশেই করা হয়। তবে এর আগেই ডিবির হাতে ধরা পড়ে যায় ছাত্রদলের শীর্ষ এই ছয় নেতা। বিএনপি ও ছাত্রদলের হাইকমান্ডের নির্দেশে রাজপথে দলের শক্তি বাড়াতে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের মহড়া-প্রদর্শনের মাধ্যমে জনমনে ভীতি এবং আতঙ্ক সৃষ্টি করে অন্তর্ঘাতমূলক কাজ করে বর্তমান সরকারকে অস্থিতিশীল করার পরিকল্পনায় তারা ওই স্থানে অবস্থান করছিল। গ্রেফতারদের মোবাইল জব্দ করে তাদের মোবাইলে বিভিন্ন অস্ত্র ও জব্দ হওয়া অস্ত্রের ছবি পাওয়া গেছে। তারা একটি অস্ত্র টেকনাফ থেকে আর দুটি অস্ত্র পাবনা থেকে সংগ্রহ করে। যারা অস্ত্র সাপ্লাই দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধেও আমাদের অভিযান চলছে। বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, শুক্রবার ছাত্রদলের ছয় নেতাকে ডিবি তুলে নিয়ে গেছে। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ডিবি কর্মকর্তা নুরুন্নবী বলেন, মামলার এজাহারে যেভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, সেভাবেই আমরা তাদের গ্রেফতার করেছি এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়েছি।

সর্বশেষ খবর