বৃহস্পতিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

পাহাড়ি ঢলে তিন পার্বত্য জেলায় ক্ষতি ৩৮৩ কোটি টাকা

১৫ জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত ৮১ হাজার হেক্টর ফসল

শাহেদ আলী ইরশাদ

অতিবৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে সারা দেশের ৮১ হাজার হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশ জমিতে রোপা আমনের চাষ হচ্ছিল। নষ্ট হয়েছে গ্রীষ্মকালীন সবজি, ফসল ও বীজতলাও। চলতি বন্যায় দেশের ক্ষতিগ্রস্ত ১৫টি জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলা। এই তিন পার্বত্য জেলায় ক্ষতি হয়েছে ৩৮৩ কোটি টাকা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। তারা জানায়, গত ৩ থেকে ১৬ আগস্ট পর্যন্ত দেশের ১৫টি জেলার ৮১ হাজার ৬৩৬ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে আউশ ধানের আবাদ হয়েছিল ১২ হাজার হেক্টর জমিতে। রোপা আমন আবাদ হয়েছিল ৪৮ হাজার ৩৯৫ হেক্টর। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৩ হাজার ৫০০ হেক্টর জমির গ্রীষ্মকালীন সবজি ও বীজতলা। চট্টগ্রামের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক (মনিটরিং ও বাস্তবায়ন) মো. আশরাফ উদ্দিন গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্ত ফসলি জমির হিসাব আমরা পেয়েছি। একই সঙ্গে ক্ষতির পরিমাণও নিরূপণ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি জেলা এবং চট্টগ্রামের কয়েকটি উপজেলার। এ ছাড়াও কক্সবাজার, লক্ষ্মীপুর ও ফেনীতে আমন, আউশ ও সবজি খেত নষ্ট হয়েছে। বিষয়টি আমরা সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরকে অবহিত করেছি। চট্টগ্রামের ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. ছাইফুল্লাহ মজুমদার বলেন, চট্টগ্রামে কৃষি খাতের প্রায় ১৮৬ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। প্রাণিসম্পদের ক্ষতি হয়েছে ২৯ কোটি টাকার বেশি। দুই সপ্তাহের পাহাড়ি ঢলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে রাঙামাটি ও বান্দরবান জেলায়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের হিসাবে চট্টগ্রামের ২৭ হাজার হেক্টর ফসলি জমি তলিয়ে গিয়েছিল। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৪ হাজার হেক্টর জমির আমন, ৪ হাজার ৫০০ হেক্টর জমির আউশ, ৩ হাজার ৭০০ হেক্টর জমির আমনের বীজতলা ও ৫ হাজার ১০০ হেক্টর জমির সবজি। পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে ১১ হাজার ৮৯৭ হেক্টর জমির ফসল। নষ্ট হওয়া ফসলের পরিমাণ ১ লাখ ১১ হাজার টন। যার বাজার মূল্য ৩৮৩ কোটি টাকা। আর ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যা ৭১ হাজারের বেশি। এর মধ্যে ২৫ হাজারের বেশি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক বান্দরবান জেলার। রাঙামাটি অঞ্চলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তা তপন কুমার পাল বলেন, রোপা আমন যেটা মাঠে ছিল সেই জমিটা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রোপা আমনের অনেক বীজতলাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কৃষি বিশেষজ্ঞরা যাদের বীজতলা ও ফসল নষ্ট হয়েছে, জরুরি ভিত্তিতে তাদের সার, বীজ ও কীটনাশক দিয়ে সহায়তা করার কথা বলেছেন। তাদের মতে, আগস্টের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত এসব জমিতে পুনরায় ফসল আবাদের সুযোগ রয়েছে। তাই কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উচিত ক্ষয়ক্ষতির তালিকা করে প্রয়োজনীয় সহায়তা করা।

 

সর্বশেষ খবর