শুক্রবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

ফুটল দুর্লভ কাউয়াতুতি

নজরুল মৃধা, রংপুর

ফুটল দুর্লভ কাউয়াতুতি

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ক্যাম্পাসে প্রথমবারের মতো ফুটেছে দুর্লভ প্রজাতির কাউয়াতুতি ফুল। এ ফুল ও ফুলের গাছ আমাদের দেশে দুর্লভ। এ ফুলটি এখন হারিয়ে যাওয়ার তালিকায়। রাতের বেলা ফোটা এ ফুল পরদিন সকালে গাছের তলায় পাওয়া যায়। বেরোবির ক্যাম্পাসে কাউয়াতুতি ফুল ফোটায় খুশি শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও ফুলপ্রেমীরা। যদিও এ ফুলগাছটি একাধিক নামে পরিচিত। যেমন বারপাত্তা, তাকবাম, জংলিসালতি, বনশাল, বনসেগুন, পাহাড়ি হিজল ইত্যাদি।

গাছটি সম্পর্কে জানা গেছে, এর পাতা বড়, ফুলের রং হলুদ। বর্ষায় এ ফুল ফোটে। এ ফুলের গাছ বড় আকারের চিরসবুজ। ছাল অমসৃণ, ধূসর, তাতে লম্বা লম্বা ফাটল রয়েছে। কচি ডাল ও মঞ্জরি বাদামি রোমে ঢাকা। যৌগপত্র একপক্ষল, বিজোড়পত্রী, ৩০ থেকে ৪০ সেন্টিমিটার লম্বা। পাতা ৪ বা ৬টি, বর্শাকার। নিচের দিক রোমশ, প্রায় বোঁটাহীন। ১০ থেকে ২৪ সেন্টিমিটার লম্বা হয়। মূল বোঁটার গোড়ায় প্রায়ই এক জোড়া ছোট পাতা দেখা যায়। ডালের আগায় শাখা বিভক্ত, খাড়া রোমশ মঞ্জরি আছে। ফুল বড়, হলুদ-বাদামি রঙের। বৃত্তি ঘণ্টাকৃতি, দেড় সেন্টিমিটার লম্বা, অসম লতি ৩ থেকে ৫টি। পাপড়ির সংখ্যা ৫টি ও সবুজাভ হলুদ।

এ ফুল ফোটার মৌসুম গ্রীষ্ম ও বর্ষা। ফল ৩০ থেকে ৯০ সেন্টিমিটার লম্বা হয়। বেলনাকার, শিরাল ও বাঁকা। বীজ অজস্র পক্ষল, প্রায় দেড় সেন্টিমিটার লম্বা। এটি প্রাকৃতিকভাবে জন্মে। এ গাছের কাঠ হলদে-বাদামি রঙের; বেশ শক্ত, মজবুত ও টেকসই। ঘরের খুঁটিসহ ঘর ও ছোটখাটো সেতু নির্মাণে ব্যবহৃত হয়। এ গাছটিতে ভেজষগুণ রয়েছে। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকরা এর ব্যবহার করেন। বেরোবির ক্যাম্পাসে প্রায় ৪০০ প্রজাতির গাছ রোপণের মূল কারিগর বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ। তিনি এ গাছটি তিন বছর আগে লাগিয়েছিলেন। বাংলাদেশের বিপন্ন এমনকি মহাবিপন্ন অনেক গাছ তিনি রোপণ করেছেন। নিরলস পরিশ্রম আর একাগ্র প্রচেষ্টাতেই তার এ কাজ সম্ভব হয়েছে। এখন এ ক্যাম্পাসে ঢুকলেই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে যে-কারও মন ভরে যায়। ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে চারা সংগ্রহে তুহিন ওয়াদুদকে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। নিসর্গী মোকারম হোসেন তাঁকে দুর্লভ গাছ সংগ্রহ করে দিতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছেন।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর