শুক্রবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

চীন পাকিস্তান আফগানিস্তানে ট্রানজিট বাংলাদেশের

♦ ব্যবহার হবে ভারতের ভূখণ্ড ♦ সেপ্টেম্বরে দিল্লি সফরে প্রস্তাব দেবেন প্রধানমন্ত্রী

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভুটানকে নিয়ে চারদেশীয় আঞ্চলিক ট্রানজিটের (বিবিআইএন) পরিসর আরও বাড়িয়ে এখন বাণিজ্যিক ট্রানজিটে যেতে চাইছে সরকার। সম্প্রসারণমূলক এই ট্রানজিট সুবিধায় চীন, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানকে যুক্ত করার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। বাংলাদেশ চাইছে ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে এই দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ সম্পর্ক (কানেক্টিভিটি) গড়ে তুলতে। সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন ভারত সফর করবেন, তখন তিনি দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে তাঁর দেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে এই তিন দেশে ট্রানজিট সুবিধার প্রস্তাব দিতে পারেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, ২২ আগস্ট ট্রানজিট বিষয়ে সরকারের করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের নেতৃত্বে একটি আন্তমন্ত্রণালয় সভা হয়। ওই সভায় সরকারের একজন যুগ্ম সচিবের নেতৃত্বে কমিটি গঠনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই কমিটি নেপাল, ভুটান ছাড়াও ভারতের ভিতর দিয়ে চীন, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সঙ্গে কার্যকর যোগাযোগ সম্পর্ক গড়ে তোলার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখবেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো আরও জানাচ্ছে, ২০১৫ সালে করা বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য চুক্তির আওতায় দুটি দেশ একে অপরের ভূখণ্ড ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে ট্রানজিট সুবিধা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। এই চুক্তি অনুযায়ী ভারত এরই মধ্যে চট্টগ্রাম ও মোংলা সমুদ্রবন্দর ব্যবহারের সুযোগ পেয়েছে। নেপাল ও ভুটানে ট্রানজিটের জন্য বাংলাদেশকে একই ধরনের সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। তবে বাংলাদেশ চাইছে, যাদের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত রয়েছে- সেসব দেশের সঙ্গেই অন্তত একটি রুটে কার্যকর যোগাযোগ গড়ে তুলতে।

সূত্র জানায়, ২০১৫ সালের বাণিজ্য চুক্তি অনুসারে ভারত সড়ক, রেল ও নৌ-পথে ট্রানশিপম্যান্টের আওতায় বাংলাদেশকে তিনটি রুটে তৃতীয় দেশে পণ্য রপ্তানির প্রস্তাব দিয়েছিল। এগুলো হচ্ছে : (১) হিমাগড় এলসি স্টেশন, কলকাতা অথবা হলদিয়া সমুদ্রবন্দর দিয়ে ঢুকে মুম্বাইয়ের নাভা অথবা মান্দ্রা হয়ে তৃতীয় দেশ; (২) পেট্রাপোল এলসি স্টেশন অথবা কলকাতা বিমানবন্দর দিয়ে ঢুকে মুম্বাইয়ের নাভা সেভা হয়ে সড়কপথে তৃতীয় দেশে এবং (৩) পেট্রাপোল অথবা গেদে এলসি স্টেশন দিয়ে ঢুকে রেলপথে মুম্বাই হয়ে তৃতীয় দেশে। ভারতের প্রস্তাবিত রুট তিনটি ব্যবহার করে কীভাবে চীন, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে বাংলাদেশ বাণিজ্য সম্প্রসারণ করতে পারে- যুগ্ম সচিবের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি তা খতিয়ে দেখবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, আঞ্চলিক ট্রানজিটের ক্ষেত্রে আমরা শুধু ‘বিবিআইএন’ নিয়ে কথা বলছি। চলমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে কার্যকর যোগাযোগ বা কানেক্টিভিটিকে সীমাবদ্ধ রাখার কোনো সুযোগ নেই। বাংলাদেশ-ভারতের বাণিজ্য চুক্তি অনুযায়ী- ভূখ ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে ট্রানজিট নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। সে কারণে বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে- এমন সব দেশেই ট্রানজিট সুবিধা চাইবে। এ ক্ষেত্রে নেপাল, ভুটান ছাড়াও চীন, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে কার্যকর যোগাযোগব্যবস্থা গড়ে তোলার দিকে গুরুত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর