শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২৯ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

হেফাজতে ফের ফাটলের শঙ্কা

দুই গ্রুপ দুই মেরুতে শীর্ষ নেতারা দোটানায়

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

আলোচিত-সমালোচিত সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব চলছে। সংগঠনের কারামুক্ত নেতারা চাইছেন বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের কয়েকজনকে সরিয়ে ওই জায়গায় ‘ত্যাগীদের’ আসীন করতে।

তাতে সফল না হলে তাঁদের লক্ষ্য : হেফাজতের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত করিয়ে নতুন কমিটি ঘোষণা। কিন্তু বিপরীত অবস্থানে রয়েছেন কমিটির কিছু নেতা। তাঁদের প্রত্যাশা বর্তমানে যাঁরা বিভিন্ন পদে আছেন তাঁদের অবস্থান ঠিক রেখেই অন্যদের সন্তুষ্ট রাখা। সংগঠনের দুই গ্রুপ দুই মেরুতে অবস্থানের কারণে দোটানায় পড়েছেন শীর্ষ নেতারা। এতে হেফাজতে ফের ফাটলের শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

হেফাজতে ইসলামের যুগ্মমহাসচিব মাওলানা মুহিউদ্দিন রাব্বানী বলেন, ‘১৬ আগস্ট সাবকমিটির পদায়ন ও পদোন্নতি নিয়ে সিদ্ধান্তের বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। আমির-মহাসচিব মিলে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। তার আগেই কোনো সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত নয়।’ নাম প্রকাশ না করার শর্তে হেফাজতের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক এক নেতা বলেন, ‘বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির কয়েকজন নেতার ওপর তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের কোনো আস্থাই নেই। তাঁরা অন্যের স্বার্থ রক্ষায় সংগঠনবিরোধী কাজও করছেন। বর্তমান কমিটি ত্যাগীদের মূল্যায়নের বিষয়ে অনড় অবস্থানে থাকলে হেফাজতে আবার তৃণমূলের ত্যাগী নেতা-কর্মীদের জাগরণ ঘটবে।’

জানা যায়, কারামুক্ত নেতাদের চাপের মুখে ৫ আগস্ট ঢাকায় বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় নেতারা। ওই বৈঠকে ২০২১ সালের ২৫ এপ্রিল হেফাজতের বিলুপ্ত কমিটির সবাইকে সদস্যভুক্ত করা হয়। একই সঙ্গে নেতাদের পদায়নের জন্য ১২ সদস্যের সাবকমিটি গঠন করা হয়। ১৫ আগস্ট ঢাকার ফুলবাড়িয়া রেলওয়ে জামে মসজিদে বৈঠকে বসেন সাবকমিটির সদস্যরা। ওই বৈঠকে সরকারঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মীর ইদরিসসহ কয়েকজন নেতাকে অপসারণ করা হয়। পদোন্নতি দেওয়া হয় কয়েকজনকে। একই সঙ্গে বিগত সময়ে গুরুত্বপূর্ণ পদে ভূমিকা রাখা কয়েকজনকে পদায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ২০১ সদস্যবিশিষ্ট একটি খসড়া কমিটিও করা হয়। কিন্তু সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলনা আজিজুল হক ইসলামী, সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, শাখাওয়াত হোসেন রাজিসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে ঘোর আপত্তি তোলেন সংগঠনে ‘সরকারপন্থি’ হিসেবে পরিচিত কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা। এরপর নতুন মোড় নেয় হেফাজতে ইসলামে। নিজেদের পরিকল্পনামতো কাজ করতে না পারায় ২০২১ সালের ২৬ মার্চ দেশব্যাপী নাশকতার পর আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সাঁড়াশি অভিযানে গ্রেফতার নেতারা চলে যান কঠোর অবস্থানে। এবার তাঁরা বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই কমিটির সদস্যরা আগামী সপ্তাহে ফটিকছড়ির বাবুনগর মাদরাসায় হেফাজত আমির আল্লামা মহিবুল্লাহ বাবুনগরীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবেন। হেফাজতের শীর্ষ নেতৃত্ব তাঁদের দাবি না মানলেও হেফাজতের বিকল্প কেন্দ্রীয় কমিটির ঘোষণা দিতে পারেন। এতে বর্তমান আমির মহিবুল্লাহ বাবুনগরীকে আমির এবং ‘ত্যাগী’দের মধ্য থেকে কাউকে মহাসচিব ও সাংগঠনিক সম্পাদক করে কমিটি ঘোষণার চিন্তাভাবনা চলছে।

সর্বশেষ খবর