শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২৯ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত

নিজস্ব প্রতিবেদক

এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে। মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন তিনি। গতকালও দুবার বৈঠক করেছেন মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা। ওষুধপত্রসহ চিকিৎসা দিয়েছেন। একজন চিকিৎসক জানিয়েছেন, তাঁকে বাসায় নেওয়ার মতো শারীরিক অবস্থা এখনো হয়নি। বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা কখন কী হয়, কেউ বলতে পারে না। তবে হাসপাতালে দীর্ঘ সময় রাখলে নানা রকমের ইনফেকশনেরও ভয় থাকে। সবদিক চিন্তা করেই তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনও একই কথা বলেছেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে হাসপাতাল থেকে বাসায় নেওয়ার মতো শারীরিক পরিস্থিতি এখনো তৈরি হয়নি। তাঁর শারীরিক নানা জটিলতার কিছুটা উন্নতি হলেও সেটাকে ভালো বলা যাবে না। হাসপাতালে তাঁকে আরও নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা প্রয়োজন বলে চিকিৎসকরা মনে করছেন। জানা গেছে, বর্তমানে এভারকেয়ার হাসপাতালের কেবিনে চিকিৎসাধীন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল। বর্তমানে শরীরে জ্বর নেই। আর কিডনির সমস্যা, ডায়াবেটিসসহ অন্য রোগগুলোও ওষুধ দিয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে। আপাতত নতুন কোনো উপসর্গ দেখা দেয়নি বেগম জিয়ার শরীরে। তবে বয়স বিবেচনায় যে কোনো সময় এ অবস্থার পরিবর্তন হতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকরা। ফলে আরও কিছুদিন তাঁকে হাসপাতালে রাখার সিদ্ধান্ত রয়েছে। তবে অবস্থা বুঝে মেডিকেল বোর্ড ব্যবস্থা নেবে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, হার্ট, ফুসফুস, ডায়াবেটিস, কিডনি, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। যে কারণে কয়েক বছর ধরে কিছুদিন পর পর তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।

নাইকো মামলা বাতিলে খালেদার আবেদনের বিষয়ে আদেশ কাল : নাইকো দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল চেয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আবেদনের শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে আদেশের জন্য আগামীকাল বুধবার দিন ঠিক করে দিয়েছেন হাই কোর্ট। গতকাল বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ দিন ঠিক করে দেন। এর আগে অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত ১৭ মে রিভিশন আবেদনটি করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, জয়নুল আবেদীন ও কায়সার কামাল। মামলার বাদী দুদকের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী খুরশীদ আলম খান, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাছান চৌধুরী। যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে এ মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে উল্লেখ করে অভিযোগ গঠনের আদেশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, এ মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে আবেদনে। একই সঙ্গে ১৯ মার্চের অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল চাওয়া হয়েছে।

গত ১৯ মার্চ নাইকো দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯ এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান। ওয়ান-ইলেভেনের সময় ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর কানাডার কোম্পানি নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের বিপুল আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে তেজগাঁও থানায় খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। এ মামলায় তদন্ত শেষে ২০০৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক। অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে সরকারে থাকাকালে খালেদা জিয়াসহ বেশ কয়েকজন ক্ষমতার অপব্যবহার করে কানাডার কোম্পানিটিকে অবৈধভাবে গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের সুবিধা পাইয়ে দেন। অভিযোগপত্রে আসামিদের বিরুদ্ধে প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় আর্থিক ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়। খালেদা জিয়া ছাড়াও মামলার অন্য আসামিরা হলেন- তৎকালীন আইনমন্ত্রী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, তৎকালীন জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, তৎকালীন মুখ্যসচিব কামাল উদ্দীন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউসুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব শফিউর রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল করপোরেশনের চেয়ারম্যান সেলিম ভূঁইয়া এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ। এদের মধ্যে মওদুদ আহমদ, এ কে এম মোশাররফ হোসেন ও মো. শফিউর রহমান মারা যাওয়ায় তাদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

 

সর্বশেষ খবর