মঙ্গলবার, ২৯ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

ইরাকে অপহরণ ভয়ংকর নির্যাতন মুক্তিপণ ঢাকায়

নিজস্ব প্রতিবেদক

ইরাকে মোসলেম মোল্লা (৩০) নামে বাংলাদেশি এক যুবককে নির্যাতন করে ৬ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় আটজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। রবিবার দুপুরে বরিশাল, গাজীপুর, মুন্সীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, মাগুরা ও খুলনা থেকে তাদের গ্রেফতার করে পিবিআই ঢাকা জেলার একটি দল। তারা হলেন আলী হোসেন (৪৯), শামীম (২৫), শিরিন সুলতানা (৩৫), মোহাম্মদ ঘরামী (৫১), রবিউল ঘরামী (২৪), শাহিদা বেগম (৫২), সাহনাজ আক্তার লিপি (৩৮) ও আকবর সরদার (৫৫)।

গতকাল সকালে রাজধানীর ধানমন্ডিতে পিবিআই সদর দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়ে ঢাকা জেলা পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মো. কুদরাত-ই-খুদা বলেন, অপহরণকারী চক্রের দলনেতা শাহনেওয়াজ। তার বাড়ি খুলনার ডুমুরিয়ায়। ইরাকে তার চক্রের সদস্যরা হলেন আনোয়ার, শাহনেওয়াজ, রুহুল আমিন, মনির, হাসিবুর ও সাব্বির। তারা ইরাকে অবস্থান করলেও মুক্তিপণের টাকা বিকাশে তাদের পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে আদায় করতেন।

তিনি আরও বলেন, ইরাকের বাগদাদে মোসলেমকে যেখানে আটকে রাখা হয় সেখানে আরও চার বাংলাদেশি ছিলেন। তাদেরও একই কায়দায় নির্যাতন করে মুক্তিপণ আদায় করত শাহনেওয়াজ গং। মোসলেমকে নির্যাতনের দৃশ্য ইমোতে ভিডিওকলের মাধ্যমে তার মাকে দেখানো হতো। পরে মুক্তিপণ হিসেবে ২৬ দফায় ১২ বিকাশ নম্বরে ৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন তারা। টাকা দিলে নির্যাতনের মাত্রা একটু কমাতেন। এর বাইরে মোসলেমের কাছে থাকা ২ হাজার ডলার ও একটি আইফোন ছিনিয়ে নেন। তবে নির্যাতনের চার মাসের মাথায় চার ভুক্তভোগী টর্চার সেল থেকে পালাতে সক্ষম হন। ২০২১ সালে দেশে ফিরে থানায় মামলা করেন মোসলেম। ওই মামলায় এখন পর্যন্ত আটজনকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই।

যেভাবে অপহরণ করা হলো মোসলেমকে : ভুক্তভোগী ইরাকপ্রবাসী মোসলেম নবাবগঞ্জ থানার দড়িকান্দা গ্রামের তোতা মিয়ার ছেলে। ২০১৬ সালে জীবিকার তাগিদে ইরাকে পাড়ি জমান তিনি। এর পর থেকে বিভিন্ন সময় সেখানে নির্যাতনের শিকার হন। শুরু থেকে মোটামুটি ভালো থাকলেও করোনা মহামারির পর থেকে চাকরি হারিয়ে বেকার হয়ে পড়েন। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে সেলিম মিয়া নামে একজনের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। সেলিম ভালো বেতনে কাজের প্রলোভন দেখিয়ে আনোয়ার, শাহনেওয়াজ, রুহুল আমিন, মনির, হাসিবুর ও সাব্বিরের হাতে তুলে দেন মোসলেমকে। তিন দিন ধরে টানা নির্যাতন করে সেই ভিডিও তার মাকে দেখানো হয়। মুক্তিপণ হিসেবে দাবি করা হয় ১১ লাখ টাকা। ছেলের ওপর এমন নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে মা ৬ লাখ টাকা দিতে বাধ্য হন।

সর্বশেষ খবর