মঙ্গলবার, ২৯ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

খাদিজাকে মুক্তির আহ্বান অ্যামনেস্টির

নিজস্ব প্রতিবেদক

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় কারাবন্দি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরার অবিলম্বে মুক্তি চেয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে খাদিজাকে কারাবন্দি রাখার এক বছর পূর্তিতে এ দাবি জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার এই সংস্থার দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক অন্তর্বর্তীকালীন উপ-আঞ্চলিক পরিচালক নাদিয়া রহমান। গতকাল অ্যামনেস্টির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে নাদিয়া রহমান বলেন, বছরব্যাপী কারাভোগ এবং খাদিজার জামিনের আবেদন বারবার প্রত্যাখ্যান বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারের একটি প্রতারণা এবং স্পষ্ট লঙ্ঘন। সমালোচনামূলক কথার জন্য তাকে আটক করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের সিদ্ধান্ত সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ মানবাধিকারকে ক্ষুণ্ন করতে এবং সমালোচক ও অ্যাক্টিভিস্টদের নিপীড়ন করতে আইনটি ব্যবহার করে চলেছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, খাদিজাসহ যারা নির্বিচারে বাংলাদেশে আটক আছেন, তাদের সবাইকে অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। এ ছাড়া খাদিজার মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত তাকে নিয়মিত পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা প্রদান এবং আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন অবস্থায় রাখা উচিত। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, খাদিজাতুল কুবরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ১৭ বছর বয়সী ছাত্রী ছিলেন। তিনি ২০২০ সালের নভেম্বরে ‘হিউম্যানিটি ফর বাংলাদেশ’ নামে সোশ্যাল মিডিয়া পেইজে ক্যাম্পাসের রাজনীতি নিয়ে একটি ওয়েবিনারের আয়োজন করেছিলেন। প্রায় দুই বছর পর ২০২২ সালের ২৭ আগস্ট খাদিজাকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে গ্রেফতার করা হয় এবং পরদিন তাকে ঢাকার কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়। পুলিশ কর্মকর্তারা ইউটিউবে আপলোড করা ওয়েবিনারের একটি রেকর্ডিং দেখেছিলেন, যা একজন অতিথি বক্তা আপলোড করেছিলেন। পূর্বে কানাডায় অবস্থানরত একজন বাংলাদেশি সেনা কর্মকর্তা সরকারের সমালোচনামূলক মন্তব্য করেছিলেন বলে মনে করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর চেষ্টা’ এবং প্রধানমন্ত্রীকে ‘মানহানি’ করার অভিযোগে ডিএসএ’র অধীনে মামলাটি করা হয়। অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনে বলা হয়, এরপর থেকে খাদিজার জামিনের আবেদন বেশ কয়েকবার প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। কিডনি সমস্যাসহ চিকিৎসাজনিত সমস্যা দেখা দেওয়া সত্ত্বেও পরিবার এবং গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে খাদিজাকে চলতি বছরের শুরুতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কয়েদিদের জন্য সংরক্ষিত একটি সেলে স্থানান্তর করা হয়েছিল। ২০২৩ সালের ১০ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ তার জামিন শুনানি চার মাসের জন্য স্থগিত করেন। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল খাদিজার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে সমর্থন জোগাড় করতে এবং তার অবিলম্বে ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে জরুরি পদক্ষেপ নিয়েছে।

 

সর্বশেষ খবর