বুধবার, ৩০ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা
টিসিবির ট্রাক

লাইনে দাঁড়িয়ে দিন পার

রাশেদ হোসাইন

লাইনে দাঁড়িয়ে দিন পার

সরকারি ব্যবস্থাপনায় টিসিবির ট্রাকের মাধ্যমে খোলাবাজারে বিক্রি করা (ওএমএস) পণ্যের চাহিদা সাম্প্রতিক সময়ে অনেক বেড়েছে। বাজারে পণ্যের ঊর্ধ্বগতির মুখে ভিড় বাড়ছে টিসিবির ট্রাকের সামনে। দিনকে দিন উপচেপড়া মানুষের ভিড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন ডিলাররা। অনেক সময় লাইন শেষ হওয়ার আগেই পণ্য শেষ হয়ে যাচ্ছে। সকালের ট্রাক আসে দুপুরে। লম্বা লাইনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষার পর অনেক সময় অনেককে ফিরে যেতে হয় খালি হাতে। ডিলাররা জানান, ট্রাকপ্রতি বরাদ্দ কম থাকায় এতে বিপাকে পড়েন তারা।

সরেজমিন দেখা যায়, প্রচণ্ড গরমের মধ্যে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকার কাজলা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দাঁড়িয়ে আছেন ষাটের ঊর্ধ্ব বয়সী জহুরা বেগম। গুনে দেখা গেল তার সামনে আরও ২৩ জন মানুষ। কিন্তু কেন তারা এখানে দাঁড়িয়ে আছেন বোঝা গেল না। জানতে চাইলে জহুরা বেগম বলেন, ট্রাক থেকে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য কেনার জন্য সবাই দাঁড়িয়ে আছেন। তিনি বলেন, মাঝে মাঝে এখানে দেরি করে আসলে চাল পাওয়া যায় না। তখন এক আইটেম নিতে হয়। প্যাকেজের সব পণ্য থাকলে এক আইটেম কি না যায় না। দুটি মিলে প্যাকেজ নিতে হয়। চালটা আমার বেশি জরুরি। তাই সকাল সকাল এখানে আসা। তখন সকাল ১০টা।

বেলা সাড়ে ১১টার মধ্যেই ট্রাক চলে এলো। হুড়মুড় করে মানুষের ভিড় বেড়ে গেল। কয়েক মিনিটেই প্রায় শ খানেক লোকের সমাগম হলো। বিভিন্ন প্রসেসিং করে বিক্রি শুরু করতে লেগে গেল আরও ২০ মিনিট। প্রচণ্ড গরমের মধ্যে ২ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে ষাটের ঊর্ধ্ব বয়সী জহুরা বেগম অবশেষে পেলেন (ওএমএস) এর প্যাকেজ। ২৭০ টাকার ৫ কেজি চাল ও ৫ কেজি আটার প্যাকেজ। টিসিবির পুরো প্যাকেজ পেয়ে খুব খুশি জহুরা বেগম। ঘামতে ঘামতে তিনি বলেন, ট্রাকের চাল-আটা বাজারের তুলনায় সস্তা। তাই এখান থেকে কেনার চেষ্টা করি। অনেক সময় একটু দেরি করে আসলে আর চাল পাই না। শেষ হয়ে যায়। তখন বাইরে থেকে চড়া মূল্যে কিনতে হয়। চার সদস্যের পরিবারের একমাত্র উপর্জনক্ষম সদস্য জহুরা। তিনটি বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করে মাসে ৭ হাজার টাকা আয় করেন। এর ৪০ শতাংশই বাড়ি ভাড়া পরিশোধে চলে যায়। তাই টিসিবির প্যাকেজ না পেলে বিপদে পড়তে হয় তাকে। জহুরা বেগমের মতো আরও অনেক দরিদ্র এবং নিম্নআয়ের মানুষ ভর্তুকি মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে লাইনে দাঁড়াচ্ছেন প্রতিদিন। লাইনে দাঁড়ানো সাদিক জানান, এখানে সপ্তাহে তিন দিন আসে তাই ভিড় একটু বেশি হয়। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করে পেলাম। তবে অনেক সময় লম্বা লাইনে তিন ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও খালি হাতেও ফিরে যেতে হয়।এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মী জানান, তেজগাঁও থেকে প্রতিদিন ২ টন আটা দেওয়া হয় আর ১ টন চাল দেওয়া হয়। বর্তমানে চালের চাহিদা বেশি রয়েছে তাই চাল তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যায়। অনেক সময় আগের দিনের পণ্যের সঙ্গে পরের দিনের পণ্য যোগ হয়। ট্রাক আসার নির্দিষ্ট সময়ের বিষয়ে তারা বলেন, আমাদের রোটেশন করে দেওয়া হয়। তাই নির্দিষ্ট সময় বলা কঠিন।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর