বৃহস্পতিবার, ৩১ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

ইসিতে পদোন্নতি নিয়ে ক্ষোভ, বদলি আতঙ্ক

গোলাম রাব্বানী

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে তিন স্তরের ৩৩ জনকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পদোন্নতিবঞ্চিতরা। তবে পদ আপগ্রেট না হওয়ায় ২০০৫ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ইসিতে যোগ দেওয়া শতাধিক কর্মকর্তা পদোন্নতিবঞ্চিত হয়েছেন। বারবার পদ আপগ্রেট করার প্রস্তাব সরকারের কাছে পাঠালেও তা আলোর মুখ দেখছে না। প্রধান নির্বাচন কমিশনার মন্ত্রীকে ফোন করেও কোনো কাজ হচ্ছে না। সংসদ নির্বাচনের আগে তাদের পদোন্নতি না হলে আন্দোলনে যাওয়ার চিন্তা করছেন তারা। এবারের পদোন্নতিতে ইসি সচিবালয় ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা কেউ কেউ খুশি হলেও অধিকাংশ কর্মকর্তাই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

আসন্ন সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে মাঠ প্রশাসনকে ঢেলে সাজাচ্ছে সরকার। নির্বাচন কমিশনেও সেই প্রভাব পড়েছে। বিগত কয়েক মাসে দুই শতাধিক কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। সম্প্রতি ইসি সচিবালয়ের দক্ষ কর্মকর্তাদের হঠাৎ হঠাৎ বদলি করার ঘটনায় সচিবালয়জুড়েই বদলি আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেক শাখায় এমন কর্মকর্তাদের দেওয়া হচ্ছে, যারা চাকরিজীবনে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কোনো অভিজ্ঞতাও অর্জন করেননি। ইসির কর্মকর্তারা মনে করছেন, দক্ষদের ইসি সচিবালয়-ছাড়া করলে আসন্ন সংসদ ও উপজেলা নির্বাচনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হুমকির মুখে পড়বে। নির্বাচনের সময় দক্ষ কর্মকর্তা ছাড়া অদক্ষদের দিয়ে নির্বাচনী কাজ সুচারুভাবে করা সম্ভব নয়। অনেক সময় ইসি কর্মকর্তাদের বদলির বিষয় নির্বাচন কমিশনাররাও জানেন না। কার ইশারায় হঠাৎ হঠাৎ বদলি হচ্ছে তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে ইসিতে। এদিকে এবারে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা বা সমমানের পদে ৯ জন, সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা পদে ১১ জন ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বা সমমানের ১৩ জন পদোন্নতি পেয়েছেন; যারা যথাক্রমে চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ গ্রেডভুক্ত হয়েছেন। মঙ্গলবার পদোন্নতি-সংক্রান্ত আলাদা তিনটি প্রজ্ঞাপন জারি করে ইসি সচিবালয়। চতুর্থ গ্রেডে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা পদে পদোন্নতিপ্রাপ্তরা হলেন- উপসচিব মো. মইন উদ্দীন খান, মো. আবদুল হালিম, রাশেদুল ইসলাম এবং জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম ও মো. ইউনুচ আলী। এ ছাড়া চলতি দায়িত্বে থাকা চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান, ঢাকা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম, ময়মনসিংহের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন চৌধুরী এবং বরিশালের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন একই পদে পদোন্নতি পেয়েছেন।

পর্যাপ্ত লোকবল না থাকায় নির্বাচন পরিচালনা এবং ভোটের সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারদের ওপর নির্ভর করতে হয় ইসিকে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগর এলাকায় বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা পর্যায়ে জেলা প্রশাসকদের রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পান। তবে কয়েকটি এলাকায় সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার এবং উপজেলা নির্বাচন অফিসারদেরও সহকারী রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব দেওয়ার নজির রয়েছে। এর আগে একাদশ সংসদ নির্বাচনে ২০১৮ সালের অক্টোবরে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর