বৃহস্পতিবার, ৩১ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

নির্যাতনের কথা বলার ২ ঘণ্টা পর গৃহবধূর লাশ

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

লক্ষ্মীপুরে শ্বশুরবাড়ির নির্যাতনের খবর জানানোর ২ ঘণ্টা পর গৃহবধূ শারমিন আক্তার নূপুরের (১৯) ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, ফার্নিচারের জন্য স্বামী মোহাম্মদ উল্যাহ লিটনসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন হত্যার পর নূপুরের লাশ ঝুলিয়ে রাখেন। পরে তার আট মাস বয়সী সন্তান আবদুল তাকরিমকে নিয়ে সবাই পালিয়ে যান।

গতকাল দুপুরে সদর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের কড়ইতলা গ্রাম থেকে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগে সকাল ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে ঘটনার পরই স্বামী মোহাম্মদ উল্যাহ লিটন, শ্বশুর আবুল হোসেন, শাশুড়ি বাসুরা বেগম, ননদ নয়ন বেগম, কাজলরেখা ও পারভিন আক্তার পালিয়ে যান। নূপুর দিঘলী ইউনিয়নের পূর্ব জামিরতলী গ্রামের ফখরুল ইসলামের মেয়ে। ২০২২ সালের রমজানের দুই দিন আগে দত্তপাড়ার কড়ইতলা গ্রামের ওমানপ্রবাসী লিটনের সঙ্গে পারিবারিকভাবে তার বিয়ে হয়। মৃতের ভাই রাকিব হোসেন রায়হানের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা পাঁচ ভাই। তাদের কোনো বোন ছিল না। দুধের শিশু নূপুরকে তার বাবা-মা পালক নেন। নূপুরের জাতীয় পরিচয়পত্রেও তাদের বাবা-মায়ের নাম ও ঠিকানা একই। নূপুরকে কখনো তারা পালক হিসেবে ভাবেননি। আপন বোন হিসেবে তার প্রতি ভাইদের ভালোবাসা ছিল। কিন্তু তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে নূপুর পালক, তা বলা হয়নি। বিয়ের পর তা জানতে পেরে নূপুরকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন প্রায়ই মারধর করতেন। সংসার টিকিয়ে রাখতে নূপুর কখনোই মারধরের কথা বাবা-মা-ভাইদের জানাতেন না।

রায়হান বলেন, ‘গতকাল সকাল ৭টার দিকে নূপুরের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আগের দিন ফার্নিচারের জন্য লিটন, তার মা বাসুরা বেগম ও বোন পারভিন আক্তার আমার বোনকে মারধর করেন। নূপুরের কাছে ঘটনাটি জানতে পেরে লিটনের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেও পারিনি। এর ২ ঘণ্টা পরই শুনি আমার বোন আর নেই। তারা আমার বোনকে মেরে ঝুলিয়ে রেখেছেন। পরে আমার ভাগনেকে নিয়ে পালিয়ে যান।’ দত্তপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ টি এম কামাল উদ্দিন বলেন, ‘নূপুরের ওপর স্বামী-শাশুড়ি ও ননদরা নানাভাবে নির্যাতন চালিয়েছেন বলে শুনেছি।’ তিনি আরও জানান, নূপুরের লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল। তার এক পা খাটের বাইরে, অন্য পা খাটের ওপরে ছিল। দরজা আটকানো থাকলেও জানালার একটি কাচ ভাঙা ছিল। দত্তপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘দরজা ভেঙে আমরা লাশ উদ্ধার করেছি। মৃতের শ্বশুরবাড়ির লোকজন সবাই পলাতক। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর