বৃহস্পতিবার, ৩১ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

মন্ত্রিপুত্রের ডাকে সাড়া না দেওয়ায় বিদ্যুৎ অফিসে ভাঙচুর

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

মন্ত্রিপুত্রের ডাকে সাড়া না দেওয়ায় বিদ্যুৎ অফিসে ভাঙচুর

সমাজকল্যাণমন্ত্রীর ছেলে রাকিবুজ্জামান আহমেদের সঙ্গে দেখা না করায় লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলা বিদ্যুৎ অফিসে (নেসকো) হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন    নির্বাহী প্রকৌশলী রবিচন্দ্র দাস। মন্ত্রিপুত্র রাকিবুজ্জামান লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি শরিফুল ও তুষভান্ডার ইউপি সদস্য নূরুন্নবীর নেতৃত্বে আট-দশ জনের একটি দল ওইদিন দুপুরে কালীগঞ্জ বিদ্যুৎ অফিসে যান। তারা নির্বাহী প্রকৌশলী রবিচন্দ্র দাসের কক্ষে প্রবেশ করে জানতে চান, মন্ত্রিপুত্র ডাকার পরেও তিনি কেন তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাননি? এত সাহস তিনি কোথায় পেলেন? এ সময় তারা তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। তারা তাকে জামায়াত-শিবিরের কর্মী উল্লেখ করে প্রাণনাশের হুমকি দেন। এই সঙ্গে ২০ মিনিটের মধ্যে মন্ত্রিপুত্র রাকিবুজ্জামানের কাছে ক্ষমা চেয়ে আসতে বলেন। একপর্যায়ে তারা অফিসের আলমারি, ডিজিটাল হাজিরা মেশিন ভাঙচুর করেন। এ সময় উপসহকারী প্রকৌশলী ও কর্মচারীদেরও মারধরের অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী নির্বাহী প্রকৌশলী রবিচন্দ্র দাস জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে তার অফিসের পিচরেট মিটার পাঠক শাহিনুর ইসলাম জানান, মন্ত্রিপুত্র রাকিবুজ্জামান সন্ধ্যার পর স্থানীয় ‘অন্বেষা’ ক্লাবে তাকে দেখা করতে বলেছেন। কিন্তু শ্বশুর-শাশুড়ি অসুস্থ থাকায় তিনি দেখা করতে যেতে পারেননি। সোমবার বিকালে উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক সজীব ফোন করে তাকে ওই ক্লাবে মন্ত্রিপুত্রের সঙ্গে দেখা করতে বলেছিলেন। রবিচন্দ্র দাস বলেন, ‘এটা কোনো অফিসের ডেকোরামের মধ্যে পড়ে না যে, মন্ত্রীর ছেলে ডাকলে আমাকে যেতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘অবৈধ সুপারিশ না মেনে মামলা দেওয়ায় একটি পক্ষ আমার প্রতি ক্ষুব্ধ হয়েছে।’ থানায় অভিযোগ দায়ের প্রসঙ্গে রবিচন্দ্র দাস জানান, ভয়ে তিনি থানায় যাননি। অভিযোগ দায়েরের পর সুস্থ শরীরে ঘরে ফেরা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন। তবে বিষয়টি উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অবহিত করেছেন।

রংপুর নেসকো অফিসের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম মণ্ডল বলেন, ‘বিদ্যুৎ অফিসে হামলার ঘটনা শুনেছি। খোঁজখবর করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে রাকিবুজ্জামান বলেন, ‘সব ভিত্তিহীন ও কাল্পনিক। এসবের সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। আমার বা আমার বাবার কোনো শত্রুর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে প্রকৌশলী এমন অভিযোগ করছেন।’ অন্বেষা ক্লাবে ডেকে পাঠানো প্রসঙ্গে রাকিবুজ্জামান বলেন, ‘আমি কেন তাকে লোকমারফত ডেকে পাঠাব! তার তো ফোন নম্বর আমার কাছে আছে। দরকার হলে আমি তাকে নিজেই ফোন করে ডাকব।’ উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘এসব ষড়যন্ত্র। তারা নিজেরাই ভাঙচুর করেছে। আমরা কেউ সেখানে যাইনি। আমি এক বিয়ের অনুষ্ঠানে আছি। সব মিথ্যা ও বানোয়াট। রাকিবুজ্জামান ভাই ও আমাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই এসব ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর