শিরোনাম
শনিবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

শক্ত অবস্থানে আওয়ামী লীগ, সংগঠিত বিএনপি

শেখ রুহুল আমিন, ঝিনাইদহ

শক্ত অবস্থানে আওয়ামী লীগ, সংগঠিত বিএনপি

ঝিনাইদহ-২ আসনে একসময় বিএনপি দলীয়ভাবে শক্ত অবস্থানে ছিল। ১৯৯১ থেকে ২০০১ পর্যন্ত পরপর তিনবার এ আসনে জয়লাভ করেন বিএনপির মসিউর রহমান। ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়লাভ করেন আওয়ামী লীগের শফিকুল ইসলাম অপু। ২০১৪ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়লাভ করেন তাহজীব আলম সিদ্দিকী। তিনি বর্তমানে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে এ আসনে আওয়ামী লীগের শক্ত অবস্থান রয়েছে। আর মামলার জালে অনেকটা কোণঠাসা বিএনপি। তবে আগামী সংসদ নির্বাচনে আসনটিতে জয় পেতে আশাবাদী উভয় দলের নেতা-কর্মীরা। আর তৃণমূল সংগঠিত করতে কাজ করছে জাতীয় পার্টি (জাপা)। সুশীলসমাজের প্রতিনিধিরা বলছেন, নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে প্রধান দুই দলের মধ্যে। এ ছাড়া মাঠে রয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা। তবে নির্বাচন সামনে রেখে জামায়াতে ইসলামীর তৎপরতা আগেই বেড়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ আসনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়াকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা একে অন্যের বিরুদ্ধে গালমন্দ করে বক্তব্য দিচ্ছেন। আধিপত্য বিস্তারের জন্য প্রতিপক্ষের অফিস ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটছে।

এ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশীর মধ্যে অন্যতম বর্তমান সংসদ সদস্য তাহজীব আলম সিদ্দিকী। তিনি গ্রামগঞ্জে নেতা-কর্মীদের খোঁজখবর নেওয়াসহ সভা-সমাবেশ করে যাচ্ছেন। তাহজীব দুই মেয়াদে নিজস্ব একটা অবস্থান তৈরি করেছেন। সাধারণ মানুষের কাছে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা আলাদা। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক সদর পৌর মেয়র সাইদুল করিম মিন্টু মনোনয়ন     চাইবেন। কিন্তু দুর্নীতি মামলা তাঁকে অনেকটা বাধাগ্রস্ত করছে। এ ছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম অপু, সহসভাপতি নাসের শাহরিয়ার জাহেদী মহুল এবং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, জেলা আওয়ামী লীগের উপদফতর সম্পাদক, হরিণাকুণ্ডু উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসাইন দলীয় মনোনয়ন চাইতে পারেন। জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এম এ মজিদ সংগঠন শক্তিশালী করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মসিউর রহমানের মৃৃত্যুর পর এম এ মজিদ সাংগঠনিক কাজ করে যাচ্ছেন। তবে তাঁর বড় বাধা মসিউর রহমানের ছেলে কেন্দ্রীয় ড্যাব নেতা, জেলা বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ইব্রাহিম রহমান। তিনি গত সংসদ নির্বাচনে এম এ মজিদের পাশাপাশি দলীয় মনোনয়ন লাভ করেন। কিন্তু দলীয় সিদ্ধান্তে শেষ পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। বর্তমানে তিনি দলের একাংশ সঙ্গে নিয়ে নিজস্ব বলয় গড়ে তুলেছেন এবং রাজনৈতিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছেন। এ ছাড়া জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ও ল কলেজের প্রিন্সিপাল অ্যাডভোকেট এস এম মশিউর রহমানও দলের দুজন প্রার্থীর পাশাপাশি মনোনয়ন লাভ করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দলের সিদ্ধান্তে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে হয়। রাজনৈতিকভাবে বর্তমানে তিনি কিছুটা কোণঠাসা। তার পরও নিজের মতো করে সাংগঠনিক কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। পাশাপাশি জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল মজিদ বিশ্বাস (ছোট) ও কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য রবিউল ইসলাম লাবলু দলীয় মনোনয়ন চাইবেন। জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ও ল কলেজের প্রিন্সিপাল অ্যাডভোকেট এস এম মশিউর রহমান বলেন, ‘কেন্দ্রের নির্দেশে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করার জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছি। সুষ্ঠু ভোট হলে এ আসনে বিপুল ভোটে বিএনপি প্রার্থী জয়লাভ করবেন।’ এ আসনে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিস শুরা সদস্য, ঝিনাইদহ জেলা আমির আলী আজম মো. আবু বক্কর শহর ও গ্রামগঞ্জের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পোস্টার টানিয়েছেন এবং বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাচ্ছেন। গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান এ আসনে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করছেন। জোটগতভাবে নির্বাচন হলে জোটের প্রার্থী হিসেবে নিজেকে জানান দিতে পারেন বলে জানা গেছে। জাতীয় পার্টির জি এম কাদেরপন্থি জেলা সভাপতি রাশেদ মাজমাদার, রওশন এরশাদপন্থি মিজানুর রহমান দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের একক প্রার্থী হিসেবে ডা. এইচ এম মমতাজুল করিমের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। স্বাধীনতা পার্টির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজু এ আসন থেকে নির্বাচন করবেন বলে জানিয়েছেন। জাকের পার্টির যুব স্বেচ্ছাসেবক ফ্রন্টের সহসভাপতি মোশারফ হোসেন স্বপন সংগঠনের প্রার্থী হবেন।

সর্বশেষ খবর