শিরোনাম
রবিবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

বিপাকে পানিবন্দি মানুষ

প্রতিদিন ডেস্ক

বিপাকে পানিবন্দি মানুষ

যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যা প্লাবিত জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার চিনাডুলি ইউনিয়ন

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এতে আতঙ্ক বাড়ছে যমুনাপাড়ের মানুষের। অবশ্য ব্রহ্মপুত্রসহ গাইবান্ধার সবগুলো নদনদীর পানি কমতে শুরু করেছে। অপরদিকে, বরিশাল বিভাগের সাতটি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

সিরাজগঞ্জ : যমুনার পানি ৮ সেন্টিমিটার বেড়ে সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ হার্ড পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যমুনা নদীর সঙ্গে অভ্যন্তরীণ চলনবিলসহ করতোয়া, ইছামতী, বড়াল, ফুলজোড় ও হুড়াসাগর নদীতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে জেলার পাঁচটি উপজেলার ৪২টি ইউনিয়নের কয়েক শ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বসতভিটা ও ঘরবাড়িতে পানি ওঠায় চরম বিপাকে পড়েছে পানিবন্দি মানুষেরা। অনেকে পরিবার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে।

টাঙ্গাইল : ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি পোড়াবাড়ী পয়েন্টে ১৬ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার, ধলেশ্বরী নদীর পানি এলাসিন পয়েন্টে ১০ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার এবং ঝিনাই নদীর পানি জোকারচর পয়েন্টে ৮ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৫৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এ ছাড়াও বংশাই নদীর পানি মির্জাপুর পয়েন্টে ৩ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিন্টার, মধুপুর পয়েন্টে ২ সেন্টিমিটার কমে ৩ মিটার ৭৫ সেন্টিমিটার এবং কাউলজানি পয়েন্টে ১ মিটার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর এবং ফটিকজানী নদীর নলচাপা পয়েন্টে ৩ সেন্টিমিটার বেড়ে ৭০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার এসব নদীর পানি আরও কয়েকদিন বাড়ার আশঙ্কা করছে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড।

জামালপুর : যমুনা নদীর পানি বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে ৬ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, ঝিনাই, জিঞ্জিরামসহ জেলার অন্যান্য নদনদীর পানি বেড়ে দেওয়ানগঞ্জ, ইসলামপুর, মেলান্দহ, মাদারগঞ্জ, সরিষাবাড়ী উপজেলার ২১টি ইউনিয়নের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

গাইবান্ধা : ব্রহ্মপুত্র ছাড়া গাইবান্ধার সবগুলো নদনদীর পানি কমতে শুরু করেছে। বিকাল ৩টায় ফুলছড়ি পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র নদের পানির উচ্চতা ৬ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ২৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে শনিবার সকাল ৬টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত পানির উচ্চতা স্থির ছিল। এদিকে ঘাঘট নদীর পানি ১ সেন্টিমিটার কমে ২৪ সেন্টিমিটার, তিস্তার পানি ৭ সেন্টিমিটার কমে কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার ও করতোয়া নদীর পানি ৮৯ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ২৭৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার অন্যান্য নদনদীর পানি কমলেও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বাড়ার কারণে সাঘাটা ও ফুলছড়ী উপজেলার নদী তীরবর্তী পানিবন্দি হয়ে দুর্ভোগে পড়েছে দুই হাজার পরিবার। নদী তীরবর্তী অঞ্চলে ভাঙন আতঙ্ক বিরাজ করছে। ঝুঁকিতে রয়েছে পাঁচ শতাধিক বাড়ি ও হাজারো বিঘা ফসলি জমি।

বগুড়া : জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলার বেড়িবাঁধ সংলগ্ন এলাকায় পুনরায় যমুনা নদীর ভাঙন দেখা দিয়েছে। প্রায় ৩০টি বসতবাড়ি যমুনায় বিলীন হয়েছে। শনিবার সকালে যমুনা নদীর ভাঙনে বসতবাড়ি বিলীন হয়ে নিঃস্ব হয়েছেন সারিয়াকান্দি কামালপুর ইউনিয়নের কামালপুর গ্রামের আবদুল মুন্নাফ প্রাং, ফুলটু প্রাং, জহুরুল প্রাং , মানিক প্রাং, মুকুল প্রাং, মোসলেম প্রাং, দোলা আকন্দ, শাহেনা বেগম, চান মিয়াসহ প্রায় ৩০টি পরিবারের বসতবাড়ি। এই এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে।

কুড়িগ্রাম : তিস্তা নদীর পানি টানা সাত দিন বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও এখন তা অনেক নিচ দিয়ে বইছে। অন্যান্য নদনদীর পানিও কমে বিপৎসীমার নিচে রয়েছে। যদিও ব্রহ্মপুত্র নদের চিলমারী পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার মাত্র ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে এবং নুনখাওয়া পয়েন্টে ২১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলোতে পানিতে তলিয়ে গেছে। বন্যা কবলিত এলাকাগুলো থেকে পানি নেমে না যাওয়ায় বন্যার্তদের দুর্ভোগ কমেনি।

বরিশাল : বরিশাল বিভাগের সাতটি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। আরও কয়েকটি নদীর পানি বিপৎসীমা ছুঁইছুঁই করে প্রবাহিত হয়েছে।

বিষখালী নদীর পানি যথাক্রমে বরগুনা পয়েন্টে বিপৎসীমার ৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, পাথরঘাটা পয়েন্টে ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, ঝালকাঠি পয়েন্টে ৪ সেন্টিমিটার ও বেতাগী পয়েন্টে ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। বরিশাল জেলার হিজলা উপজেলায় ধর্মগঞ্জ নদীর পানি প্রবাহিত হয় বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে। পিরোজপুরে বলেশ্বর নদীর পানি বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং উমেদপুর পয়েন্টে কঁচা নদীর পানি প্রবাহিত হয় ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে। বেতাগী পয়েন্টে বিষখালী নদীর বিপৎসীমার ৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর