রবিবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
পাম্প মালিকদের আন্দোলন

আজ থেকে জ্বালানি তেলের উত্তোলন পরিবহন বন্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের আশ্বাসের পরও আজ থেকে তিন দফা দাবিতে জ্বালানি তেলের উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে পেট্রল পাম্প মালিক সমিতি।

বাংলাদেশ প্রতিদিনকে গতকাল বিকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন পেট্রল পাম্প মালিক সমিতির মহাসচিব মিজানুর রহমান রতন। তিনি বলেন, ‘আস্থার অভাবের কারণেই আমরা আজ থেকে জ্বালানি তেল উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধ রাখব। মন্ত্রণালয় আমাদের দাবি পূরণে এক মাস সময় চেয়েছে। কিন্তু এর আগেই দাবি পূরণ করা সম্ভব।’ এদিকে গতকাল রাত ৯টায় পেট্রল পাম্প মালিক সমিতি তিন দফা দাবির একটি- তেল ব্যবসায়ী-ডিলারদের কমিশন এজেন্ট ঘোষণা সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করেছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রাণালয়। তবে গেজেট প্রকাশের পরও বাকি দুটি দাবি পূরণের জন্য আন্দোলন থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত গতকাল রাত পর্যন্ত নেইনি মালিক সমিতি। আজ এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে। এর আগে বিভিন্ন দাবি নিয়ে ২৯ আগস্ট সচিবালয়ে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের সঙ্গে বৈঠক করেন পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন ও ট্যাংকলরি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা। আলোচনার পর নেতারা জানান, তাদের সব দাবি এক মাসের মধ্যে বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছেন জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী। এরপর ৩১ আগস্ট খুলনার খালিশপুরে ট্যাংকলরি ভবনে সভা করে ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের কয়েকটি সংগঠন। এই সংগঠনগুলো হলো- বাংলাদেশ ট্যাংকলরি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ জ্বালানি তেল পরিবেশক সমিতি, খুলনা বিভাগীয় ট্যাংকলরি শ্রমিক ইউনিয়ন এবং পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা ট্যাংকলরি শ্রমিক কল্যাণ সমিতি। সভায় মালিক সমিতির নেতারা জানান, জ্বালানি তেল বিক্রিতে কমিশন বৃদ্ধিসহ ৩ দফা দাবি পূরণে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সরকারকে সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এই সময় পার হয়ে গেলেও এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এজন্য ৩ সেপ্টেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য তেল উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন নেতারা। পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতির মহাসচিব মিজানুর রহমান রতন বলেন, এর আগে ২০২০ সালে রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে জ্বালানিমন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছিল। সে সময় এক মাসের মধ্যে আমাদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হলেও তা পূরণ হয়নি। এর মধ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনে সাত-আটবার বৈঠক করে আমাদের দাবি পূরণে আশ্বাস দিলেও এখন পর্যন্ত তা পূরণ হয়নি। তেলের দাম বৃদ্ধি করার ফলে নিজেদের খরচসহ পেট্রোল পাম্প চালানো বেশ কষ্টের। কর্মচারীদের বেতনও আগের চেয়ে বেড়েছে। তেলের দাম বৃদ্ধির ফলে আমাদের কমিশন না দেওয়ায় আমাদের বিনিয়োগও বৃদ্ধি পেয়েছে। সবমিলিয়ে আমরা বিপদে পড়ে সবার মতামত নিয়ে আন্দোলনে নেমেছি। এবারও বৈঠকে আমাদের কাছে এক মাসের সময় চাওয়া হয়েছে। কিন্তু এবার আর মালিকরা সময় দিতে রাজি হচ্ছেন না। তিনি আরও জানান, পেট্রোল পাম্পগুলোতে আজ চলার মতো তেল আছে। তবে আগামীকাল থেকে পাম্পগুলোতে তেল সংকট দেখা দিতে পারে। মিজানুর রহমান রতনের মতে, সরকার চাইলে ১৫ দিনের মধ্যে তাদের দাবি বাস্তবায়ন করতে পারে। এ দাবি আদায় হলেই পুনরায় তেল উত্তোলন ও বিপণনে ফিরে যাওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর