সোমবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ধুমকলার ১৮০ বছর

নজরুল মৃধা, রংপুর

ধুমকলার ১৮০ বছর

প্রায় ১৮০ বছর আগে ডেকোরেশনের জন্য নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার বাবা পায়রাবন্দের জমিদার জহির উদ্দিন মোহাম্মদ আবু আলী হায়দার সাবের জার্মানি থেকে নিয়ে আসেন ধুমকলার গাছ। সে চারাগুলোর একসময় তিনটির অস্তিত্ব থাকলেও এখন দুটি টিকে রয়েছে পায়রাবন্দে স্মৃতি কেন্দ্রের ভিতর। জমিদারবাড়ি থেকে ১৯৯৭ সালে চারা এনে স্মৃতি কেন্দ্রে লাগানো হয়। তিন-চার বছর পর এর ফল পাওয়া যায়। এ গাছটি বাংলাদেশে একটি বিরল কলাগাছ। এমনটাই জানা গেছে স্মৃতি কেন্দ্রের ইনচার্জ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে। 

বেগম রোকেয়া স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম দুলাল বলেন, ১৮৪০ সালের দিকে জার্মানি থেকে এ গাছটি নিয়ে এসেছিলেন বেগম রোকেয়ার বাবা। এরপর এ গাছ থেকে ফল হচ্ছে। এর বীজ থেকে চারা হচ্ছে। এভাবেই ১৮০ বছরের বেশি সময় ধরে টিকে রয়েছে গাছটির বংশধর। তার জানা মতে, এ জাতীয় কলাগাছ দেশের অন্য কোথাও নেই। তবে পায়রাবন্দ থেকে দু-একজন এ গাছের চারা নিয়ে গেছেন। তাদের মাধ্যমে গাছটি অন্যত্র থাকতে পারে। পায়রাবন্দ বেগম রোকেয়া স্মৃতি কেন্দ্রের ইনচার্জ ও বাংলা একাডেমির সহকারী সম্পাদক কৃষিবিদ আবিদ করিম মুন্না বলেন, স্মৃতি কেন্দ্রের অডিটোরিয়ামের লবির নিচে একটি ধুমকলা গাছ ফল দেওয়ার অপেক্ষায় আছে। এর আগেও ফল ধরেছে। বিশাল একটা কাঁদি হয়। উচ্চতায় প্রায় ৫ ফুট, যেটা সাধারণ কলাগাছের মতো নয়। বড় হলে কলাগাছের গোড়া  পামগাছের মতো গোল হয়। একটা কাঁদিতে হাজার হাজার কলা হয় এবং কলার আকার ১ থেকে দেড় ইঞ্চির মতো হয়ে থাকে। কলার ভিতর হলুদাভ এবং প্রচুর বীজ থাকে। বীজ মটর কালাইয়ের চেয়ে খানিকটা বড়। খেতে মিষ্টি, তবে বীজ বেশি থাকার কারণে খুব একটা খাওয়া সম্ভব নয়। এ গাছ সম্পর্কে একটি লোককথা প্রচলিত আছে- কেউ যদি কলাগাছের ডাংলা (পাতার ডাঁটা) খেতে ইচ্ছে পোষণ করে তাহলে একদিন আগে গাছের কাছে গিয়ে বললে পরের দিন পাতা আপনা-আপনি হেলে থাকে। এ ছাড়া কলাগাছের ডাউগনা (ভিতরের ডাঁটার অংশ) সবজি হিসেবে খাওয়া যায়।

সর্বশেষ খবর