বুধবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

প্রজন্ম লীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেফতার হননি

পৌনে ২ কোটি টাকা ছিনতাই

কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লার দাউদকান্দিতে অস্ত্র ঠেকিয়ে প্রবাসীর পৌনে ২ কোটি টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় দাউদকান্দি উপজেলা প্রজন্ম লীগ সভাপতি সোহেল রানাসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সদর উপজেলার দুর্লভপুর গ্রামের সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি করেন। সোহেলের বাড়ি থেকে ১ কোটি ৮ লাখ টাকা উদ্ধার হলেও হদিস নেই বাকি ৬৮ লাখের। গতকাল বিকালে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত গ্রেফতার হননি কোনো আসামি।

সাইফুল ইসলাম বলেন, তিনি মালদ্বীপপ্রবাসী। কুমিল্লা নগরীতে তার একটি জায়গা ছিল। সেটি ১ কোটি ৭০ লাখ টাকায় বিক্রি করেন। ক্রেতা ঢাকায় অবস্থান করেন। তার অনুরোধে ঢাকা থেকে টাকা নিয়ে কুমিল্লায় ফিরছিলেন। সঙ্গে তার এক মামা ছিলেন। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক হয়ে প্রাইভেট কারে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলা হয়ে ফিরছিলেন। কুমিল্লার তুজারভাঙ্গা এলাকায় প্রাইভেট কারটি এলে মামা ওয়াশরুম ব্যবহার করতে চান। স্থানীয় মোহন সিন্ডিকেট পেট্রলপাম্পে তার প্রাইভেট কার থামায়। এখানে অস্ত্র ঠেকিয়ে টাকা ছিনিয়ে নেয় ছিনতাইকারীরা। তিনি পুলিশকে জানালে দাউদকান্দি থানা পুলিশ পাম্পে আসে। স্থানীয় সূত্রে পুলিশ নিশ্চিত হয় উপজেলা প্রজন্ম লীগ সভাপতি সোহেল রানার নেতৃত্বে ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা ছিনতাই হয়। সোমবার বিকালে দাউদকান্দি থানা পুলিশ দাউদকান্দিতে সোহেলের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ১ কোটি ৮ লাখ টাকা উদ্ধার করে।

সাইফুল জানান, তিনি এখনো আতঙ্কে আছেন। এমন ভয়াবহ ঘটনার সম্মুখীন কখনো হননি। সোহেলের বাড়ি থেকে পুলিশ ১ কোটি ৮ লাখ টাকা উদ্ধার করেছে বলে সোমবার পুলিশ তাকে জানিয়েছে। এরপর মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত আর কিছু তাকে জানানো হয়নি। স্থানীয় সূত্র জানান, মহাসড়কে ছিনতাই, দাউদকান্দি সদরে চাঁদাবাজির ঘটনায় স্থানীয়রা সোহেল রানার ওপর অতিষ্ঠ। অবৈধ গ্যাস সংযোগ দিয়ে সোহেল কোটি টাকা আয় করেছেন। স্থানীয় প্রভাবশালীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকায় কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বলে না। তাকে বানানো হয় দাউদকান্দি পৌর বাজারের সেক্রেটারি। বিভিন্ন মামলা থাকলেও পুলিশ তার বিষয়ে নাক গলায় না। গত বছর নভেম্বরে স্থানীয় এক যুবদল নেতাকে লিফলেট বিতরণের সময় মারধরের পর ভিডিও করেন সোহেল। সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেন তিনি। এতে সোহেল রানাকে বলতে শোনা যায়, ‘দেশে বিএনপি আছেনি রে...।’ এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে তখন সংবাদ প্রকাশিত হয়। দাউদকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক বলেন, ‘ছিনতাই হওয়া টাকার মধ্যে আমরা ১ কোটি ৮ লাখ সোহেল রানার বাসা থেকে উদ্ধার করেছি। আমাদের অভিযান চলছে। আশা করি ঘটনায় জড়িত সোহেলসহ অন্যদের দ্রুত গ্রেফতার করতে পারব।’ সোহেলের আগের অপরাধ ও মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এ থানায় কিছুদিন আগে যোগদান করেছি। এখন অভিযান নিয়ে ব্যস্ত আছি। আগের মামলার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে বলতে পারব।’

 

সর্বশেষ খবর