বুধবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

হাসপাতালে সংঘর্ষ, আহত ১৮

ফরিদপুর প্রতিনিধি

ফরিদপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বীর মুক্তিযোদ্ধা নয়ন খানের (৯৫) অবহেলাজনিত মৃত্যু কেন্দ্র করে ইন্টার্ন চিকিৎসক ও রোগীর স্বজনদের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটেছে। সোমবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষে ১৮ জন আহত হন। তাদের মধ্যে মৃত মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের তিন সদস্যকে পুলিশ হেফাজতে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে ইন্টার্ন চার চিকিৎসককে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসন তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা নয়ন খান অসুস্থ হয়ে পড়লে স্বজনরা তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। তাকে মুক্তিযোদ্ধা ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। রাত সাড়ে ১২টার দিকে রোগীর শ্বাসকষ্ট শুরু হলে স্বজনরা কর্তব্যরত নার্সকে জরুরি চিকিৎসা দিতে বলেন। কিছুক্ষণ পর একজন চিকিৎসক এসে দেখেন রোগী মারা গেছেন। এ নিয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসক ও রোগীর স্বজনদের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে উভয় পক্ষ মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে। এতে মোট ১৮ জন আহত হন। আহতরা হলেন মৃত রোগীর স্বজন আলমগীর বিশ্বাস (২৮), তৌহিদ বিশ্বাস (২৫), আলিফ খান (১৪), হামজা খান (১২), জেসমিন (৪২), সাবিনা ইয়াসমিন (৫০) ও রেবেকা সুলতানা মণি (৩৫) এবং হাসপাতালের স্টাফ অর্ণব (২৬), ইন্টার্ন ডাক্তার মাহমুদুল (২৬), শামিম (২৪), রোকন (২৪), শিহাব (২৪), এজাজ (২৬), মহিন (২৬), শাকিব (২৬), পাভেল (২৬), ইসতেফার (২৪), জাহিদ (২৬), সাব্বির (২৬) ও ফরহাদ (২৬)। কোতোয়ালি থানা পুলিশ খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। পরে পুলিশ অভিযুক্ত রোগীর স্বজনদের মধ্য থেকে তিনজনকে আটক করে। স্বজন আলমগীর বিশ্বাস অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার নানা (বীর মুক্তিযোদ্ধা নয়ন খান) চিকিৎসকদের অবহেলায় মারা যাওয়ার পর স্বাভাবিকভাবেই একটু উত্তেজিত হয়ে পড়ি। এ সময় ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সঙ্গে বহিরাগত ও মেডিকেল কলেজের ছাত্ররা এবং নার্সেরা আমাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন এবং কিলঘুসি মারতে থাকেন। পরে উভয় পক্ষে হাতাহাতি হয়। এদিকে হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক হাসিবুল জানান, নয়ন খান নামে এক ব্যক্তি অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আসেন। এরপর তার চিকিৎসা দেওয়া হয়। রাত সাড়ে ১২টার দিকে রোগীর শ্বাসকষ্ট শুরু হলে রোগীর স্বজনরা রোগীকে দেখার কথা বলেন। এর পরই ডা. সাব্বির দ্রুত সেখানে আসেন। ঠিক সে সময় রোগীর এক স্বজন এসেই ডা. সাব্বিরের কলার চেপে ধরেন। একপর্যায়ে স্বজনরা মারতে শুরু করেন আমাদের। পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান বলেন, ‘পুলিশ খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি।’ জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান তালুকদার বলেন, ‘পরিস্থিতি শান্ত রাখা হয়েছে। জেলা প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি করেছে। রিপোর্ট পেলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এনামুল হক বলেন, ‘আমি ছুটিতে রয়েছি। সবকিছু জেনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর