শুক্রবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

অনিয়ম বন্ধে কার্ডে ওএমএস পণ্য

ওয়াজেদ হীরা

খোলাবাজারে পণ্য বিক্রি (ওএমএস) নিয়ে নতুনত্ব আসছে। টিসিবির মতো ওএমএস বিতরণ করা হবে কার্ডের মাধ্যমে। কার্ড ছাড়া কেউ পণ্য পাবে না । ফলে অনিয়ম-দুর্নীতি একেবারেই কমে আসবে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ নিয়মের কারণে ওএমএসের লাইনে দাঁড়িয়ে একই ব্যক্তির বারবার চাল-আটা নেওয়ার সুযোগও বন্ধ হবে। যে-কেউ চাইলেই লাইনে দাঁড়িয়ে পণ্য কিনতে পারবে না। খাদ্য মন্ত্রণালয় ও খাদ্য অধিদফতর থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। চলতি বছরের শুরুর দিকে ফেব্রুয়ারিতে মন্ত্রিসভা বৈঠকে এক অনির্ধারিত আলোচনায় কার্ডের মাধ্যমে ওএমএস করার নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারই আলোকে উদ্যোগী হয় খাদ্য মন্ত্রণালয়। খাদ্যমন্ত্রী সাধনচন্দ্র মজুমদার সম্প্রতি বলেছেন, একই ব্যক্তি বারবার ওএমএসের চাল নিয়ে বিক্রি করে দেন। আবার অনেকে পানই না। কার্ডের মাধ্যমে বিতরণ করা হলে এ প্রবণতা কমবে এবং সবাই পাবেন। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ইসমাইল হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘এটাকে ইতোমধ্যে ৪০৯ কেন্দ্র কার্ডের আওতায় নিয়ে এসেছি। আশা করছি অক্টোবরের মধ্যেই এ কার্যক্রম চালু করতে পারব।’ খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, প্রথম দফায় রাজধানীসহ দেশের ৪০৯টি ওএমএস কেন্দ্রে পরীক্ষামূলকভাবে কার্ডের মাধ্যমে চাল-আটা বিতরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর মধ্যে ঢাকায় ৯টি পরীক্ষামূলক কেন্দ্র ছিল। পরীক্ষামূলকভাবে কার্যক্রমের আওতাভুক্ত ৪০৯টি কেন্দ্রের কার্ড তৈরি করা হলেও বিতরণ হয়নি। এখন সব কেন্দ্রে চালু হবে এ নতুন পদ্ধতি। বর্তমানে সারা দেশে ৯১২টি কেন্দ্রে ওএমএস দেওয়া হচ্ছে।

খাদ্য অধিদফতরের ঢাকা রেশনিংয়ের প্রধান নিয়ন্ত্রক সুরাইয়া খাতুন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমরা কার্ড সিস্টেমে যাচ্ছি। একটু সময় লাগছে, হয়তো আরও এক-দুই মাস লাগবে। তবে যারা নিয়মিত ক্রেতা তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে ডিলারদের কাছ থেকে কার্ড নিতে হবে। বিনামূল্যে কার্ড দেওয়া হবে। একটি কার্ড দেখিয়ে সপ্তাহে এক দিন ওএমএস থেকে সর্বোচ্চ ৫ কেজি চাল ও ৫ কেজি আটা কিনতে পারবেন। পণ্য উত্তোলনের সময় “বিতরণ” চিহ্নের ঘরে পাঞ্চ মেশিনে ছিদ্র করে বা টিকচিহ্ন দেওয়া হবে। কার্ড হারিয়ে গেলেও কীভাবে আবার তোলা যাবে সে ব্যবস্থাও থাকবে’। বর্তমানে যে কোনো ব্যক্তি ওএমএস কেন্দ্রে প্রতি কেজি ৩০ টাকা দরে সর্বোচ্চ ৫ কেজি চাল কিনতে পারেন। বাজারে একই পরিমাণ চালের দাম ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। তার চেয়েও বেশি সাশ্রয় হচ্ছে আটায়। ওএমএসে প্রতি কেজি আটার দাম ২৪ টাকা ধরে ৫ কেজি কিনতে পারছে সাধারণ মানুষ। আর প্যাকেট আটা (২ কেজির প্যাকেট) পাচ্ছে ৪ কেজি ১১০ টাকায়। ওএমএস ৯১২ কেন্দ্রেই খাদ্য কর্মকর্তা, এলাকার রেশনিং কর্মকর্তারা প্রচার চালাচ্ছেন কার্ড সিস্টেম নিয়ে। রেশনিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ মামুন হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ওএমএসের ক্রেতাদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য, জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি ও ছবি নিয়ে তা আবার ওয়েবসাইটেও সংরক্ষণ রাখা হবে। এ-সংক্রান্ত অ্যাপসের কাজ চলছে। অ্যাপসের কারিগরি কাজ শেষ হলেই যে কোনো সময় এ কার্ড দেওয়ার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে।

সর্বশেষ খবর