দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সংকট এবং উত্তরণের উপায় নিয়ে আলোচনা সভা হয়েছে। গতকাল রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে ‘বাংলাদেশ : গণতান্ত্রিক পথপরিক্রমা’ শীর্ষক এই সভার আয়োজন করে সোসাইটি ফর গ্লোবাল অ্যান্ড বাংলাদেশ স্টাডিজ এবং এক্সপার্ট একাডেমি লিমিটেড। এতে সভাপতিত্ব করেন ইউএনবির সম্পাদক ফরিদ উদ্দিন। মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন অ্যাসোসিয়েট প্রেস (এপি)-এর ব্যুরো প্রধান জুলহাস আলম। সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা নিশ্চিতের সুবর্ণ সময় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ জন্য প্রয়োজন সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরপেক্ষ ভূমিকার প্রেক্ষিতেএকটি সুষ্ঠু ভোট। দুর্ভাগ্যের বিষয়- পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে আইনি কাঠামোকেই হাতিয়ার বানানো হয়েছে। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোও দলীয়করণের প্রভাবে পক্ষপাতদুষ্ট। নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এমন একটি ব্যবস্থা প্রণয়ন করতে হবে যেন সব অংশগ্রহণকারীর জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত হয়। এ জন্য রাজনৈতিক পক্ষগুলোকে ভবিষ্যতের সংকট নিরসনের জন্য এক টেবিলে বসতে হবে। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রার প্রধান অন্তরায় রাজনৈতিক দলগুলো। রাজনৈতিক দলগুলো নষ্ট হয়ে গেলে বাদবাকি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোও নষ্ট হয়ে যায়। এমনকি নির্বাচনে বিদেশি হস্তক্ষেপের সংস্কৃতি রাজনৈতিক দলগুলোর কেউ না কেউ আরম্ভ করেছে। অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ভোটার, তারা প্রতিনিয়ত অভিযোগ করছেন ভোট দিতে পারছেন না। সুতরাং গণতন্ত্রের সঙ্গে যেসব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত তাদের ঠিক করতে হবে। নতুবা ঘোর বিপদ আসন্ন। আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সততা ও সদিচ্ছা নিয়ে সংলাপ জরুরি। শুধু আগামী নির্বাচনই নয় ভবিষ্যতের জন্য টেকসই সমাধান খুঁজতে হবে। তার আগে সমস্যা কোথা থেকে শুরু তা ঘেঁটে দেখাও জরুরি। পঁচাত্তরের হত্যাকা , সামরিক শাসন এবং শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার মতো বিষয়গুলো টেবিলে রেখেই সংলাপে যেতে হবে। ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেন, দুর্ভাগ্যবশত নির্বাচন এলে বাংলাদেশ ঘিরে বিদেশি শক্তিরা অস্থির হয়ে যায়। আজকের বাংলাদেশের অর্থনৈতিক এবং ভূরাজনৈতিক গুরুত্ব আগের যে কোনো সময়ের চেয়েও বেশি। তাই আসন্ন নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশ নিয়ে বিদেশি শক্তির নজরও বেশি। তাই আমরা যেনতেনভাবে নির্বাচন করতে পারব না। আশা করি নির্বাচন কমিশনের অধীনে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। একাত্তর টিভির হেড অব কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স ফারজানা মিথিলার সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ দেলোয়ার হোসেন, ইলেকশন মনিটরিং অ্যালায়েন্সের (ফেমা) প্রধান মুনিরা খান, প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান, বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুল ইসলাম ভূইয়া, আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ড. সাদেকা হালিম, জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ, ইমেরিটাস সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শমসের মবিন চৌধুরী, সুজনের নির্বাহী সদস্য ড. তোফায়েল আহমেদ, মেজর জেনারেল (অব.) আবদুর রশীদ, পররাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নাঈম রাজ্জাক, এফবিসিসিআই-এর সাবেক সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, আর্টিকেল ১৯-এর আঞ্চলিক পরিচালক ফারুক ফয়সাল প্রমুখ।