রবিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
সমীক্ষায় তথ্য

আত্মহত্যায় শীর্ষে ঢাকা

♦ নারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি ♦ সবচেয়ে বেশি স্কুলগামীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

আত্মহত্যায় শীর্ষে ঢাকা

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত আট মাসে মোট ৩৬১ জন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং মাদরাসা শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। এর মধ্যে স্কুল শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৬৯ জন, কলেজ শিক্ষার্থী ৯৬ জন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ৬৬ জন এবং মাদরাসা শিক্ষার্থী ৩০ জন। মোট শিক্ষার্থীর মধ্যে পুরুষ শিক্ষার্থী ১৪৭ জন আর নারী শিক্ষার্থী ২১৪ জন। অর্থাৎ পুরুষ শিক্ষার্থীর তুলনায় নারী শিক্ষার্থীরা বেশি আত্মহত্যা করছেন। শিক্ষার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা আত্মহত্যা করে। এই সময়ে বেশি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে। একই সময়ে ২০২২ সালে আত্মহত্যা করেছিল ৩৬৪ জন শিক্ষার্থী। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আঁচল ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার হার ক্রমবর্ধমান : কোন পথে সমাধান?’ শীর্ষক সমীক্ষায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল অনলাইনে সংস্থটি এসব তথ্য প্রকাশ করে।

দেশের ১০৫টি জাতীয় এবং স্থানীয় পত্রিকা ও অনলাইন পোর্টাল থেকে শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার এই তথ্য সংগ্রহ করা হয়। সমীক্ষায় পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকা বিভাগে চলতি বছরের প্রথম আট মাসে আত্মহত্যা করেছেন ৩১ দশমিক ৩০ শতাংশ, খুলনায় ১৩ শতাংশ, চট্টগ্রামে ১৪ দশমিক ১০ শতাংশ, রংপুরে ৮ দশমিক ৯০ শতাংশ, ময়মনসিংহে ১০ শতাংশ, রাজশাহীতে ১১ দশমিক ৯০ শতাংশ, বরিশালে ৮ দশমিক ৩০ শতাংশ, সিলেটে ২ দশমিক ৫ শতাংশ শিক্ষার্থী। ঢাকা শহরে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা ও বেড়ে ওঠার সহায়ক পরিবেশ না থাকায় আত্মহত্যার ঘটনা বেশি ঘটছে।

আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি দেখা গেছে নারী শিক্ষার্থীদের মাঝে। ৩৬১ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৫৯ দশমিক ৩০ শতাংশ নারী শিক্ষার্থী গত আট মাসে আত্মহত্যা করেছেন। অন্যদিকে ৪০ দশমিক ৭০ শতাংশ পুরুষ শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেন। এর মধ্যে ২৬ দশমিক ৬০ শতাংশ নারী শিক্ষার্থী অভিমানে, ১৮ দশমিক ৭০ শতাংশ প্রেমঘটিত কারণে, ৮ দশমিক ৪০ শতাংশ মানসিক ভারসাম্যহীনতায়, পারিবারিক বিবাদে ৯ দশমিক ৮০ শতাংশ, যৌন হয়রানির কারণে ৫ দশমিক ১০ শতাংশ শিক্ষার্থী এবং পড়ালেখার চাপ ও ব্যর্থতার কারণে ১২ দশমিক ৬০ শতাংশ শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেন।

সমীক্ষায় দেখা যায়, আত্মহত্যাকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৪৬ দশমিক ৮ শতাংশই ছিল স্কুলগামী। এদের মধ্যে মেয়ে শিক্ষার্থী ১১২ জন এবং ছেলে শিক্ষার্থী ৫৭ জন। আত্মহত্যাকারীদের মধ্যে কলেজগামী শিক্ষার্থী ছিলেন ২৬ দশমিক ৬০ শতাংশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন ১৮ দশমিক ৩০ শতাংশ। আর মাদরাসার শিক্ষার্থী ছিলেন ৮ দশমিক ৩১ শতাংশ। দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যা করেছেন ১৩ থেকে ১৯ বছর বয়সীরা। এই বয়সী শিক্ষার্থী ছিলেন ৬৭ দশমিক ৩ শতাংশ। আর ২০ থেকে ২৫ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার হার ২১ দশমিক ৬ শতাংশ। ২৬ থেকে ৩০ বছরের শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার হার ২ দশমিক ৮০ শতাংশ। আর ১ থেকে ১২ বছরের শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার হার ৮ দশমিক ৩০ শতাংশ।

শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ কারণ অভিমান। অভিমানের কারণে ৩১ দশমিক ৬০ শতাংশ শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেন। এ ছাড়াও আত্মহত্যার পেছনে অন্য কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে -প্রেমঘটিত, পারিবারিক নির্যাতন, যৌন নির্যাতন, একাডেমিক চাপ, মানসিক অস্থিতিশীলতা ও পারিবারিক সমস্যা।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর