রবিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

মধ্যযুগীয় কায়দায় পিটিয়ে হত্যা করা হয় আকাশকে

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের টিক্কাপাড়ায় নির্মাণাধীন একটি ভবনের এক ইঞ্জিনিয়ারের নির্দেশে স্কুলছাত্র আকাশকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করে হত্যা করা হয়। ওই সময় তারই নির্দেশে নির্যাতনের ভিডিও ধারণ করে কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা। গত শুক্রবার ওই ইঞ্জিনিয়ার মো. মীর মোয়াজ্জেম হোসেন ওরফে প্রান্তসহ আরও দুজনকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেফতারের পর ঘটনার নেপথ্য ঘটনা জানতে পেরেছে র‌্যাব। গ্রেফতার বাকিরা হলেন- মো. ফিরোজ (১৮) ও মো. মোস্তাফিজুর রহমান (৩৫)।

গতকাল দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি বলেন, গত ৬ সেপ্টেম্বর রাতে মোহাম্মদপুর এলাকার একটি স্কুলের নির্মাণাধীন জায়গায় ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী আকাশসহ তার বেশ কয়েকজন বন্ধু যায়। পরে লোহার রড চোর সন্দেহে শ্রমিকরা তাদের ধাওয়া দেন। সব বন্ধুরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও আকাশকে নির্মাণ শ্রমিকরা ধরে ফেলেন। এ সময় নির্মাণাধীন ভবনটির ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেমের নির্দেশে তাকে মধ্যযুগীয় কায়দায় লাঠি, লোহার রড ও স্ট্যাম্প দিয়ে নির্মমভাবে মারধর করেন শ্রমিকরা।

র‌্যাবের পরিচালক জানান, পরদিন ভোর ৬টার দিকে ভুক্তভোগী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে গ্রেফতাররা ভুক্তভোগীর ফুফুকে ফোন করে আকাশকে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। পরে আকাশের ফুফু ঘটনাস্থলে এসে গুরুতর অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে বাসায় নিয়ে যান। ওইদিন সকাল ৮টার দিকে আকাশের মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় আকাশের ফুফু মোহাম্মদপুর থানায় বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। সংবাদ শুনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেফতার এড়াতে ইঞ্জিনিয়ার ও শ্রমিকরা নির্মাণাধীন ওই জায়গা থেকে পালিয়ে রাজধানীর মগবাজার ও রমনাসহ বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে চলে যান।

তিনি আরও জানান, মোয়াজ্জেম ওই স্কুলের নির্মাণাধীন জায়গার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। তার নির্দেশে ভুক্তভোগীকে বাঁশের সঙ্গে ঝুলিয়ে নির্যাতনসহ মোবাইলে পুরো ঘটনার ভিডিও ধারণ করা হয় এবং ফিরোজ ও মোস্তাফিজুর আকাশকে নির্যাতন করেন। ফিরোজ পেশায় একজন শ্রমিক। মোস্তাফিজুর নির্মাণাধীন ওই জায়গার ফোরম্যান হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর