রবিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

অষ্টম নবমের ৮৫ ভাগ শিক্ষার্থী প্রাইভেট কোচিং নির্ভর

নিজস্ব প্রতিবেদক

মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘ সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের পর খুলে দেওয়া হলেও শিখন ঘাটতি পূরণ হয়নি। শিক্ষার্থীরা এ ঘাটতি মেটাতে হয়ে পড়েছে প্রাইভেট টিউটর ও কোচিং সেন্টার নির্ভর। গণসাক্ষরতা অভিযান গবেষণা করে বলছে, অষ্টম ও নবম শ্রেণির ৮৫ দশমিক ১৫ শতাংশ শিক্ষার্থী এসবের ওপর নির্ভর করেছে। গ্রাম, শহর সবখানেই মিলেছে একই রকম চিত্র। অষ্টম শ্রেণির ৬৪ আর নবমের ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থী প্রাইভেট-টিউশনে প্রতি মাসে ১ হাজার ১০০ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত ব্যয় করছে। আর প্রাথমিকের ৭৯ ও মাধ্যমিকের ৮২ দশমিক ৫ শতাংশ শিক্ষার্থী বাণিজ্যিক গাইডবইয়ের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। গতকাল বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘মহামারি উত্তর শিক্ষা : স্কুল শিক্ষার পুনরুদ্ধার ও আগামীর অভিযাত্রা’ শীর্ষক ‘এডুকেশন ওয়াচ ২০২২’ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এডুকেশন ওয়াচের চেয়ারপারসন ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, গবেষক ড. সৈয়দ শাহাদত হোসেন, সদস্য অধ্যক্ষ কাজী ফারুক আহমেদ ও ফোকালপয়েন্ট ড. মোস্তাফিজুর রহমান এতে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক ও এডুকেশন ওয়াচের সদস্যসচিব রাশেদা কে চৌধূরী। গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন ড. মোস্তাফিজুর রহমান। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অষ্টম শ্রেণির ২৯ দশমিক ৯ শতাংশ শিক্ষার্থী ৩৩ শতাংশ অর্থাৎ পাস নম্বরও তুলতে পারেনি। নবম শ্রেণিতে পাস নম্বর তুলতে পারেনি ২৬ দশমিক ২ শতাংশ। আর নামে মাত্র পাস অর্থাৎ ৩৯ শতাংশ পর্যন্ত নম্বর তুলতে পেরেছে অষ্টম শ্রেণির ৩৬ দশমিক ১ শতাংশ শিক্ষার্থী। নবম শ্রেণিতে এ হার ছিল ৩৩ দশমিক ৫ শতাংশ। প্রতিবেদনে বিষয়ভিত্তিক পারফরম্যান্সে বলা হয়, অষ্টম শ্রেণির ৮২ শতাংশ শিক্ষার্থী বাংলায়, ৬৫ শতাংশ ইংরেজিতে ও ৬৬ শতাংশ গণিতে ৩৩ শতাংশ নম্বর পেয়ে পাস করেছে। আর নবম শ্রেণিতে বাংলায় ৮৪, ইংরেজিতে ৭২ ও গণিতে ৬৫ শতাংশ পাস করেছে। মূল্যায়নে দেখা গেছে, প্রতি ক্লাসে ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা ফল ভালো করেছে। গত বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহ করে অক্টোবরে মূল্যায়ন পরীক্ষা নেয় গণসাক্ষরতা অভিযান। বক্তব্যে ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, ‘শিখন নয়, অনেকের কাছে পাস করাই পড়ালেখার উদ্দেশ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটা বড় সমস্যা। এই মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে অনেক নীতি আছে। কিন্তু এসব নীতি বাস্তবায়নে সংকট রয়েছে। যারা নীতিনির্ধারকের দায়িত্বে থাকেন তারা সময়মতো কাজ করেন না, সব সময় ভালোভাবেও কাজ করেন না। আর সুযোগ থাকলে তারা নিজেদের পকেট ভারী করেন।’

সর্বশেষ খবর