শিরোনাম
সোমবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

নির্বাচনের আগে নতুন গাড়ি পাচ্ছেন না ডিসি-ইউএনও

♦ অর্থের বরাদ্দ চূড়ান্ত ♦ ব্যয় ৩৮০ কোটি টাকা

ওয়াজেদ হীরা

জাতীয় নির্বাচনে মাঠ প্রশাসনের জন্য গাড়ি কেনার তোড়জোড় ছিল। ভোটের তদারকির জন্য এ গাড়ির প্রয়োজন হবে- জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এমন যুক্তির পক্ষে অর্থ মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিলেও এসব গাড়ি ডিসি-ইউএনও পাবেন ভোটের পর। সব প্রক্রিয়া শেষ করে কিনতে ফেব্রুয়ারি-মার্চ লেগে যাবে। অর্থাৎ ভোটের সময় মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তারা পাচ্ছেন না নতুন গাড়ি। সরকারি যানবাহন অধিদফতর-সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, শুধু নির্বাচন নয়, গাড়িগুলো প্রশাসনের কাজের প্রয়োজনে কেনা হবে।

জানা গেছে, চলতি অর্থবছরে মোটরযান খাতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। মাঠ প্রশাসনের গাড়ি কিনতে বেশি অর্থ লাগবে তাই অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব দেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি ২৬১টি গাড়ি কেনার প্রস্তাব পাঠানো হলে তা পর্যালোচনা করে কয়েকটি শর্তে প্রস্তাবে সায় দেয় অর্থ বিভাগ। অনুমোদন হওয়া গাড়ির মধ্যে ৬১টি ডিসিদের জন্য এবং ইউএনওদের জন্য ২০০টি গাড়িতে খরচ হবে ৩৮০ কোটি টাকা। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জাপ্রণ, প্রতিটি গাড়ির মূল্য ধরা হয়েছে ১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা এবং রেজিস্ট্রেশন ফি ৮০ হাজার ৫০০ টাকা। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র জানান, মাঠ প্রশাসনে থাকা গাড়িগুলোর মধ্যে মেরামতযোগ্যগুলোকে সারানো হবে। আর যেসব গাড়ি সারানো লাভজনক মনে হবে না, সেগুলোকে প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বিক্রি করে দেওয়া হয়। গাড়ি কেনার যৌক্তিকতায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়    প্রস্তাবে বলে, ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও পরিবহন সেবা স্বাভাবিক রাখতে এ গাড়ি কেনা প্রয়োজন।’ অর্থ বিভাগের ব্যয় ব্যবস্থাপনা শাখার কর্মকর্তারা জানান, প্রস্তাব পর্যালোচনা করে অনুমোদনযোগ্য, তাই সায় দিয়েছে অর্থ বিভাগ, কিনবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, গাড়িগুলো নির্বাচনের জন্য কেনা হচ্ছে বিষয়টা এমন নয়। মাঠে প্রশাসনের অনেক স্থানে গাড়ি ১৫ বছর হয়ে গেছে। এখন একেবারেই চালানো যাচ্ছে না। গাড়ি কেনার অনুমোদন হয়েছে। এখন সংশ্লিষ্টরা এটা নিয়ে কাজ করবেন।

প্রস্তাব অনুমোদন হলেও এখনই গাড়ি কেনা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন, সরকারি যানবাহন অধিদফতরের পরিবহন কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) মো. আবুল হাছানাত হুমায়ুন কবীর। বাংলাদেশ প্রতিদিনকে তিনি আরও বলেন, শুধু নির্বাচনের প্রয়োজনে গাড়ি কেনা হচ্ছে- বিষয়টা এমন নয়। নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তবে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কাজের জন্য সব সময়ই গাড়ি লাগে। পরিবহন কমিশনার বলেন, গাড়ি কেনার একটা নিয়ম-কানুন আছে। গাড়ি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান প্রগতিকে সময় দিতে হবে। প্রগতির সঙ্গে এখনো কোনো আলোচনা, চিঠিপত্র দেওয়া শুরু হয়নি। এর জন্য তিন-চার মাস লাগবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। সরকারি যানবাহন অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ১১৬টি উপজেলার জন্য ২০১৮ সালে ৫০টি এবং ২০১৯ সালে ৬৬টি গাড়ি কেনা হয়। এরপর অর্থনৈতিক মন্দার কারণে প্রতি বছর গাড়ি কেনার বরাদ্দ থাকলেও সরকারের অনুমোদন ছিল না। ডিসি ও ইউএনওদের গাড়ি কেনার ক্ষেত্রে শর্ত দিয়ে অর্থ বিভাগ বলেছে, প্রতিস্থাপক হিসেবে গাড়ি কেনার ক্ষেত্রে বর্তমান গাড়ির বয়স ১৪ বছর হয়েছে এবং অকেজো এ ঘোষণা সংক্রান্ত বিআরটিএর পরিদর্শক দলের অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে। পরে সে অনুলিপি অর্থ বিভাগে পাঠাতে হবে। এ ছাড়া আরও একাধিক শর্ত রয়েছে।

 

 

সর্বশেষ খবর