শিরোনাম
সোমবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

এনজিওর ঋণের সুদ ১২.৭৫ শতাংশ করার প্রস্তাব

শাহেদ আলী ইরশাদ

ঋণের চলমান ২৪ শতাংশ সার্ভিস চার্জের পরিবর্তে ১২ দশমিক ৭৫ শতাংশ সমান (ফ্ল্যাট) সুদহার নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছে ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলো। সরকার ক্ষুদ্রঋণের বিদ্যমান সুদহার কমানোর উদ্যোগ নেওয়ার পর এখন এনজিওগুলো নিজ উদ্যোগেই ১২ দশমিক ৭৫ শতাংশ সুদহার নির্ধারণ এবং বাস্তবায়ন করতে চায়। এ বিষয়ে ক্ষুদ্রঋণ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির (এমআরএ) কাছে একটি প্রস্তাব দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকেও বিষয়টি অবগত করেছে ক্ষুদ্রঋণ বিতরণ প্রতিষ্ঠানগুলোর নেটওয়ার্ক ক্রেডিট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরাম (সিডিএফ)।

জানা গেছে, ক্ষুদ্রঋণের সার্ভিস চার্জ পুনর্নির্ধারণ এবং পর্যালোচনার জন্য ২০২২ সালে গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ কে এম সাইফুল মজিদের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের একটি কারিগরি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি ২৪ শতাংশের চলমান হার পর্যালোচনা করে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটিতে সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। বিদ্যমান ২৪ শতাংশ থেকে কমানোর কোনো সুযোগ আছে কি না সে উপায় খুঁজতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদারের কাছে আরও পর্যালোচনা করার সুপারিশ করেছে কমিটি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অর্থরিটির (এমআরএ) নির্বাহী ভাইস-চেয়ারম্যান মো. ফসিউল্লাহ্ গণমাধ্যমকে বলেছেন, সার্ভিস চার্জ কমানো যাবে কি না সে সিদ্ধান্ত নেবে কমিটি। ক্ষুদ্রঋণের সার্ভিস চার্জ পর্যালোচনা একটি নিয়মিত প্রক্রিয়া উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতি দুই বছরে ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যয় এবং সার্ভিস চার্জ পর্যালোচনা করার নির্দেশনা রয়েছে। মো. ফসিউল্লাহ বলেন, ক্ষুদ্রঋণ খাতের অভিজ্ঞতা বিবেচনা করে গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যানকে প্রধান করে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর আগে প্রায় ৯ বছর পর ক্ষুদ্রঋণের সর্বোচ্চ সুদের হার ২৪ শতাংশ নির্ধারণ করা হয় ২০১৯ সালে। তার আগে ২০১০ সালে প্রথমবারের মতো সুদের হার ২৭ শতাংশে সীমাবদ্ধ ছিল। এমআরএ প্রথমবারের মতো ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ২৭ শতাংশ হার নির্ধারণ করে দেয়। তার আগে সুদের হার নির্দিষ্ট ছিল না, এনজিওগুলো তাদের ইচ্ছামতো সুদহার নির্ধারণ করত। ক্ষুদ্রঋণের সার্ভিস চার্জ পুনর্নির্ধারনের জন্য ২০২১ সালে মো. ফসিউল্লাহ্র নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছিল। সেই কমিটি কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। পরে এমআরএ পরিচালক মোহাম্মদ ইয়াকুব হোসেনের নেতৃত্বে আরেকটি কারিগরি কমিটি গঠন করা হলেও কোনো লাভ হয়নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ক্রেডিট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরামের নির্বাহী পরিচালক মো. আবদুল আউয়াল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সারা দেশে ৩ কোটি ২০ লাখ মানুষকে সেবা দিচ্ছে দেশের এনজিওগুলো। জামানতবিহীন ঋণ বিতরণের মাধ্যমে আমরা দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর উন্নয়নের জন্য কাজ করছি। ঋণের সার্ভিস চার্জের পরিবর্তে সুদহার ১২ দশমিক ৭৫ শতাংশ নির্ধারণ করে দিলে ভালো হবে। বিভিন্ন সময় আর্থিক খাতের বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এনজিওগুলোর সুদের হার বা সার্ভিস চার্জ খুব বেশি এবং দরিদ্র ঋণগ্রহীতাদের জন্য অসহনীয়। তাদের মতে, দারিদ্র্য বিমোচন এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে সার্ভিস চার্জ কমানো অত্যন্ত জরুরি। ক্ষুদ্রঋণ নিয়ন্ত্রক অথরিটি আইন-২০০৬ এর অধীনে সরকার ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম নিরীক্ষণ এবং এনজিও খাতের টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি প্রতিষ্ঠা করেছে সরকার।

 

সর্বশেষ খবর