দুর্নীতির দুই মামলায় দন্ডিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দন্ড স্থগিত করে আগের দুই শর্তেই মুক্তির মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়াচ্ছে সরকার। এ সংক্রান্ত আবেদনে মতামত দিয়ে আইন মন্ত্রণালয় তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। গতকাল সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
আইনমন্ত্রী বলেন, আগের বাড়ানো মেয়াদ আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর শেষ হবে। ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে একই শর্তে মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানো হচ্ছে। মন্ত্রী জানান, আগের শর্তে (বিদেশে যাওয়া যাবে না এবং দেশে চিকিৎসা নিতে হবে) তার মুক্তির মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানোর জন্য মতামত দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে সরকারের নির্বাহী আদেশে দন্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ অষ্টম বারের মতো বাড়ানো হচ্ছে। কয়েক দিন আগে খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি এবং চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার জন্য তার পরিবারের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়। পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সেই আবেদনের বিষয়ে মতামত দিতে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। এখন আইন মন্ত্রণালয় মতামত দেওয়ায় খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করানোর আবেদনের বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, আবেদনে বিদেশে নেওয়ার বিষয়টি ছিল। কিন্তু সে বিষয়ে আইনি কোনো সুযোগ নেই। আইনি সুযোগ থাকলে আমরা বিবেচনা করতাম। আমার স্বাক্ষরের পর ফাইল এরই মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চলে গেছে। এটি প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাবে না। ২০২০ সালে করোনা মহামারি শুরু হলে পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার দন্ড স্থগিত করে দুটি শর্তে ছয় মাসের মুক্তি দেন। ওই বছরের ২৫ মার্চ কারাগার থেকে মুক্ত হন তিনি। শর্তের প্রথমটি হলো খালেদা জিয়াকে বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে। দ্বিতীয়ত তিনি বিদেশ যেতে পারবেন না। এর পর পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কয়েক দফায় ছয় মাস করে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ায় সরকার। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদন্ড দেন ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ আদালত। রায় ঘোষণার পর ওই দিনই খালেদা জিয়াকে কারাগারে নেওয়া হয়। এর পর ৩০ অক্টোবর এই মামলায় আপিলে তার আরও পাঁচ বছরের সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করেন হাই কোর্ট। একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের কারাদন্ডের আদেশ দেন একই আদালত। সরকারের নির্বাহী আদেশে তার এ সাজা স্থগিত করা হয়।
