বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

বৃষ্টিস্নাত সন্ধ্যায় দুই নাটক

সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক

বৃষ্টিস্নাত সন্ধ্যায় দুই নাটক

বৃষ্টিস্নাত সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমিতে মঞ্চায়িত হলো দুটি নাটক। এর মধ্যে দেশ নাটক প্রযোজিত ‘পারাপার’ ও নাট্যকেন্দ্র প্রযোজিত ‘তীর্থযাত্রা’।

গতকাল সন্ধ্যায় একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার পরীক্ষণ থিয়েটার হলে মঞ্চায়ন হয় দেশ নাটকের ২৪তম প্রযোজনা পারাপার। মাসুম রেজা রচিত এ নাটকটির নির্দেশনায় ছিলেন ফাহিম মালেক ইভান। উপস্থিত দর্শকদের বিমোহিত করছে সুরের ব্যঞ্জনা। নির্দেশক নাটকে গীত আর নৃত্যের অপূর্ব মেলবন্ধন সৃষ্টি করেছেন। কাহিনিতে তুলে ধরা হয়েছে ভাবোখালী গ্রামের সহজসরল মানুষ জীবনকে দেখে খুব সহজসরলভাবে। তারা জীবনকে রঙিন করে দেখে। ঘুড়ির খেলা, পালাগান, ঐতিহ্যবাহী উৎসব আয়োজনে আনন্দে অতিবাহিত হয় তাদের দিন। গ্রামের মহাজন ড্যাডম মালিথার বাড়িতে প্রতি বছর আয়োজিত হয় পালাগান। এবার পালা করতে কলকাতা থেকে এসেছে ড্যাডমপুত্র ডালিম মালিথার বন্ধু চিনু গায়েন। পালাগানে ভাবোখালী গ্রামের সবার মন জয় করে নিয়েছে চিনু গায়েন। সেই মুগ্ধতার ঘোর লেগেছে ভাবোখালীর জোছনার মনেও। সে নিজের অজান্তেই জড়িয়ে পড়ে চিনুর ভালোবাসায়। ওদিকে চিনুর গ্রাম ছোট ঝলমলিয়ায় চিনুর সঙ্গে বিয়ে হবে বলে অপেক্ষায় থাকে মাঞ্জেলা। কাটে যার চার বছর। সে ভালোবাসার মানুষের জন্য প্রতীক্ষার প্রহর যখন শেষ হয় না তখন গ্রামে ফেরি করতে আসা চুড়িবুড়ির কাছে বলে তার প্রেমকাহিনি। চুড়িবুড়িও তাকে সান্ত্বনা দেয়। পরামর্শ দেয় চিনুকে ভুলে যাওয়ার। পাশাপাশি প্রতিশ্রুতি দেয় কলকাতায় নিয়ে চাকরি দেওয়ার। অন্যদিকে ভাবোখালী গ্রামের সবার ইচ্ছায় চিনুর সঙ্গে বিয়ে হয় জোছনার এবং তারই সঙ্গে কলকাতায় পাড়ি দেওয়ার উদ্দেশ্যে এসে পৌঁছায় বেনাপোলের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে। অবরোধে সীমান্ত বন্ধ থাকায় আশ্রয় নেয় এলাকার প্রভাবশালী সংস্কৃতি অনুরাগী, যাত্রাদলের পৃষ্ঠপোষক রশিদ কোম্পানির হোটেলে। সেখানে এসে চিনুর নতুন পরিচয় উন্মোচিত হয়। প্রকাশিত হয় এক অজানা তথ্য। হঠাৎই চিনুর মুখোমুখি এসে দাঁড়ায় মাঞ্জেলা। সেও বুড়ির সঙ্গে কলকাতায় যাওয়ার প্রত্যাশায় এখানে এসে হাজির। জীবনের কঠিন পর্যায়ে এসে প্রকাশিত হয় এক চরম সত্য, যা মাঞ্জেলার কাছে অবিশ্বাস্য মনে হয়। চিনু আসলে জোছনাকে বিয়ের প্রলোভনে কলকাতায় পাচারের উদ্দেশ্যেই নিয়ে যায়। অন্যদিকে একই পেশার চুড়িবুড়িও মাঞ্জেলাকে নিয়ে একই কারণে কলকাতায় পাড়ি দেওয়ার পরিকল্পনা করে। জোছনাকে নিয়ে চিনুর পেশাগত দিক আর মাঞ্জেলার প্রতি তার প্রেম চিনুকে এক গভীর সংকটে ফেলে দেয়। মানব জীবনের চরিত্রের এ বৈপরীত্য প্রতিটি মানুষকে এক কঠিন পথে ধাবিত করে। এমনই গল্প নিয়ে বিন্যস্ত হয়েছে নাটকটির কাহিনি। বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন কামাল আহমেদ, অসীম কুমার নট্ট, কাজী রাজু, গোলাম মাহমুদ, আশরাফুল আশীষ, মাঈন হাসান, আরিফ হক, কাজী লায়লা বিলকিস, সোমা ফেরদৌসী, ইসমত জেরিন, তানহা, লিমন, শাহেদ, সজীব, সবুজ, বাদশা, নাঈম, নাইমুর, নাভিদ, শামীম প্রমুখ। পোশাক পরিকল্পনায় ছিলেন সাজিয়া আফরিন, মঞ্চ পরিকল্পনায় কাজী কোয়েল, আলোক পরিকল্পনায় গোলাম ফারুক টিটু, অসীম নট্ট, লরেন্স গমেজ, ইমামুর রশীদ, ফাহিম মালেক ইভান। কোরিওগ্রাফি করেছেন ফেরদৌস হাসান। একই সময়ে জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে মঞ্চায়ন হয় নাট্য কেন্দ্র প্রযোজিত নাটক তীর্থযাত্রা।

সর্বশেষ খবর