মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় আরও ছয় চিকিৎসককে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। একই অভিযানে রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষিকা মাকসুদা আক্তার মালাকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। এর আগে প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত ১২ চিকিৎসকসহ ১৭ জনকে গ্রেফতার করেছিল সিআইডির সাইবার টিম। গতকাল সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার আজাদ রহমান জানান, গত রবিবার থেকে গতকাল (মঙ্গলবার) পর্যন্ত ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে প্রশ্নফাঁস চক্রের আরও সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা হলেন- মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষিকা মাকসুদা আক্তার মালা (৫২), ডা. কে এম বশিরুল হক (৪৮), ডা. অনিমেষ কুমার কুন্ডু (৩৩), ডা. জাকিয়া ফারইভা ইভানা (৩৫), ডা. সাবরিনা নুসরাত রেজা টুসী (২৫), ডা. জাকারিয়া আশরাফ (২৬) ও ডা. মৈত্রী সাহা (২৭)। এদের কাছ থেকে ৮টি মোবাইল ফোন, বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই, ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড জব্দ করা হয়েছে।

সিআইডি বলছে, মাকসুদা আক্তার মালা ২০১৫ সালে নিজের মেয়ে ইকরাসহ আরও সাতজন শিক্ষার্থীকে ফাঁস করা প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি করিয়েছেন। ডা. কে এম বশিরুল হক থ্রি ডক্টরস কোচিং সেন্টারের পরিচালক। দীর্ঘদিন ধরে প্রশ্নফাঁস চক্রের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। গ্রেফতার হওয়া একাধিক আসামির ১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে তার নাম এসেছে। এ ছাড়াও প্রশ্নফাঁস চক্রের মাস্টারমাইন্ড জসিমের গোপন ডায়েরিতে তার নাম রয়েছে। ডা. অনিমেষ কুমার কুন্ডু ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের একজন মেডিকেল অফিসার। ২০১৫ সালে ১০ জন শিক্ষার্থীকে ফাঁস করা প্রশ্ন পড়িয়েছেন। এদের মধ্যে আটজন বিভিন্ন মেডিকেলে চান্স পায়। জাকিয়া ফারইভা ইভানা ঢামেকের সাবেক শিক্ষার্থী। ডা. ইভানা ২০০৬-০৭ সেশনের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় জাতীয় মেধায় ৬০তম স্থান অর্জন করেন। মেডিকেল প্রশ্নফাঁস চক্রের অন্যতম হোতা ডা. ময়েজ উদ্দিন আহমেদ প্রধানের কাছ থেকে প্রশ্ন পেয়ে ঢামেকে চান্স পান। সাবরিনা নুসরাত রেজা টুসী রংপুর মেডিকেল কলেজের ২০১৫-১৬ সেশনের সাবেক শিক্ষার্থী। ডা. অনিমেষের মাধ্যমে প্রশ্ন পেয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজে চান্স পান তিনি। জাকারিয়া আশরাফ ও মৈত্রী সাহা ২০১৫-১৬ সেশনের ঢামেকের শিক্ষার্থী। এ দুজনও অভিযুক্ত ডা. অনিমেষের মাধ্যমে প্রশ্ন পেয়ে ঢামেকে চান্স পান।